শিক্ষক নিয়োগ ঘিরে বাংলায় দুর্নীতির ভুরি ভুরি অভিযোগ। তদন্তে সিবিআই। এর মধ্যেই আবার ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ ২৬৯ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। যা এককথায় নজিরবিহীন। এদের মধ্যে একাধিক জন রাজ্যের মন্ত্রীদের সুপারিশে বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছিল বলে অভিযোগ করলেন হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তাঁর সাফ দাবি, 'এই টেট নিয়ে যখন সিবিআই লাগানো হয়েছে তখন সিঙ্গুরের মন্ত্রীরও কান টানা হবে। কান টানলেই মাথা আসবে। বলাগড়ে যাঁরা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত তাঁদেরও ডাক পড়বে।'
বিজেপি সাংসদ লকেটের এই বক্তব্য ঘিরেই শোরগোল পড়েছে। নাম না করলেও 'সিঙ্গুরের মন্ত্রী' বলতে আদতে তিনি বাংলার শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্নাকেই বোঝাতে চেয়েছেন তা স্পষ্ট। লকেটের অভিযোগ, 'সিঙ্গুরের মন্ত্রীও টাকা নিয়ে চাকরি দিয়েছিলেন। মোট ৭ জনের চাকরি হয়েছিল, এঁদের মধ্যে তিন জনের চাকরি বাতিল হয়ে গেল। শুধু দেখি ওই তিন জনকে কীভাবে মন্ত্রী টাকা ফেরৎ দেন? আমার কাছে সব প্রমাণ রয়েছে। বলাগড়ের যুব নেতাও এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে যখন সিবিআই লাগানো হয়েছে তখন সিঙ্গুরের মন্ত্রীরও কান টানা হবে। কান টানলেই মাথা আসবে। বলাগড়ে যাঁরা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত তাঁদেরও ডাক পড়বে।'
আরও পড়ুন- এবার পাল্টা বাংলার পথে বজরঙ্গ দল, জেলা ও কলকাতায় বড় কর্মসূচি
সাংসদের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন মন্ত্রী বেচারাম মান্না। পাল্টা তাঁর হুঁশিয়ারি, 'আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সবটাই মিথ্যা। ২০২৪ সালে হুগলি থেকে হারবে জেনেই উনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন। উনি স্বীকার করে নিয়েছেন যে সিবিআইকে কাজে লাগানো হচ্ছে। আমি পুলিশকে সব জানিয়েছি। এবার মানহানির মামলা করব। উনি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করলে বুঝব যে সাংসদ বাপের বেটি।'
অন্যদিকে লকেটের 'সিবিআইকে তদন্তে লাগানো হয়েছে' প্রসঙ্গে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য পোলবার মহেশপুরে বলেন, 'সিবিআই লাগানো হয়েছে মানে কি? কে লাগাল? উনি এত জানেন তাহলে কি বিচার ব্যবস্থাকেও প্রভাবিত করছেন। সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তার মানে বিচার ব্যবস্থার মধ্যে প্রভাব আছে এটাই উনি বলতে চাইছেন। আমি এর তীব্র নিন্দা করছি।' এরপরই মন্ত্রী মঙ্গলবার সিবিআই নিয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের হতাশার কথা তুলে ধরে বলেন, 'বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় খোলা এজলাসে যেটা বলেছেন সেটা সাংসদ হিসাবে কি উনি শুনেছেন?কিছুই তো নেই সাকসেস রেট। শুধু সিবিআই করতে করতে উনি যে হতাশ হয়ে গেছেন সেটাও কোর্টে বলেছেন। শুনছি কারা কারা সব রয়েছে বলছেন। আসলে যারা থাকে তারাই বলতে পারে।'