শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে এবার গ্রেফতার করা হল ‘কালীঘাটের কাকু’ সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে। মঙ্গলবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) ‘কালীঘাটের কাকু’কে গ্রেফতার করেছে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তথ্য গোপন ও তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তবে সুজয়কৃষ্ণ যে সংস্থার কর্তা ছিলেন সেই সংস্থার অন্য ডিরেক্টররা কারা তা নিয়ে বোমা ফাটিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। চমকে দেওয়ার মতো তথ্য টুইট করেছেন বিরোধী দলনেতা।
মঙ্গলবার এদিন শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ‘কালীঘাটের কাকু’র ভূমিকা জানতে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে সিজিও কমপ্লেক্সে তলব করেছিল ইডি। সকাল ১১টা নাগাদ তিনি সেখানে পৌঁছে যান। তারপর থেকেই সুজয়কৃষ্ণকে জেরা চালাতে থাকে কেন্দ্রীয় এজেন্সির গোয়েন্দারা।
নিয়োগ কেলেঙ্কারি মামলায় ধৃত তাপস মণ্ডল, কুন্তল ঘোষের মুখে প্রথম ‘কালীঘাটের কাকু’র নাম উঠে এসেছিল। পরে গোপাল দলপতির মুখেও এই ব্যক্তির নাম শোনা গিয়েছিল। তারপরই ইডি আধিকারিকরা তল্লাশি অভিযান চালায় তাঁর বাড়িতে। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথি এবং তথ্য হাতে আসে গোয়েন্দাদের। তাঁর দুটি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের তিনটি কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগের কথা সামনে আসে। এই তিনটি কোম্পানিই আর্থিক তছরুপের সঙ্গে জড়িত বলে কেন্দ্রীয় এজেন্সি সূত্রে খবর।
এই তিন সংস্থার সঙ্গে কালীঘাটের কাকুর কী সপম্পর্ক? সেটাই ম্যারাথন জেরায় জানতে চাইছে ইডি-র তদন্তকারীরা। এরপরই গোয়েন্দাদের আতসকাচের তলায় আসেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। শুভেন্দু টুইটে দাবি করেছেন, লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস প্রাইভেট লিমিটেড নামে সংস্থায় ডিরেক্টের পদে ছিলেন সুজয়কৃষ্ণ। সেই সংস্থার বাকি ডিরেক্টররা হলেন অমিত বন্দ্যোপাধ্যায় (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাবা), বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য, লতা বন্দ্যোপাধ্যায় (অভিষেকের মা), রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় (অভিষেকের স্ত্রী)।
আরও পড়ুন শেষমেষ গ্রেফতার ‘কালীঘাটের কাকু’, প্রায় ১২ ঘন্টা ম্যারাথন জেরার পর ইডি-র জালে সুজয়কৃষ্ণ
শুভেন্দু টুইটে দাবি করেছেন, নিউ আলিপুর স্থিত এই সংস্থার মাথায় রয়েছেন অভিষেকের বাবা-মা এবং স্ত্রী। সেই সংস্থাতেই ডিরেক্টর পদে ছিলেন কালীঘাটের কাকু। অর্থাৎ দুর্নীতির সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরাসরি যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধী দলনেতা।
জানা গিয়েছে, এই তিন সংস্থার আধিকারিকদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তলব করে তাঁদের যে বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। সেইগুলোর সঙ্গেই মঙ্গলবার কালীঘাটের কাকুকে জিজ্ঞাসা করা হয়। কিন্তু সদুত্তর মেলেনি বলে ইডি সূত্রে খবর। তারপরই সুজয়কৃষ্ণকে গ্রেফতার করা হয়। জানা গিয়েছে, জেরায় বেশ কয়েকবার মেজাজ হারান সুজকৃষ্ণ। বুধবার ‘কালীঘাটের কাকু’কে আদালতে পেশ করবে ইডি। তদন্তের স্বার্থে তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইবে কেন্দ্রীয় এজেন্সি।
উল্লেখ্য, এর আগে সিবিআই ‘কালীঘাটের কাকু’কে দুবার তলব করেছিল। প্রথম বার সিবিআই দফতরে হাজিরা দিয়েছিলেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তবে পরের বার নিজের আইনজীবীকে দিয়ে নথিপত্র পাঠান।