Malda Silk Nursery Centre: রাজ্য সরকারের উদ্যোগে দারুণ এই তৎপরতায় বেকাররা (Unemployed) রোজগারের দিশা পাবেন। এলাকার তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে অন্যদেরও সাবলম্বী করে তুলতে যেভাবে রাজ্য সরকার (Wb Govt.) পাশে দাঁড়িয়েছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। স্থানীয় প্রশাসনের বেনজির এই তৎপরতাতেই অবশেষে চালু হয়ে গিয়েছে রেশম নার্সারি কেন্দ্র। প্রশাসন তাঁদের আয়ের পথ দেখানোয় খুশি গ্রামবাসীরা।
মালদার ইংরেজবাজারের মহদীপুর পঞ্চায়েত। এখানেই পিয়াসবাড়ি রেশম নার্সারি কেন্দ্রটি চালু হয়ে গিয়েছে। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ২৩৩ জন অস্থায়ী কর্মী নিয়ে এই রেশম নার্সারিটি চালু হয়েছে। যার ফলে মহদীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কর্মসংস্থান (Job) পাওয়া সাধারণ গ্রামবাসীদের মুখে হাসি ফুটেছে। এবার থেকে এখানে রেশম চাষের ক্ষেত্রে চাষিদের নতুন করে সমস্যায় পড়তে হবে না বলেই আশ্বাস দিয়েছেন রেশম নার্সারি কেন্দ্রের কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে জানানো হয়েছে, এবারে সহজেই মিলবে তুঁত গাছের কাটিং থেকে পলু পোকার ডিম।
উল্লেখ্য, ইংরেজবাজার ব্লকের পিয়াসবাড়ি গ্রামে রয়েছে রাজ্য সরকারের এই রেশম নার্সারি কেন্দ্রটি। মূলত এই নার্সারি থেকেই উত্তরবঙ্গের (North Bengal) জেলাগুলিতে রেশম গাছের কাটিং চারা এবং পলু পোকার ডিম সরবরাহ করা হয়। এটি উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ রেশম নার্সারি কেন্দ্র (Silk Nursery Centre)।
সরকারিভাবে রেশম চাষের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে একাধিক পরিকল্পনা দীর্ঘদিন ধরেই নেওয়া হয়েছে। কৃষকদের প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে কৃষি ও যন্ত্রপাতি বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু এতদিন পর্যন্ত মালদার (Malda) এই রেশন নার্সারিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে কর্মী না থাকায় উৎপাদন কমে গিয়েছিল। ফলে মালদা-সহ অন্যান্য জেলার রেশম চাষিরা রেশম গাছের কাটিং ও পোলুপোকার ডিম সংগ্রহ করতে সমস্যায় পড়তেন। বাইরে থেকে চড়া দামে কিনতে হত কৃষকদের (Farmers)। তাই সরকারি এই রেশম নার্সারিটি সঠিকভাবে পরিচালনার দাবি তুলে আসছিলেন জেলার রেশম চাষিরা।
সংশ্লিষ্ট এলাকার রেশম নার্সারি অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, এই রেশম নার্সারিটি প্রায় ১৯০ বিঘা জমির ওপর অবস্থিত। প্রতি বছর গড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ কুইন্টাল রেশম গাছের কাটিং উৎপাদন করার ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু কর্মী না থাকায় এতদিন তা সম্ভব হয়নি। এই নার্সারির উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে জেলা রেশম দফতর ও স্থানীয় পঞ্চায়েতের যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। যৌথভাবে এই নার্সারিতে ২৩২ জন অস্থায়ী কর্মী নেওয়া হয়েছে। একসঙ্গে প্রচুর অস্থায়ী কর্মী কাজ শুরু করায় গোটা নার্সারি চত্বরে আবার চাষ শুরু হয়েছে।
অস্থায়ী কর্মী কৃষ্ণা মণ্ডল, দেবী দেবী মণ্ডলদের বক্তব্য, এতদিন কর্মী না থাকায় মাত্র কয়েক বিঘা জমিতে রেশমের কাটিং উৎপাদন করা হত। বাকি গোটা নার্সারী চত্বর আগাছায় ভরে গিয়েছিল। পোলুর ডিম তৈরির ঘরগুলিও ব্যবহার ও সংস্কারের অভাবে বেহাল হয়ে পড়েছিল। নার্সারিতে কর্মী আসায় এবার থেকে গোটা নার্সারি জুড়েই শুরু হয়েছে চাষ এমনকী সমস্ত ঘরগুলিতেই পলু পোকার ডিম ফোটানো হবে। এর ফলে স্বাভাবিক হবে এই নার্সারীর উৎপাদন ক্ষমতা।
আরও পড়ুন- Premium: বাংলার ‘মিষ্টি গল্প’: ২৫০ বছর আগে এই মিষ্টির জন্ম, ওপার বাংলা থেকে গিয়েছিল ব্রিটেনের রানির দরবারে
মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি লিপিকা বর্মন ঘোষ জানিয়েছেন, উত্তরবঙ্গের রেশম চাষিরা খুব সহজে এখান থেকে পাবেন রেশম গাছের কাটিং থেকে পোলু পোকার ডিম। নার্সারির (Nursery) উৎপাদন। কারণ আশেপাশের কৃষকেরাই এখানে অস্থায়ীভাবে কাজ পেয়েছেন। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে নতুনভাবেই এই রেশম নার্সারি কেন্দ্রটি চালু হয়েছে।
অন্যদিকে,
পিয়াসবাড়ি রেশম নার্সারি সুপারিন্টেন্ডেন্ট ড: মণিশংকর ঘোষ জানিয়েছেন, অনেকদিন ধরেই এখানে পরিকাঠামোর অভাবে প্রয়োজনমতো রেশম গাছের কাটিং ঠিকমতো উৎপাদন হতো না। যার ফলে চাষিদের অনেকটাই সমস্যা পড়তে হত। এমনকী পলুপেকার ডিমের উৎপাদনের ক্ষেত্রেও নানা সমস্যা তৈরি হয়েছিল। এবারে একসঙ্গে এতজন কর্মী অস্থায়ীভাবে নেওয়া হয়েছে। জোরকদমে কাজও শুরু হয়েছে। এখানে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে। এর ফলে রেশম চাষিদের আর সমস্যায় পড়তে হবে না।