scorecardresearch

বাংলার এপ্রান্তের পরতে-পরতে লুকিয়ে ইতিহাস, রহস্যে ঘেরা নানা কাহিনী আজও চর্চায়!

ছুঁয়ে দেখুন ইতিহাস! দিন কয়েকের ছুটিতে ঘুরে আসুন বাংলার এই প্রান্ত থেকে।

Take a few days off and come out of Murshidabad
বাংলার এই এলাকাকে কেন্দ্র করে আজও নানা কাহিনী লোকমুখে ঘোরে।

বেড়াতে যেতে মন চায় না এমন বাঙালির খোঁজ পাওয়া বেশ কঠিন। তবে ইচ্ছে থাকলেও কর্মক্ষেত্রে টানা কয়েকদিনের ছুটি ম্যানেজ করাটা বেশ টাফ হয়ে যায়। তাই দু’-তিনদিনের বেড়ানোর জন্য যাঁরা প্ল্যান করছেন তাঁদের জন্যই এই প্রতিবেদন। কাজের ব্যস্ততা থেকে দিন কয়েক ছুটি ম্যানেজ করতে পারলে ঘুরে আসুন নবাবের জেলা মুর্শিদাবাদ থেকে। এজেলার পরতে-পরতে লুকিয়ে ইতিহাস। যা জানার আগ্রহ আট থেকে আশি, প্রত্যেকেরই। দেশের স্বাধীনতার যুদ্ধের সেই মর্মস্পর্শী কাহিনীও লুকিয়ে এজেলাতেই।

মুর্শিদাবাদে কী দেখবেন?

মতিঝিল:

মুর্শিদাবাদে পৌঁছে আগে কোথায়-কোথায় বেড়াবেন তার একটা তালিকা করে নিন। প্রথমদিন হোটেলে ঢুকে একটু রেস্ট করে নিয়েই বেড়িয়ে পড়ুন লালবাগের মতিঝিলের উদ্দেশে। প্রথমদিনের মধ্যাহ্নভোজটা বাইরেই সেরে নিন। শোনা যায়, নবাব আলিবর্দি খাঁর জামাই এই ঝিল তৈরি করেছিলেন। একসময় এই ঝিলে নাকি মুক্ত চাষ হতো। বর্তমানে এখানে রাজ্য সরকার বিশ্ব বাংলা পার্ক তৈরি করেছে। সন্ধেয় গোটা মুর্শিদাবাদের ইতিহাস লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো-তে দেখানোর ব্যবস্থা আছে। সেই শো দেখে সন্ধের পর হোটেলে ফিরতে পারেন।

আরও পড়ুন- পাহাড়ের কোলে ঘুমিয়ে ছোট্ট গ্রাম, উত্তরবঙ্গের এপ্রান্তের অসাধারণ শোভা ভাষায় প্রকাশ কঠিন!

জাহানকোষা কামান ও কাটরা মসজিদ:

মুর্শিদাবাদ ভ্রমণের দ্বিতীয় দিনে দেখে আসতে পারেন জাহানকোষা কামান। শোনা যায় ১৭ ফুটেরও বেশি দৈর্ঘ্যের এই কামান নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ ঢাকা থেকে মুর্শিদাবাদে এনেছিলেন। কাছেই রয়েছে কাটরা মসজিদ। এই মসজিদের ঢোকার মুখের সিঁড়িতেই রয়েছে নবাব মুর্শিদকুলি খাঁর সমাধি।

নিমক হারাম দেওরি:

মীরজাফরের প্রাসাদ এটা। এখনও এখানে মীরজাফরের বংশধররা বসবাস করেন।

আরও পড়ুন- পাহাড়ের ঢালে ছবির মতো সাজানো কোলাহলহীন গ্রাম! গেলে ফিরতে মনই চাইবে না

কাঠগোলা বাগান:

কাঠগোলা বাগানের মধ্যে নানা রকমের ফুলের শোভা আপনাকে মুগ্ধ করবে। এর মধ্যে রয়েছে জৈন মন্দির ও একটি ছোট চিড়িয়াখানা। এখান থেকেই দেখে আসতে পারেন জগত শেঠের বাড়ি। জগত শেঠ ছিলেন একজন ধনকুবের। তিনি নাবাবদেরও টাকা ধার দিতেন। বর্তমানে এখানে একটি মিউজিয়াম তৈরি করা হয়েছে।

