চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পরেও প্রায় আট বছর ধরে নিয়মিত হাইস্কুলে গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা করিয়ে চলেছেন মালদার ইংরেজবাজারের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা স্বপ্না ঘোষ রায়। ৬৮ বছরের গণ্ডি পেড়ানো এই শিক্ষিকার এমন তৎপরতাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন শিক্ষানুরাগী মানুষজন থেকে শুরু করে অন্যরাও। বেশ কয়েকটি সংস্থার তরফে পুরস্কৃতও করা হয়েছে তাঁকে। যদিও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা স্বপ্না ঘোষ রায়ের বক্তব্য, চাকরি থেকে অবসর নিলেও ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ যাতে গড়তে পারেন সেই লক্ষ্যেই তিনি নিয়মিতই স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা করান।
উল্লেখ্য, মালদার ইংরেজবাজারের দুই নম্বর গভর্নমেন্ট কলোনি এলাকার বাসিন্দা স্বপ্না ঘোষ রায়। তিনি ইংরেজবাজারের কমলাবাড়ী হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেন। ১৯৮৯ সালে শিক্ষকতার চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। এরপর ২০১৫ সালে অবসর নেন। মূলত অঙ্ক এবং ভৌত বিজ্ঞান পড়ান স্বপ্নাদেবী। চাকরি থেকে অবসর নিলেও পড়ানো ছাড়েননি তিনি। অবসরের পর পেরিয়ে গিয়েছে ৮ বছর।
আজও নিয়ম করে ঘড়ির কাঁটা ধরে স্কুলে যান দিদিমণি। বিনা পারিশ্রমিকেই বাড়ি থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরের কমলাবাড়ি হাইস্কুলে রোজ গিয়ে পড়ুয়াদের শিক্ষা দান করেন ওই শিক্ষিকা। নিয়ম করে সপ্তম এবং অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের অঙ্ক ও ভৌত বিজ্ঞানের ক্লাস নেন তিনি। স্কুল ছুটির পর অন্যান্য শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের সঙ্গে জমিয়ে গল্প করে প্রতিদিনের মতো বাড়ি চলে আসেন।
আরও পড়ুন- দুরন্ত ছন্দে শীত! এসপ্তাহেই হুড়মুড়িয়ে পারদ পতন? শীতের মারকাটারি আপডেট জানুন
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা স্বপ্না ঘোষ রায় বলেন, "শিক্ষকতার চাকরিতে যোগদান করার পর থেকে একবারের জন্যও শারীরিক অসুস্থতা ছাড়া ছুটি নিইনি। ঝড়, বৃষ্টি হোক অথবা কনকনে শীত, প্রতিদিনই নিয়ম করে স্কুলে যাই। ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াই। এখনও এই নিয়মে ছেদ পড়েনি।" তাঁর বাড়িতে স্বামী-সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা রয়েছেন। একান্নবর্তী পরিবারের সংসার সামলানোর পাশাপাশি আজও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা নিয়ম করে স্কুলে গিয়ে পড়াচ্ছেন।
আরও পড়ুন- রেশনকাণ্ডে আজ ED-র প্রথম চার্জশিট, এবার রাজ্যে আরও বিশাল কালো কারবারের পর্দাফাঁস
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মতিউর রহমান বলেন, "আমরা ওঁর এই কীর্তিকে সাধুবাদ জানাই। অবসরের পরেও আজও নিয়ম করে স্কুলে আসেন। ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ান। এই স্কুলে প্রায় ৮০০ ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী মিলিয়ে রয়েছেন ১৯ জন। উনি আমাদের অভিভাবকের মতো।"