WBHS Result 2021: উচ্চমাধ্যমিকে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছে মুর্শিদাবাদের রুমানা সুলতানা। ফলপ্রকাশের দিন তাকে ‘মুসলিম গার্ল’ উল্লেখ করে বেজায় বিপাকে সংসদ সভাপতি মহুয়া দাস। মেধার কোনও ধর্ম নেই, পড়ুয়াদের কোনও বিভাজন, এমন প্রচারে সরব হয়েছে নেটিজেনরা। রাজনৈতিকভাবে মহুয়া দাসের মন্তব্যের সমালোচনা করা হয়েছে। এবার এই বিষয়ে খানিকটা সংসদ সভাপতির পাশে দাঁড়িয়ে ফেসবুকে সরব হলেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন। দেশ ও সমাজের একাধিক সমস্যার জন্য মুসলিমরা দায়ী। শুধু উচ্চমাধ্যমিকে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে একজন মুসলিম। এটা বলা যাবে না। খানিকটা এমন ব্যাঙ্গাত্মক ভাবেই ফেসবুকে সরব এই বাংলাদেশী লেখিকা।
তিনি লেখেন, ‘মুসলিমরা নামাজ পড়ার জন্য রাস্তা ব্লক করে ট্রাফিক জ্যাম বাড়ায়, জনগণের অসুবিধে করে।মুসলিমরা আত্মঘাতী বোমা হয়ে মানুষ খুন করে। মুসলিমরা বোমাবাজি করে। মুসলিমরা সন্ত্রাস করে। মুসলিমরা বহুবিবাহ করে। মুসলিমরা লাভ-জিহাদ করে। মুসলিমরা আইন-বিরোধী ফতোয়া জারি করে। মানুষের মাথার মূল্য ধার্য করে।‘ এখানেই শেষ নয়। তিনি আরও লিখেছেন, ‘মুসলিমরা মানবাধিকার বিরোধী। মুসলিমরা নারীবিরোধী শরিয়া আইন বহাল রাখতে চায়। মুসলিমদের কাছে মেয়ে বিয়ে দেওয়া যাবে না।
মুসলিমদের কাছে বাড়ি ভাড়া দেওয়া যাবে না। এগুলো ঠিক আছে।‘ এরপরেই ব্যাঙ্গের সুরে তিনি জুড়েছেন, ‘কিন্তু একটি মুসলিম মেয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে পাস করেছে বললে ঠিক নেই। তাহলে তো মনে হচ্ছে নিগেটিভ কথার বেলায় মুসলিম শব্দটি ব্যবহার করা চলতে পারে, পজিটিভ কথার বেলায় মুসলিম শব্দটির ব্যবহার চলতে পারে না! তখন বলতে হবে রুমানা সুলতানা পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে। যেন রুমানা সুলতানা নামটা শুনে বোঝা যাবে না সে হিন্দু না মুসলিম!’
তাঁর পরামর্শ, ‘মুসলিম শব্দটি পজিটিভ বাক্যে ব্যবহার হোক। এতে মুসলিমরাও অনুপ্রাণিত হবে সামনে এগোতে। আর মুসলিমবিরোধীদেরও কিছুটা বোধোদয় হবে। আমি বলতে চাই একটি মুসলিম মেয়ে পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে। ...।‘ দেখুন সেই পোস্ট:
এদিকে, উচ্চমাধ্যমিক অভূতপূর্ব সাফল্যের পুরস্কার। রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী প্রকল্পের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হচ্ছেন রুমানা সুলতানা। এবারের উচ্চমাধ্যমিকে এককভাবে সর্বাধিক নম্বর পেয়েছেন কান্দির এই ছাত্রী। ৫০০-র মধ্যে ৪৯৯ পেয়েছেন তিনি। শুক্রবার মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে জেলা প্রশাসনের তরফে সংবর্ধনা দেওয়া হয় রুমানা এবং জেলার আরেক কৃতী ছাত্র প্রীতম চক্রবর্তীকে।
এই অনুষ্ঠানে জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী জানিয়েছেন, রুমানাকে কন্যাশ্রী প্রকল্পের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর ঘোষণা করা হবে। জেলাশাসক বলেছেন, “মুর্শিদাবাদের নাম উজ্জ্বল করে উচ্চমাধ্যমিকে সর্বাধিক নম্বর পেয়েছেন এক কন্যাশ্রী। তাঁকেই কন্যাশ্রীর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর করা হবে। কন্যাশ্রীর সাফল্য জেলার অন্য ছাত্রীদেরও উৎসাহ জোগাবে। এটা আমাদের কাছে গর্বের বিষয়।”
অপরদিকে, শুক্রবার মহুয়া দাস বলেছেন, “মেয়েটি শিক্ষার রত্ন, গতকাল আবেগের বশে বলে ফেলেছি।” পরীক্ষার্থীর ধর্ম উল্লেখ আবেগের বশে করে ফেলেছিলেন। অন্য কোনও অভিপ্রায় তাঁর ছিল না বলে জানিয়েছেন মহুয়া।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন