পিতৃপক্ষেই পুজো উদ্বোধনের জেরে মুখ্যমন্ত্রীকে চরম আক্রমণে ভরিয়ে দিলেন বিরোধীরা। রবিবার অমাবস্যা তথা মহালয়া। পিতৃপক্ষের অবসান আর দেবীপক্ষের শুরু তারপর। কিন্তু, সেই শাস্ত্রবিধির তোয়াক্কা না-করে বৃহস্পতিবার পিতৃপক্ষের দ্বাদশীতেই মুখ্যমন্ত্রী শহর কলকাতা ও সংলগ্ন তিনটি পুজোর উদ্বোধন করেন। এই তিনটি পুজো হল শ্রীভূমি স্পোর্টিং, টালা প্রত্যয় এবং সল্টলেকের এফডি ব্লকের পুজো। আর, তাকে কেন্দ্র করে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে চরম আক্রমণে নেমেছে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি।
প্রতিবারই পুজোর উদ্বোধনের সময় মুখ্যমন্ত্রী স্বভাববশে মন্ত্র উচ্চারণ করেন। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। সেই উচ্চারিত মন্ত্র ভুল। তা বোঝাতে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর পুজো উদ্বোধনের ক্লিপিংস সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর টুইট, 'বাংলার লজ্জা। পিতৃপক্ষে দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করে দিলেন মাননীয়া। পিতৃপক্ষে পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে তর্পণ করা হয়। প্রেতদোষ মুক্ত করার জন্য উত্তরপুরুষ ব্রতী হন। এখন কোনও শুভ কাজ হয় না। দেবীপক্ষে নবরাত্রি শুরু হলে মায়ের আরাধনা হয়। বাঙালির সবটাই একা শেষ করে দেওয়ার সংকল্প নিয়েছেন।'
শুধু টুইট করাই নয়। টুইটে মুখ্যমন্ত্রীর স্তবপাঠের ভিডিও এবং সঙ্গে সঠিক স্তবপাঠের ভিডিও পাশাপাশি আপলোডও করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার পাশাপাশি অন্যান্য হিন্দুত্ববাদী নেতা-কর্মীরাও পিতৃপক্ষে পুজো উদ্বোধনের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর তীব্র সমালোচনা করেছেন। বিজেপি নেত্রী ইন্দ্রা গঙ্গোপাধ্যায় টুইট করেছেন, 'হিন্দু শাস্ত্রের রীতি, নীতি মেনে সেই আদি অনাদি কাল থেকে হয়ে আসা অকৃত্রিম সংস্কৃত মন্ত্র উচ্চারণেই পূজার্চনা হবে এবং নির্দিষ্ট তিথির দিনেই পুজো হবে। যেখানেই এর বিপরীত হতে দেখবেন, সেখানেই তীব্র প্রতিবাদ করুন। আমাদের ধর্মকে নিয়ে ভন্ডামি করার কারও কোনও অধিকার নেই।'
শিখ সম্প্রদায়ের নেতা তথা বিজেপির সর্দার জয়জিৎ সিং টুইট করেছেন, 'মাননীয়াকে হিন্দুদের আবেগ নিয়ে খেলার অধিকার কে দিয়েছে? কীভাবে দুর্গাপূজা শুরু হতে পারে পিতৃপক্ষ থেকে? কেন তিনি মহালয়ার আগে দুর্গাপূজা উদ্বোধন করলেন? এরপর তিনি শিখ, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, পারসিদের আচার-অনুষ্ঠানের সঙ্গেও একই কাজ করবেন?'