বাংলার মুকুটে আরও পালক যুক্ত হওয়ার অপেক্ষা। সদ্য ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তকমা পেয়েছে শান্তিনিকেতন। তার আগে সুন্দরবন ও হিমালয়ান রেলওয়েরও বিশ্ব ঐতিহ্যের তাকিকায় ঠাঁই হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গের আরও দুটো জায়গা ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তকমা পেতে পারে। এর একটি বাংলার উত্তর ও অন্যটি দক্ষিণে অবস্থিত।
১ বিষ্ণুপুর মন্দির
বিষ্ণুপুর বাঁকুড়ায় অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক শহর যা চমৎকার টেরাকোটা মন্দিরের জন্য বিখ্যাত। প্রাচীনকালে এই শহরটি মল্ল রাজ্যের রাজধানী ছিল। মল্ল রাজারা শিল্প ও স্থাপত্য প্রেমী ছিলেন, তাই তারা এই মন্দিরের দেয়ালে অসাধারণ নকশা ও মোটিফ খোদাই করেছিলেন।
এই মন্দিরগুলির দেওয়ালে ইতিহাসবিদরা ভারতীয় মহাকাব্যের নানা কাহিনী খুঁজে পেয়েছেন। তবে, বিষ্ণুপুর এখনও ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিয়ায় স্থান পায়নি। তবে বিবেচনাধীন। ১৯৯৮ সালের ৩রা জুলাই বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর মন্দিরকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তকমার জন্য আবেদন করা হয়েছে।
ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, বৈষ্ণব ধর্মে দিক্ষিত মল্লরাজ বীর হাম্বির মাকড়া পাথরের টেরোকোটার রাসমঞ্চ তৈরি করেছিলেন ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে। ১৬৪৩ সালে শ্যামরাই মন্দির গড়েন রঘুনাথ সিং। ১৬৫৫ সালে সেই রঘুনাথই গড়েন জোড়বাংলা। এমনই বহু মন্দির ছড়িয়ে রয়েছে বিষ্ণুপুর শহর ও আশপাশে। তার মধ্যে বেশ কিছু মন্দির ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের সংরক্ষিত।
- অবস্থান: বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া, পশ্চিমবঙ্গ (কলকাতা থেকে ১৩৯ কিমি)
- যাওয়ার আদর্শ সময়: অক্টোবর থেকে মার্চ
- বিষ্ণুপুর মন্দিরে প্রবেশ মূল্য: ভারতীয়দের জন্য জনপ্রতি ২৫ টাকা
- বিদেশীদের জন্য জনপ্রতি ৩০০ টাকা
- ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত কোনও প্রবেশমূল্য লাগবে না
২ নেওড়া ভ্যালি জাতীয় উদ্যান
বিগত এক বছরে প্রাণী ও উদ্ভিদ মিলিয়ে পঞ্চাশটিরও বেশি নতুন প্রজাতির সন্ধান মিলেছে বাংলার বুক থেকে। আর তার অধিকাংশই আবিষ্কৃত হয়েছিল উত্তরবঙ্গের নেওড়া ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে। দার্জিলিং জেলার কালিম্পং-এ অবস্থিত এই জাতীয় উদ্যানের সম্পূর্ণ জীববৈচিত্র্য আজও সামনে আসেনি বলেই মনে করেন গবেষকরা। সুন্দরবন ‘হেরিটেজ সাইট’-এর আখ্যা পেলেও কেন ব্রাত্য রয়েছে নেওড়া ভ্যালি? তা নিয়ে একাধিকবার প্রশ্ন তুলেছিলেন জীববিজ্ঞানীরা। ২০০৯ সালে মনোনয়ন জমা পড়ার পর, ইউনেস্কোর দফতরে এখনও পর্যালোচনার স্তরে রয়েছে সংশ্লিষ্ট বিষয়টি।
- অবস্থান: কালিম্পং, পশ্চিমবঙ্গ
- যাওয়ার আদর্শ সময়: অক্টোবর থেকে এপ্রিল
আরও পড়ুন- শান্তিনিকেতনই শুধু নয়, ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তালিকায় বাংলার আর কী কী?