নসিপুর রাজবাড়ি:

এই নসিপুর রাজবাড়িটি প্রায় চারশো বছরের পুরনো। রাজবাড়ি ঘিরে রয়েছে ফুলের বাগান। পুরনো রাজবাড়ি ঘুরে দেখার স্বাদ নিতে চাইলে এজায়গা একেবারে পারফেক্ট চয়েজ।

আরও পড়ুন- কোলাহলহীন সাগরপাড় মন কাড়বেই! কলকাতার খুব কাছেই এপ্রান্তে অনাবিল আনন্দ

হাজারদুয়ারি:

মুর্শিদাবাদের সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে এই হাজারদুয়ারির নাম। বর্তমান এটি একটি মস্ত সংগ্রহশালা। হাজারটি দরজা থাকার কারণেই এই প্রাসাদের নাম হাজারদুয়ারি হয়েছে। তবে এর মধ্যে ন’শোটি আসল দরজা রয়েছে, বাকি একশো দরজা নকল। নবাব হুমায়ুন এই বিশাল আকৃতির রাজপ্রাসাদ তৈরি করিয়েছিলেন। এই রাজপ্রাসাদের ভিতরে সংগ্রহশালায় ইংরেজদের বহু জিনিসের পাশাপাশি মুর্শিদবাদের নবাবদের ব্যবহৃত বহু সামগ্রী সযন্তে রাখা রয়েছে।

ইমামবাড়া:

হাজারদুয়ারির ঠিক সামনেই রয়েছে ইমামবাড়া মসজিদ। নবাব সিরাজদৌল্লা এটি নির্মাণ করিয়েছিলেন। শোনা যায় সিরাজদৌল্লার দাদু আলিবর্দি খাঁ মদিনা থেকে মাটি আনিয়েছিলেন এই মসজিদ তৈরির জন্য।

খোশবাগ:

নদীর পাড়ের এই খোশবাগেই রয়েছে নবাব সিরাজদৌল্লার কবর।

আরও পড়ুন- পাহাড়ঘেরা গ্রামের বুক চিরেছে নদী, উত্তরবঙ্গের এতল্লাট এককথায় অসাধারণ!

কীভাবে যাবেন মুর্শিদাবাদে?

শিয়ালদহ থেকে লালগোলাগামী ট্রেন ধরুন। কলকাতা থেকে মুর্শিদাবাদের দূরত্ব ১৯৫ কিলোমিটার। ঘণ্টা পাঁচেকের মধ্যেই মুর্শিদাবাদে পৌঁছনো যায়। ট্রেনে মুর্শিদাবাদে নেমে সফর শুরু করুন। এছাড়াও যাঁরা গাড়িতে যাবেন তাঁদের সড়কপথে পৌঁছে যেতে হবে বহরমপুরে। কলকাতা থেকে একাধিক সরকারি-বেসরকারি বাস যায় বহরমপুরে। ছ’ঘণ্টার আশেপাশে সময় লাগতে পারে। বহরমপুরে নেমে পৌঁছে যেতে হবে লালবাগে।

মুর্শিদাবাদে থাকার জায়গার বন্দোবস্ত কী?

মুর্শিদাবাদ শহরেই প্রচুর ছোট-বড় হোটেল রয়েছে। ভাড়াও নাগালের মধ্যেই। মোটামুটি আটশো টাকা থেকে ভাড়ার রেঞ্জ শুরু। হাজারদুয়ারির কাছেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পিডব্লিউডি বিভাগের গেস্ট হাউস রয়েছে। বহরমপুরেও বেশ কিছু হোটেল রয়েছে। সিজনে গেলে বুক করে যাওয়াই ভালো। বছরের অন্যান্য সময় গেলে মুর্শিদাবাদে পৌঁছেও হোটেল বুক করতে পারেন।

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Westbengal news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Take a few days off and come out of murshidabad