রাজ্য সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলি সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরতে দুয়ারে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পের আয়োজন করছে রাজ্য সরকার। তার মধ্যে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প সব রাজ্যবাসীকে নিয়ে আসায় সাধারণ মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। হাতে নাতে মিলেছে পরিষেবাও। স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সুফল পেয়ে বেজায় খুশি নিউ ব্যারাকপুরের কৃষ্ণেন্দু ঘোষ। সরকারি স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মাধ্যমে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিমা মিলছে। এই কার্ডের মাধ্যমে বাইপাস সার্জারি করিয়েছেন কৃষ্ণেন্দুবাবু। স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পেয়ে খুশি রোগী এবং পরিবার।
নিউব্যারাকপুরের বাসিন্দা কৃষ্ণেন্দু ঘোষ অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। চাকরি করতেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। এর মাঝে মেয়ের বিয়ের দিয়েছেন। তার পর হাত ফাঁকা হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে, বাজার করতে গিয়েই বুকে ‘চিন চিন’ ব্যথা অনুভব করেন তিনি। প্রথমে গ্যাস অম্বলের ব্যথা ভেবে এড়িয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু দুপুর থেকে ব্যথা বাড়তে থাকায়, স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে যান, সেখানে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করে জানা যায়, তাঁর হার্টে ব্লকেজ।
এমন অবস্থায় কার্যত দিশাহারা হয়ে যান কৃষ্ণেন্দুবাবু। উদ্বেগ বাড়ে পরিবারের অন্যান্যদেরও। মেয়ে বর্নিতা প্রথমে ভেবেছিলেন, ‘সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে’- হাসপাতালে রেখেই চিকিৎসা করাবেন। পরে বাড়ির সকলের মতামত নিয়ে তাঁকে ভর্তি করা হয় বারাসাতের নারায়ণী মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালে। একমাত্র ভরসা ছিল স্বাস্থ্য সাথী কার্ড। সেখানে ভর্তির পর সমস্ত পরীক্ষা নিরীক্ষার শেষে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে জানানো হয় হার্ট ব্লকেজ থাকায় সার্জারি করতে হবে। কিন্তু বিপুল পরিমাণ টাকার আশঙ্কায় চিন্তিত হয়ে পড়েন তিনি এবং তার পরিবার। সেই সময় হাসপাতাল থেকে জানান স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকলে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে অপারেশন সম্ভব।
বেশ কিছুদিন আগেই স্বাস্থ্য সাথী কার্ড করেছিলো ঘোষ পরিবার। চিকিৎসাবাবদ প্রায় ২ লক্ষ টাকা প্যাকেজ দেওয়া হয়। সেই মত চিকিৎসা করিয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ তিনি। তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগকে। তাঁর কথায়, “এমন পরিষেবায় সাধারণ মানুষ অন্তত চিকিৎসার সুযোগটুকু থেকে বঞ্চিত হবেন না।” কৃষ্ণেন্দু বাবুর মেয়ে বর্নিতা, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেছেন, “প্রথমে বাবার এমন শারীরিক অবস্থার কথা জানতে পেরে ভয়ে হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে যায়। কিন্তু স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মাধ্যমে চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় পরিষেবা একদম বিনামূল্যে পেয়ে আমরা বেজায় খুশি”।
এদিকে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সুফল যেমন মিলেছে হাতে নাতে তেমনই কার্ড থাকা সত্ত্বেও পরিষেবা না পেয়ে ফুঁসছেন হুগলী চুঁচুড়ার ১৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হরেন সাহা। তার পরিবার সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, হরেন বাবু, দীর্ঘ দিন ধরেই চোখের সমস্যায় ভুগছেন। চিকিৎসার জন্য তিনি গিয়েছিলেন দিশা আই হাসপাতালে, তাঁর অভিযোগ সেখান থেকে তাঁকে জানানো হয়, অন্যান্য বিমার সুবিধা চালু থাকলেও স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মাধ্যমে চিকিৎসার কোন ব্যবস্থা নেই।
স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসা না পেয়ে হতাশ হরেন সাহা ও তাঁর পরিবার। এ ব্যাপারে ‘দিশা আই হাসপাতালের’ সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে হাসপাতাল সূত্রে জানান হয়, ‘আমাদের সকল সেন্টারে এই কার্ডের সুবিধা এখনও উপলব্ধ নেই। নির্দিষ্ট কয়েকটি সেন্টারে এই কার্ডের মাধ্যমে চিকিৎসা পাচ্ছেন রোগীরা’।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন