আবাস যোজনার তদন্তের দ্বিতীয় দফায় তদন্তে আসা দুই সদস্যের প্রতিনিধি দল দ্বিতীয় দিনে রাজ্য পেরিয়ে আবার পাড়ি দিল বিহারে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় এই রাজ্যের তালিকায় নাম থাকা বিহারের বাসিন্দাদের সঙ্গে তদন্তকারীরা কথা বলেছেন।
এদিন প্রতিনিধি দলের দুই সদস্য সকালে প্রথমে সরাসরি পৌঁছে যান রতুয়া ১ নম্বর ব্লকে। সেখানে ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসারের সঙ্গে বৈঠকের পর, তাঁরা রওনা দেন রতুয়া ১ নম্বর ব্লকের বাংলা-বিহার সীমান্তবর্তী গ্রাম পঞ্চায়েতের গোবিন্দপুর গ্রামে। এখানেও গ্রামবাসীদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেন। তদন্তে উঠে আসে, এমন ব্যক্তিদের নাম বাংলার আবাস যোজনার তালিকায় আছে, যাঁরা আসলে বিহারের বাসিন্দা। অর্থাৎ, মালদার ঠিক পাশেই বিহারের কাটিহার জেলা। সেখানকার বাসিন্দাদের নাম রয়েছে আবাস যোজনায় বাংলার তালিকায়।
বাংলার সীমান্ত পেরিয়ে বিহারে গিয়ে সরেজমিনে সেই এলাকাতেও ঘুরে আসে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। এই পরিস্থিতিতে জেলাশাসক জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই এই এলাকার প্রায় ২৭ জনের নাম তালিকা থেকে বাতিল করা হয়েছে। এরপর প্রতিনিধিদল চলে আসে হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরে। সেখানে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি ও হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের আধিকারিকদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা বৈঠক করেন।
আরও পড়ুন- আদালতে যাওয়ার অর্থ নেই, মানবাধিকার কমিশনের ভূমিকায় আশার আলো দেখছে এপিডিআর
এদিকে কেন্দ্রের প্রতিনিধি দল আসছে শুনে কয়েকশো মানুষ বিভিন্ন জায়গা থেকে ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েতের সামনে জড় হয়। তাঁরা স্থানীয় বিডিও ও গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের উপস্থিতিতে বিডিও এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিদের লক্ষ্য করে বিক্ষোভকারীরা গো-ব্যাক স্লোগান দিতে থাকেন। ভালুকা ফাঁড়ির বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে বিক্ষোভ সামাল দেয়।
আরও পড়ুন- ‘এই রাজ্যপালকেও ম্যানেজ করতে মরিয়া মুখ্যমন্ত্রী’, বিস্ফোরক শুভেন্দু, কীসের ইঙ্গিত?
এসবের মধ্যেই কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের রাজ্যে আসা নিয়ে তুঙ্গে ওঠে রাজনৈতিক তরজা। দলীয় কর্মসূচিতে মালদায় যোগ দিতে গিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, 'সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার এই রাজ্যে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা কিছুই পাবেন না। তাঁদের খালি হাতে ফিরতে হবে।'
পালটা বিজেপির উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলা সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত বলেন, 'ওড়িশা, ঝাড়খণ্ডে তো বিজেপিশাসিত সরকার নেই। কিন্তু, ওখানে কোনও প্রতিনিধিদল পাঠাতে হয় না। এই রাজ্যের দুর্নীতি চরম জায়গায় পৌঁছে গেছে বলেই প্রতিনিধিদল এসেছে। তাঁরা শুরুতেই দেখছেন, অন্য রাজ্যের বাসিন্দাদের নাম এই রাজ্যের আবাস যোজনার তালিকায়। আমাদের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের ওপর আস্থা রয়েছে। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা তদন্ত করে সঠিক ব্যবস্থা নেবেন।'