বুধবারের মতো বৃহস্পতিবারেও উত্তপ্ত পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা চত্বর। ফের চোর চোর স্লোগান নিয়ে শাসক-বিরোধী পক্ষের মধ্যে তরজা। এবার বিধানসভা চত্বরে দুইপক্ষই ধর্নায় বসে পড়ল এদিন। বুধবারও অমিত শাহের সভার পর এই চিত্র দেখা গিয়েছিল বিধানসভা চত্বরে। তৃণমূল-বিজেপি দুই দলের স্লোগান যুদ্ধের নেতৃত্বে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী না থাকলেও শুভেন্দু ধর্নায় বসে পড়েন।
জানা গিয়েছে, এদিন বিধানসভায় আম্বেদকর মূর্তির পাদদেশে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে ধর্না কর্মসূচি পালন করছিলেন তৃণমূল বিধায়করা। এই নিয়ে দ্বিতীয় দিনে পড়ল তাঁদের কর্মসূচি। অন্যদিকে, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সাসপেনশনের প্রতিবাদ এবং রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে মন্ত্রিসভা থেকে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন হাতে গোনা কয়েকজন বিজেপি বিধায়ক। সেই সময় বিধানসভায় এসেছিলেন শুভেন্দু। কিছুক্ষণ পর তিনি বেরিয়ে যাওয়ার সময় তৃণমূল বিধায়কদের তরফে তাঁর নামে চোর চোর স্লোগান দেওয়া হয়।
বিধানসভার গেটের সামনে থেকে ফের ফিরে আসেন শুভেন্দু। এবং শুভেন্দুর নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়করা বিধানসভায় ঢোকার সিঁড়িতে ধর্নায় বসে পড়েন। দুপক্ষের মধ্যেই স্লোগান পাল্টা স্লোগান দেওয়া হয়। এর মধ্যেই বিধানসভায় এসে পৌঁছন কলকাতা পুলিশের ডিসি নর্থ, এবং পুলিশবাহিনী। জাতীয় সঙ্গীত অবমাননার অভিযোগে শুভেন্দু-সহ ১২ জন বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে হেয়ার স্ট্রিট থানায় এফআইআর দায়ের করেন বিধানসভার সচিব। বিধানসভা চত্বরে তুমুল উত্তেজনা দেখা দেয়।
আরও পড়ুন বিধানসভায় হুলস্থূল, মমতাকে নিশানা করে ‘চোর’ স্লোগান শুভেন্দুর, পাল্টা তোপ মুখ্যমন্ত্রীর
প্রসঙ্গত, অমিত শাহর সভা শেষ হতেই বুধবার বিকেলে বিধানসভায় প্রবেশ করেন শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপি বিধায়করা। সেই সময় বিধানসভার আম্বেদকর মূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী-সহ তৃণমূল বিধায়করা। ‘বিজেপির সবাই চোর’ বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন জোড়াফুল বিধায়করা। যা শুনেই উল্টোদিকে বিধানসভা ভবনের সিঁড়ি ও লবিতে উত্তেজিত হয়ে পড়েন বিরোধী দলনেতা। সরাসরি তৃণমূলের ধর্নার দিকে তাকিয়ে বলতে থাকেন, ‘ডিএ চোর মমতা, চাকরি চোর মমতা।’ গলা মেলান শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ-সহ অন্য বেশ কয়েকজন গেরুয়া বিধায়ক। পরে লবিতেই বসে পড়েন তাঁরা।
এরপরই ধর্না অবস্থানে ইতি টানার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তখনই শুভেন্দু অধিকারীদের আচরণ নিয়ে মুখ খোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘এটা নোংরামি, গুণ্ডামি। বিধানসভায় অসভ্যতা করছে, স্পিকারকে বলবো সব ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নিতে। আমাকে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ দেখিয়ে লাভ নেই। সারাজীবন লুঠ করেছে, গদ্দারদের আমাদের কেউ ভয় পায় না। আমাদের এই ধর্না স্পিকারের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে করা হচ্ছে। কেউ কোনও কর্মসূচি নিলে আমরা কেউ বাধা দিই না। ভোটে পাত্তা পায়নি, গোহারা হেরেছে, তাই এসব করছে।’