বিয়ের পণ না পেয়ে স্ত্রীর উপর অত্যাচার চালানোর অভিযোগ আগেই ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। পণ চাইতে শ্বশুরবাড়িতে চড়াও হয় জামাই। নতুন জামাই শ্বশুরবাড়িতে ঢুকতেই তাঁকে দেওয়া হয় 'মোক্ষম শিক্ষা'। যুবকের শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের এই 'শিক্ষা' ঘিরে বিতর্ক থাকলেও গ্রামবাসীরা কিন্তু পরিবারের পাশেই দাঁড়িয়েছে। পুলিশ এসে বরং জামাইকেই আটক করে নিয়ে গেছে।
পণের টাকা চাইতে স্ত্রীর বাপের বাড়িতে গিয়ে শিকলবন্দি হতে হল নতুন জামাইকে। নতুন জামাইকে শিকলে বেঁধে পুলিশে ফোন শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের। ঘটনা মালদার ইংরেজবাজার থানা এলাকার। অভিযোগ, পণের দাবিতে ওই যুবক তাঁর স্ত্রীর উপর নির্যাতন চালাচ্ছিল। সেই ঘটনা আগেই জেনেছিল মেয়েটির পরিবার। এরপর সোমবার রাতে তাঁদের জামাই শ্বশুরবাড়িতে এসে পণের টাকা দাবি করে। তখনই ক্ষুব্ধ শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা নতুন জামাইকে শিকল দিয়ে বেঁধে ফেলে। একটি ঘরে তাঁকে বেঁধে রাখা হয়।
ইংরেজবাজারের নরহাট্টা গ্রাম পঞ্চায়েতের বুধিয়া বিশ্বাসপাড়া এলাকার এই ঘটনা। নতুন জামাইয়ের শ্বশুরবাড়িতে এসে শিকলবন্দি হওয়ার খবর মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে গোটা গ্রামে। তবে গ্রামবাসদের অনেকেই জামাইকে 'উচিত শিক্ষা' দেওয়া গিয়েছে বলেই মনে করেন। এদিকে, সোমবার রাতেই অভিযুক্ত জামাই আক্রম আলি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ইংরেজবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁর স্ত্রী। তবে পুলিশ ওই রাতে খবর পেয়ে গিয়ে যুবককে শিকল খুলে উদ্ধার করে। তাঁকে আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন- ‘ষোলো আনার পাঠশালা’, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের অসামান্য কীর্তিতে গর্বের শেষ নেই এলাকাবাসীর
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধিয়া বিশ্বাসপাড়া এলাকার বাসিন্দা এক তরুণীর সঙ্গে দিন পঁচিশ আগে বিয়ে হয় মালদার রতুয়া থানার সুলতানগঞ্জের বাসিন্দা আক্রম আলির। বিয়ের সময় আক্রমের পরিবারের দাবি মতো ৫০ হাজার টাকা কম দেয় তরুণীর পরিবারটি। এরপর আরও ৪০ হাজার টাকা দাবি করে ওই গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। বিয়ের পর থেকে টাকা না মেলায় শুরু হয় তরুণীর উপর অত্যাচার। সোমবার রাতে নতুন জামাই আক্রম নিজেই বুধিয়ায় তার শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে যায় পণের বাকি টাকা নিতে। তখনই ক্ষুব্ধ হয়ে মেয়েটির বাপের বাড়ির লোকজন আক্রমকে শিকলবন্দি করে ঘরের মধ্যে বেঁধে রাখেন।
তরুণীর বাবা জানিয়েছেন, ভ্যান চালিয়ে তিনি সংসার চালান। দিন পঁচিশ আগে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। বিয়ের সময় বরপক্ষ ৯০ হাজার টাকা দাবি করেছিল। প্রথমে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন তাঁরা। বিয়ের এক সপ্তাহ পর ওরা তাঁর মেয়ের ওপর নির্যাতন শুরু করে। কিছুদিন আগে মেয়ে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়িতে পালিয়ে আসে। তারপরেও তাঁর জামাই বাকি ৪০ হাজার টাকার নিতে ফোনে হুমকি দিচ্ছিল। সোমবার রাতে জামাই বাড়িতে এসে অত্যাচার শুরু করে ৪০ হাজার টাকার জন্য। তখন তাঁরা একপ্রকার বাধ্য হয়েই যুবককে ঘরে ঢুকিয়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন। পরে গোটা ঘটনা পুলিশকে জানানো হয়।