দুর্গাপুজোয় থিমের বন্যা আমরা প্রতিবারই দেখি। পুজো কমিটিগুলোর মধ্যে লড়াই চলে কে কাকে টেক্কা দেবে, তা-ই নিয়ে। সেই থিমপুজো এবার দেবী দুর্গার অঙ্গন ছাড়িয়ে বিদ্যার দেবী সরস্বতীর প্রাঙ্গণেও প্রবেশ করেছে। সৌজন্যে কাঁকুড়গাছির শ্রীশ্রী সরস্বতী ও কালীমাতা মন্দির। কাঁকুড়গাছি রেল কেবিনের কাছে গিরীশ বিদ্যারত্ন লেন। সেখানেই বিদ্যার দেবী এবছর থিম পুজোর আবহে দর্শকদের মোহিত করবেন। এই পুজোর থিম 'বঙ্গে বিক্রি বিদ্যা'। বিষয়, রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতি।
Advertisment
ছবি- পার্থ পাল
থিমের মধ্যেই একটা রাজনীতির ছোঁয়া। পুজোর মূল আয়োজক বিশ্বজিৎ সরকার অবশ্য একে থিম বলতে নারাজ। বিশ্বজিতের বক্তব্য, 'একে থিম বলা যাবে না। এটা হল আসলে প্রতিবাদের ভাষা। যে ভাষার শিরোনাম- বঙ্গে বিক্রি বিদ্যা। আমাদের যে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, তাদেরকে পার্থ ও অর্পিতারা অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে। কারণ, কিছু ফেল করা শিক্ষকদের তাঁরা অর্থের বিনিময়ে চাকরি দিয়েছে আর শিক্ষক বানিয়েছে। এই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের থেকে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম দুর্নীতি-চুরি ছাড়া আর কী শিখবে? তাই আমরা চাই যোগ্য চাকরি প্রার্থীরা যেন যোগ্য চাকরি পায় এবং যোগ্য শিক্ষকরা যেন শিক্ষক হয়। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যেন তাঁরা সঠিক শিক্ষা দিতে পারে।'
Advertisment
আর সেই কারণেই বিদ্যার দেবীর পুজোমণ্ডপকে তাঁরা প্রতিবাদ জানানোর স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছেন বলেই জানিয়েছেন বিশ্বজিৎ। তিনি বলেন, 'প্রতিবাদ জানাতে আমরা মণ্ডপে একটা ধর্না মঞ্চ তৈরি করেছি। যাকে সেই শিক্ষকপ্রার্থীদের ধরনামঞ্চ হিসেবে দেখানো হবে। পাশাপাশি, আরেকটি মঞ্চে দেখানো হবে টাকার পাহাড়ে অর্পিতা এবং পার্থ। তাঁরা দেবী সরস্বতীকে বিক্রি করে দিচ্ছে। আর, অন্য একদিকে রাখা হয়েছে একটি খাঁচা। যেখানে বোঝানো হবে যে আমাদের পশ্চিমবঙ্গে দেবী সরস্বতী আজ খাঁচায় বন্দি। বিদ্যা-বুদ্ধি সবই খাঁচায় বন্দি।'
এই পুজোর আয়োজক বিশ্বজিতের অন্যতম পরিচয়, তিনি বিজেপির প্রয়াত নেতা অভিজিৎ সরকারের ভাই। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের দিনই (২ মে) নারকেলডাঙায় খুন হয়েছিলেন বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার। খুন হওয়ার আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ করে খুন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন অভিজিৎ। প্রথমে কলকাতা পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও পরে হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই।