সমাজের সমস্যার ওপর আলোকপাত করা তাঁর কাছে যেন একটা নেশা। আর সেই নেশাই যে একদিন তাকে সকলের মাঝে এক আলাদা পরিচিতি দেবে তা হয়ত কখনই ভাবেন নি সিঙ্গুরের শিক্ষক তাপস দাস। অভিনব এই ভাবনার জন্য ‘সেরার সেরা’ স্বীকৃতি আদায় করে রীতিমত উচ্ছ্বসিত তিনি। সম্প্রতি ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডসে নিজের নাম নথিভুক্ত করেছে তাপস বাবু।
'ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে'র ওয়েব সাইট অনুসারে জানা গিয়েছে ২০২০ সালের ৫ মে থেকে শুরু করে ১৪ এপ্রিল, ২০২৩ পর্যন্ত সংবাদপত্রে রেকর্ড সংখ্যায় ‘লেটারস টু দ্য এডিটর’ প্রকাশিত হওয়ার কারণেই তাঁর নাম নথিভুক্ত হয় ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডসে। এই সময়ের মধ্যে মোট ১২১টি চিঠি তিনি লেখেন। তার সবকটিই প্রকাশিত হয় সংবাদ পত্রে। প্রতিটি চিঠিতেই তিনি নাগরিক সমাজের নানান সমস্যাকে তুলে ধরেন।
তাপসের এই স্বীকৃতিতে এলাকা এবং এলাকার বাইরে ছাত্র, অভিভাবক ,বন্ধু-পরিচিত মহলে রীতিমত খুশির হাওয়া। একের পর এক সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মূলত সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পরিবেশগত সমস্যা কে চিঠির মাধ্যমে তুলে ধরেছেন বাংলা সংবাদপত্রে।
পেশায় তিনি এক স্কুলশিক্ষক। জন্মস্থান সিঙ্গুরের পাশাপাশি কর্মস্থলেও তিনি সকলের মধ্যে সমানভাবে জনপ্রিয়। সহকর্মীর এহেন কৃতিত্বে উচ্ছ্বসিত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমরনাথ ঘোষাল। তাপসের কৃতিত্বে বেশ গর্বিত হয়ে তিনি বলেন " আমার সহকর্মী তাপস বাবু, একজন সফল নাট্যকর্মী ,পাশাপাশি সমাজের সার্বিক কল্যাণের জন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে চিঠির মাধ্যমে সংবাদপত্রে তুলে ধরে সমাজ মনস্কতার পরিচয় দিয়েছেন, আর তারই স্বীকৃতি হিসাবে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে তিনি তার নাম ইতিমধ্যেই নথিভুক্ত করেছেন। তাপসের এই কৃতিত্বে আমরা বিদ্যালয়ের সকলেই খুশি”।
নিজের এই কৃতিত্ব সম্পর্কে তাপসবাবু জানিয়েছেন, “সমাজের যে বিভিন্ন সমস্যাকে তুলে ধরেছেন বারেবারে তা কেবল ব্যক্তিগত সমস্যা নয়। সমাজের সকলের কথা ভেবেই বারেবারে বাস্তব সমস্যাগুলির ওপর আলোকপাত করেছি। সমাজের এই ধরণের সমস্যার কারণে নিজের পাশাপাশি অপরেরও ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সমাজকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করতেই আমার এই প্রয়াস”।
আরও পড়ুন: < ব্যাংকক-নিউইয়র্কের ধাঁচে ঝাঁ চকচকে ‘ফুড স্ট্রিট’এবার খাস কলকাতায়, মিলবে মনপসন্দ ‘স্ট্রিট ফুড’ >
শিক্ষকতার পাশাপাশি তাপস বাবু একজন সফল নাট্যকর্মী। ছোট থেকে যৌথ পরিবারে বড় হয়ে ওঠা। বাবা মা, দাদা-বৌদি-ভাইঝি, স্ত্রী-কন্যাকে নিয়ে একই বাড়িতে থাকেন তাপসবাবু। স্বামীর এই সাফল্যে খুশি স্ত্রী মধুমিতাও। তাপস বাবু আরও জানিয়েছেন, ‘নাটক কিংবা লেখা-লিখি, সবসময়ই পরিবারই হল সর্বোচ্চ উৎসাহ-প্রেরণার ভিত্তি। পরিবার পাশে থাকার অর্থ সব কিছু সঠিক ভাবে এগোবে’।
শিক্ষক গৌতম বিশ্বাস বলেন, "প্রতিনিয়ত যে সমস্যার আমরা মুখোমুখি হই বা হচ্ছি, আমাদের সকলের মুখের ও মনের অব্যক্ত কথা তাপসবাবু তাঁর কলমে সুন্দরভাবে তুলে ধরেন বারে বারেই। ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস ওনাকে সম্মানিত করেছে জেনে খুব খুশি হয়েছি"।