Headmistress farewell: আজও পড়ুয়াদের সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হদয়স্পর্শী সম্পর্কে ছেদ পড়েনি। ফের একবার যার প্রমাণ মিলেছে পূর্ব বর্ধমানের ভাতার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে। স্কুলের প্রিয় প্রধান শিক্ষিকার বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পড়ুয়া থেকে শুরু করে অভিভাবক এবং সহ-শিক্ষক, সবারই চোখ বেয়ে শুধুই ঝরল জল। যে আবহ দেখে শেষমেশ সবার প্রিয় প্রধান শিক্ষিকা আবেদা বেগম চৌধুরীও নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি। তাঁর বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আবেগতাড়িত কন্ঠে প্রধান শিক্ষিকা বললেন, "আমার শিক্ষকতা জীবনের বিদায়ের দিনটি আজীবন আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।"
নারী শিক্ষায় ইতিমধ্যেই সুনাম কুড়িয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ের পড়ুয়া সংখ্যা ১১০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে এই স্কুলে মোট ২২ জন রয়েছেন। প্রায় ৩৬ বছর আগে ভাতারের এই বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার দারিত্ব গ্রহণ করেন আবেদা বেগম চৌধুরী। পরবর্তী সময়ে আদর্শনিষ্ঠ এই শিক্ষিকার উপরেই বর্তায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের উন্নতি সাধনেও তিনি সর্বোতভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যান।
নিজের ব্যবহারিক গুনে তিনি তাঁর স্কুলের সকল পড়ুয়া থেকে শুরু করে সহ-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী এবং অভিভাবকদের কাছেও হয়ে উঠেছিলেন শ্রদ্ধার মানুষ। প্রিয় 'বড় দিদি'কে নিয়ে আজও ভাতারবাসীর গর্বের শেষ নেই।
এহেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা আবেদা বেগম চৌধুরীর শিক্ষকতা জীবনের ইতি ঘটল বুধবার। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাই ঘটা করে আবেদা বেগম চৌধুরী ম্যাডামের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। সেই অনুষ্ঠানে এলাকার বিশিষ্টজনের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের সব পড়ুয়া, বহু প্রাক্তন ছাত্রী, অভিভাবক এবং সহ-শিক্ষিকা ও শিক্ষা কর্মীরা অংশ নেন। সকলেই চোখের জলে বিদায় জানান প্রধান শিক্ষিকাকে। তা দেখে প্রধান শিক্ষিকাও তাঁর চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি।
আরও পড়ুন- Kolkata Metro: মেট্রোযাত্রীরা এখবর এখনই পড়ুন! নয়তো আজ থেকেই ঘোর সমস্যায় পড়তে পারেন!
বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মদক্ষ শান্তনু কোনার ছাড়াও ভাতার সার্কেলের স্কুল পরিদর্শক মৌমিতা সরকার। এছাড়াও ভাতার কলেজের প্রিন্সিপাল ডক্টর এনামুর রহমান, ভাতার গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রূপালী ঘোষ এবং স্কুলের প্রেসিডেন্ট বলাই দাস বৈরাগ্য
উপস্থিত ছিলেন ।
বিদায়ী ভাষণে প্রধান শিক্ষিকা আবেদা বেগম চৌধুরী বলেন, "কর্মজীবন থেকে সকলকেই একদিন অবসর নিতে হবে। তবে কর্মজীবনের স্বার্থক কর্ম চিরস্মরণীয় হয়ে থাকে। আমি আমার শিক্ষকতার কর্মজীবন থেকে অবসর গ্রহণের দিনে বিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রী,সহ-শিক্ষিকা এবং অভিভাবকদের কাছ থেকে যে সম্মান ও ভালবাসা পেলাম তা এককথায় অনবদ্য। সবার চোখের জলে হয়তো এদিন আমার শিক্ষকতা জীবনের ইতি হল ঠিকই, তবে এই দিনটা আজীবন আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।"