The India Post scam: পোস্ট অফিসের স্কিমে রাখা লক্ষ লক্ষ টাকা গায়েব, কোথায় গলদ, তদন্তে CID

The India Post scam: কালকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তারই তদন্তে নেমে বুধবার পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের উপ ডাকঘরে এল সিআইডি’র চার সদস্যের তদন্তকারী দল।

author-image
Pradip Kumar Chattopadhyay
New Update
The India Post scam: Cid investigation Jamalpur Sub Post Office News In bengali

পোস্ট অফিসের স্কিমে রাখা লক্ষ লক্ষ টাকা গায়েব, কোথায় গলদ, তদন্তে CID

The India Post scam:  চিটফান্ড প্রতারণায় সর্বস্বান্ত হয়েছেন বাংলার বহু  মানুষ। আর এবার একই রকম আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে কাঠগড়ায় খোদ ভারতীয় ডাক বিভাগ। কালকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তারই তদন্তে নেমে বুধবার পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের উপ ডাকঘরেএল সিআইডি’র চার সদস্যের তদন্তকারী দল। 

Advertisment

ডাকঘরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি সিআইডি অফিসাররা প্রতারিতদের বাড়িতেও যান। তাদের কাছ থেকে ঘটনা বিস্তারিত ভাবে জানার চেষ্টা করেন সিআইডির আধিকারিকরা। প্রতারিত জামালপুরের পাল পরিবারের সদস্যদের প্রত্যাশা,পুলিশ কিছু না করলেও সিআইডি নিশ্চই তাদের সঞ্চয়ের অর্থ ফিরে পাওয়ার ব্যবস্থা করবে। 

কলকাতা হাইকোর্টে মামলাকারী পাল পরিবারের সদস্যরা জামালপুর হাটতলা এলাকার বাসিন্দা। নিম্নবিত্ত পরিবার। ষাটোর্ধ্ব পরিবার কর্তা রণজিত পাল এখনও পারিবারিক পেশাকেই আঁকড়ে রয়ে আছেন। মাটির কলসি ,হাঁড়ি সহ নানা সরঞ্জাম তৈরি করে তিনি জামালপুর হাটে বসে বিক্রি করেন। স্ত্রী রাধারাণী পাল কঠিন রোগে আক্রান্ত। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। রণজিত পালের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। 

ছোট ছেলে সুরজিৎ জানিয়েছেন ,কষ্টার্জিত অর্থ  থেকে কিছু কিছু অংশ তাঁরা জমিয়ে রাখতেন। জমানো অর্থ জামালপুর সাব পোস্ট অফিসে গচ্ছিত রাখার বিষয়ে তাঁরা মনস্থির করেন। সেইমত তিনি ছাড়াও তাঁর বাবা ও মা এবং দিদি ও জামাইবাবু জামালপুর পোস্ট অফিসে আলাদা আলাদা অ্যাকাউন্ট খোলেন। ২০২১ সালে ১ বছরের 'ফিক্সড ডিপোজিট’ স্কিমে তাঁরা নিজের নিজের অর্থ জমা করেন। সব মিলিয়ে জমা করা হয় ১২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। তদানিন্তন জামালপুর সাব পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার বিদ্যুৎ সুর ওই টাকা গ্রহণ করে নিয়ে শীল স্ট্যাম্প দিয়ে তাঁদের সবার অ্যাকাউন্ট বই ইস্যু করে দেন।

Advertisment

ভারত সরকারের অধীন জামালপুর সাব পোস্ট অফিসে সঞ্চয়ের টাকা ফিক্সিড ডিপোজিট করে নিশ্চিন্তেই ছিলেন পাল পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু ফিক্সড ডিপোজিটের মেয়াদ ১বছর উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর  অসুস্থ হয়ে পড়েন রণজিত পালের স্ত্রী রাধারাণী দেবী। চিকিৎসার জন্য তাঁকে কলকাতা সহ ভিন  রাজ্যের হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। তখন টাকার প্রয়োজন হলে পাল পরিবারের সদস্যরা  অগ্রিম ফিক্সড ডিপোজিট ভাঙিয়ে টাকা তুলে নেওয়ায় জন্য জামালপুর সাব পোস্ট অফিসে যান । 

রাধারাণী দেবীর ছোট ছেলে সুরজিৎ পাল বলেন,“টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করার সময় জামালপুর সাব পোস্ট অফিস থেকে দেওয়া সমস্ত নথি নিয়ে আমরা টাকা তুলতে যাই। নথি দেখে পোস্ট মাস্টার বিদ্যুৎ সুর আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে পোস্ট অফিস থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। উনি পরিস্কার জানিয়ে দেন,'আমরা নাকি ফিক্সড ডিপোজিট’ই করি নি’। পাশাপাশি দুর্ব্যাবহারের অভিযোগও ওঠে করে পোস্ট মাস্টারের বিরুদ্ধে।  

এর পরই পাল পরিবারের সদস্যরা বুঝে যান তাঁরা পোস্ট অফিসে ফিক্সড  ডিপোজিট করে প্রতারণার শিকার হয়েছেন।সুরজিৎ জানান ,“ প্রতারণার কথা জানাতে তাঁরা জামালপুর থানায় গিয়ে ছিলেন। কিন্তু থানা তাঁদের অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। তখন কিছু আর উপায় খুঁজে না পেয়ে তাঁরা জামালপুর সাব পোস্ট অফিসের তদানিন্তন পোস্ট মাস্টার বিদ্যুৎ সুরকে আসামী করে বর্ধমান আদালতে মামলা রুজু করেন। একই সাথে জেলা পুলিশ সুপার সহ জেলা ও রাজ্যের প্রধান ডাক বিভাগ এমনকি সিবিআই দফতরেও ঘটনা সবিস্তার লিখিত ভাবে জানান। 

বর্ধমান আদালত জামালপুর থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে থানা শুধুমাত্র একটা এফআইআর রুজু করে আর তাঁদের কাছে থাকা পোস্ট অফিসের দেওয়া নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করেই দায় সারে। তাই ন্যায় বিচার পেতে গত বছরের শেষের দিকে তাঁরা কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। সেই মামালার শানানির দিন ছিল চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি । ওইদিন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ সিআইডিকে প্রতারণার তদন্তের নির্দেশ দেন ।  

সিআইডি অফিসাররা তদন্তের বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমকে কিছু বলতে চান নি। তবে সুরজিৎ পাল ও তার বাবা রণজিত পাল জানান  , সিআইডির চার জন অফিসার এদিন বেলা ১২ টার আগে জামালপুর থানা ও জালপুর সাব পোস্ট অফিসে যান। সেখানে থানার অফিসার ও পোস্ট অফিসের আধিকারিকদের সঙ্গে তারা কথা বলেন ।এর পর দুপুরে তাঁদের বাড়িতে এসে পৌছান সিআইডি অফিসাররা। বাড়ির সকল প্রতারিতদের কাছ থেকে সিআইডি অফিসাররা প্রতারণার ঘটনা সবিস্তার শোনেন।  সবার বক্তব্যের ভিডিও রেকর্ডিংও করেন সিআইডি অফিসারা ।সুরজিৎ পাল ও রণজিত বাবু বলেন ,তাঁদের সঞ্চয়ের টাকা ফিরে পাওয়ার ব্যবস্থা সিআইডি নিশ্চই করবে এই প্রত্যাশা তাঁদের রয়েছে।

একরত্তির প্রাণ বাঁচাতে ত্রাতার ভূমিকায় অভিষেক? অস্মিকার পরিবারকে কী আশ্বাস 'যুবরাজের'?

post office