Suvendu Adhikary: হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চেও স্বস্তি শুভেন্দু অধিকারীর। সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে মান্যতা দিয়ে বুধবার এই ঘোষণা করেছে বৃহত্তর বেঞ্চ। কোনওভাবেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে গ্রেফতার করা যাবে না। সিঙ্গল বেঞ্চের দেওয়া রক্ষাকবচ জারি রেখে এদিন জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং কেডি ভুটিয়ার বেঞ্চ। বুধবার সন্ধ্যায় বিধানসভায় বসে সেই রায়কে স্বাগত জানান নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক। সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘আমার বিচার-ব্যবস্থার উপর আস্থা রয়েছে। আমি সবচেয়ে বড় অপরাধ করেছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নন্দীগ্রামে হারিয়ে। তাই সেই আক্রোশ মেটাতে সিবিআইয়ের জ্ঞানবন্ত সিং এবং পূর্ব মেদিনীপুরের এসপি-কে দেওয়া আমার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দিয়েছে। আমি সিঙ্গল বেঞ্চে রক্ষাকবচ পেয়েছি। সেই রায়ের বিরোধিতা করে বাংলার মেয়ে, বাংলার উকিলদের উপর ভরসা না করে দিল্লি থেকে আইনজীবী আনেন। রাজ্য কোষাগারের টাকা খরচা করে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেন। আমি বিচারব্যবস্থার উপর আস্থাশীল তারাও সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে বহাল রেখেছে। রাজ্য সরকারের আবেদন খারিজ করেছে।‘
তাঁর খোঁচা, ‘রাজ্যে বিরোধী দল থাকবে না, বিরোধী দলনেতা থাকবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেউ হারাতে পারবে না। তাই আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল। বিরোধিতা করে আমি সিঙ্গল বেঞ্চ গিয়েছিলাম, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কয়েক কোটি টাকা খরচ করে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিল। এবার আমি আরটিআই করব, জানতে চাইব ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্যের হয়ে যারা লড়েছেন তাঁদের পারিশ্রমিক কত? জবাব না পেলে মামলা করব। চেষ্টা করব এই টাকা তৃণমূল কংগ্রেস বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে রাজ্যের কোষাগারে ফেরাতে।‘
এদিন পুলিশ এবং প্রশাসনিক রদবদলকে মহম্মদ বিন তুঘলকের ব্যবস্থার সঙ্গে তুলনা করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণকে স্বাগত জানান বিরোধী দলনেতা। কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, ‘হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমপ্রকাশ চৌতালা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে জেলে রয়েছেন। ২০১৩ সালে যিনি শিক্ষামন্ত্রীর হয়েছিলেন, তার আমল থেকে এসএসসি, আপার প্রাইমারিতে টেট না দিয়েও ১৭ জন চাকরি করছেন। হাইকোর্ট এই জায়গাগুলো ধরেছে। আমি অপেক্ষা করছি রায়ের জন্য। এদিন যেটা বেরিয়েছে পর্যবেক্ষণ। ফাঁকা খাতা দিয়ে পাস, টেট না দিয়ে পাস এই জায়গাগুলো ধরা পড়ছে। এতবড় দুর্নীতি আগে কোথাও হয়নি।‘
এদিকে, বুধবার ঠিক কী রায় দিয়েছে হাইকোর্ট। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে স্বস্তি দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ই বহাল রেখেছে ডিভিশন বেঞ্চ। শুভেন্দু অধিকারীকে রক্ষাকবচ দিয়েছিল হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। বিরোধী দলনেতাকে গ্রেফতার করা যাবে না বা তাঁর বিরুদ্ধে কড়া কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না। এমনটা আগেই জানিয়েছিল সিঙ্গল বেঞ্চ।
বিচারপতি রাজশেখর মান্থার সিঙ্গল বেঞ্চের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিল রাজ্য সরকার। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি কেসাং ডোমা ভুটিয়ার ডিভিশন বেঞ্চও সিঙ্গল বেঞ্চের সেই রায়ই বহাল রাখল। স্বাভাবিকভাবেই ডিভিশন বেঞ্চের এই রায়ে বেশ স্বস্তিতে শুভেন্দু।
শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে রাজ্যের পাঁচটি থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তবে বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, সেই মামলাগুলি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই করা হয়েছিল। তাঁকে হেনস্থা করতে চক্রান্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা সাজানো হয় বলে দাবি তাঁর।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন