Advertisment

Premium: মন্দিরভূমি বাংলা! এখানকার পাঁচ মন্দির, যেখানে বছরের কোনও সময় ভিড় কমে না

Heart of West Bengal: প্রতিদিন কয়েক হাজার ভক্ত এই মন্দিরে দেবী দর্শনে আসেন। দেবীর স্নানের সময়, এখানে ভক্তদের চোখ কাপড় দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Pareshnath, Temple

Pareshnath-Temple: কলকাতায় পরেশনাথের মন্দির। এখানে পুকুরে প্রচুর মাছ আছে। ভক্তরা প্রতিদিন সকালে সেই সব মাছকে খাওয়ান। (ছবি- ফেসবুক)

The spiritual heart of West Bengal: বিষ্ণুপুরের টেরাকোটা মন্দির থেকে কালীঘাটের কালী মন্দির। পশ্চিমবঙ্গ যেন মন্দির-ভূমি। যা এই রাজ্যের ঐতিহ্যশালী সংস্কৃতির পরিচয় বহন করে। পাশাপাশি, আধ্যাত্মিক উত্তরাধিকারের সাক্ষ্য দেয়। এদেশের ধর্মীয় সংস্কৃতির ইতিহাস কিন্তু শুধুমাত্র কোনও নির্দিষ্ট ধর্মকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠেনি। এখানে যেমন হিন্দুদের পবিত্র কালীঘাট মহাতীর্থ আছে। তেমনই আছে কলকাতায় জৈনদের বিখ্যাত মন্দিরও। আছে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের গন্তব্যস্থল বেলুড়মঠ।

Advertisment

কালীমন্দির, দক্ষিণেশ্বর
দেশের অন্যতম বিখ্যাত কালীমন্দির রয়েছে দক্ষিণেশ্বরে। এই মন্দির প্রেমের অবতার শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের লীলাক্ষেত্র। যাঁরা বাইরে থেকে কলকাতায় আসেন, তাঁরা অন্তত একবার দক্ষিণেশ্বরের কালীমন্দিরে বেড়াতে যান। মন্দিরটি তৈরি করিয়েছিলেন জানবাজারের রানি রাসমণি। হুগলি নদীর ঘাটের ঠিক পাশেই অপরূপ কারুকার্যে ভরা দক্ষিণেশ্বরের এই মন্দির। মন্দিরটি তৈরি করানোর পাশাপাশি রানি রাসমণি নদীর ঘাটের সৌন্দর্যায়ন, রাস্তা তৈরি, কলেজ নির্মাণও করিয়েছিলেন। দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরের কালীকে ভবতারিণী নামে ডাকা হয়। এই মন্দির চত্বরেই ১২টি শিবমন্দির রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে রাধাকৃষ্ণের মন্দির। আছে, রানি রাসমণির একটি স্মৃতিমন্দিরও।

কালীমন্দির, কালীঘাট
হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, ৫১টি সতীপীঠের অন্যতম কালীঘাটের কালীমন্দির। এখানে দেবীর ডানপায়ের আঙুল পড়েছিল। আদিগঙ্গা নদীর ধারে এই মন্দির। কথিত আছে অষ্টাদশ শতকে রাজা বসন্ত রায় মন্দিরটি তৈরি করিয়েছিলেন। তবে, ঠিক কবে এই মন্দির তৈরি হয়েছিল, সে নিয়ে নানা জল্পনা আছে। মন্দিরটির অভ্যন্তরে রয়েছে দেবী কালীর মূর্তি। দেবীর সোনার লম্বা জিহ্বা, এই মূর্তির অন্যতম বৈশিষ্ট্য। প্রতিদিন কয়েক হাজার ভক্ত এই মন্দিরে দেবী দর্শনে আসেন। দেবীর স্নানের সময়, এখানে ভক্তদের চোখ কাপড় দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়।

বেলুড় মঠ, হাওড়া
হুগলি নদীর তীরে অপর গুরুত্বপূর্ণ মন্দির হল বেলুড় মঠ। এই মঠ রামকৃষ্ণ মঠ এবং মিশনের সদর দফতর। মঠটি তৈরি করিয়েছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের জগদ্বিখ্যাত শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দ। এখানকার মন্দির, মঠ এবং উদ্যানের গঠনশৈলীতে হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান ভাবধারা মিলেমিশে আছে। ফেব্রুয়ারিতে শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মদিন অথবা বিশেষ তিথিতে এই মন্দিরে ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ে। সেই সময় মন্দিরচত্বরকে ঘিরে কার্যত মেলা বসে।

পরেশনাথের জৈন মন্দির, কলকাতা
জৈন সম্প্রদায়ের পবিত্র তীর্থক্ষেত্র পরেশনাথের মন্দির আছে কলকাতায়। এই মন্দির পরেশনাথের জৈন মন্দির নামে পরিচিত। এই মন্দির চত্বরে আছে চারটি মন্দির ভবন। তার মধ্যে একটি মন্দির ১০ম শতাব্দীর জৈন তীর্থঙ্কর শীতলনাথের প্রতি উৎসর্গ করা আছে। জৈনদের অষ্টম তীর্থঙ্কর চন্দ্রপ্রভু স্বামীর প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে এখানকার চন্দ্রপ্রভা মন্দির। এই মন্দির চত্বরের তৃতীয় মন্দিরটি ভগবান মহাবীরের প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে। বর্দ্ধমান মহাবীর ছিলেন জৈনদের ২৪তম তীর্থঙ্কর। এখানকার চতুর্থ মন্দিরকে বলা হয়- দাদাবাড়ি। যেখানে জৈন সন্ন্যাসী জিনদত্ত কুশল সুরির পদচিহ্ন আছে। মন্দিরটির প্রধান ভবন ১৮৬৭ সালের চেয়েও পুরোনো। এখানে শীতলনাথের মন্দির এবং বিরাট পুকুর অন্যতম দেখার মত জায়গা। পুকুরটিতে প্রচুর মাছ আছে। ভক্তরা প্রতিদিন সকালে সেই সব মাছকে খাওয়ান। ভক্তরা এখানকার প্রধান মন্দিরে নিয়মিত যাতায়াত করেন। মন্দিরটি কাচ, মোজাইক এবং বাগান দিয়ে অপরূপ সাজে সজ্জিত।

আরও পড়ুন- অবাক কাণ্ড! ভারত নয়, চিনকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন টেসলার ইলন মাস্ক

টেরাকোটা মন্দির, বিষ্ণুপুর
বাংলার ঐতিহ্যশালী মন্দিরগুলোর অন্যতম হল, বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের টেরাকোটা মন্দির। এই মন্দির চত্বরে ২০টি মন্দির রয়েছে। টেরাকোটার মন্দিরগুলো অপূর্ব সাজে সজ্জিত। খ্রিস্টীয় ১০ম থেকে ১৭ শতকের মধ্যে মন্দিরগুলো মল্ল রাজাদের রাজত্বকালে তৈরি হয়েছিল। বিষ্ণুপুর নামটি এসেছে হিন্দু ভগবান বিষ্ণুর নাম থেকে। এইসব মন্দিরগুলোর বিশেষত্ব, স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী টেরাকোটা নির্মাণশিল্প। এখানকার রাসমঞ্চ মন্দির, পিরামিডের মত বিভিন্ন স্তম্ভ দিয়ে ঘেরা। আদল অনেকটা কুঁড়েঘরের মত।

West Bengal Kalighat Bishnupur Temple Festival Temple
Advertisment