অমর একুশের আবেগের দিনে কিছু সময়ের জন্য মুছে গেল ভারত-বাংলাদেশ কাঁটাতারের সীমারেখা। শুক্রবার দুই বাংলার যৌথ উদ্যোগে উদযাপিত হল অমর একুশে। ভাষাপ্রেমীদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে পারাপার রুখতে পারল না বিএসএফ ও বিজিবি। কার্যত নীরব দর্শক হয়েই সেই মিলন দৃশ্য দেখল দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। তবে সেই আবহেই এপারের একুশের মঞ্চ থেকে এনআরসি বিরোধী স্লোগান তোলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
আরও পড়ুন: এক লক্ষ টাকা বিদ্যুতের বিল! চোখে ‘অন্ধকার’ দেখছে চাষীর পরিবার
বনগাঁর পেট্রাপোল সীমান্তের 'নো ম্যানস ল্যান্ড'-এর অমর একুশের উদযাপনকে ঘিরে প্রতি বছর দুই বাংলার মিলন উৎসব পালিত হয়। যদিও এবছর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কড়া নির্দেশ ছিল একমঞ্চে আর অনুষ্ঠান করা যাবে না। সেই মতো এপারে পেট্রাপোলে ও ওপারে বেনাপোলে দু'টি আলাদা মঞ্চও করা হয়েছিল। প্রশাসনিকভাবে বলা হয়েছিল দু'দেশের ৭৫ জন করে প্রতিনিধি দু'দেশের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন। নো ম্যানস ল্যান্ডে শহিদবেদিতে মাল্যদান করেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও বাংলাদেশের সমবায় মন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য ও যশোরের সাংসদ শেখ আফিলউদ্দিন।
আরও পড়ুন: ‘তাপস পালের মৃত্যুর জন্য দায়ী মমতাই’
তবে প্রথমে ভারতীয় প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের উদ্দেশে হাঁটা শুরু করলে বিএসএফ ও বিজিবি তাঁদের আটকানোর চেষ্টা করে। যদিও তা ছিল কিছু সময়ের জন্য। দুই বাংলার মন্ত্রীরা বেরিয়ে যেতেই চেনা মেজাজে ফিরে আসেন দুই দেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী। সীমান্ত পেরোতে দেননি কোনও পক্ষকেই।
এদিন বাংলাদেশে একুশের মঞ্চে গিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য রাখেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। অমর একুশের মঞ্চেও এনআরসি বিরোধী স্লোগান রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মুখে। বাংলাদেশের অনুষ্ঠান মঞ্চে গিয়েও তিনি সুর চড়ালেন সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির বিরোধিতায়। সরাসরি বললেন, 'আমরা এই কাঁটাতার মানি না। দুই বাংলা আবার এক হবে। দুই জার্মানি যদি এক হতে পারে, দুই বাংলাও আবার এক হবে।' তারপরই বাংলাদেশের অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়ে সে দেশের মানুষের প্রতি জ্যোতিপ্রিয়র আহ্বান, 'আমাদের দেশে সিএএ নিয়ে একটা আইন পাশ হয়েছে। আমাদের দেশে তা নিয়ে আতঙ্ক চলছে। আমরা যারা বাংলাদেশ থেকে ভারতে গিয়েছি, তাঁদের তাড়িয়ে দেবে বলছে। আপনারাও আমাদের পাশে থাকুন। আপনারা আমাদের সাথে চলুন। আমরা ওই আইন মানি না।' জ্যোতিপ্রিয়র সঙ্গে এদিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন বনগাঁর পুরপ্রধান শংকর আঢ্য, বিধায়ক সুরজিৎ বিশ্বাস, পুলিনবিহারী রায়-সহ ভাষাপ্রেমীরা।