বামদিকে সাংসদ শতাব্দী রায়, মধ্যে মিহিলাল শেখ, ডানদিকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
বিজেপির সঙ্গে সখ্যতা রাখায় বেতন বন্ধ বগটুই-কাণ্ডে স্বজনহারা মিহিলাল শেখের। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে তিনি বেতন পাচ্ছেন না। বিষয়টিতে প্রতিহিংসার রাজনীতি দেখছে বিজেপি।
Advertisment
গত বছরের ২১ মার্চ বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূলের ভাদু শেখকে বোমা মেরে খুন করা হয়েছিল। বদলা নিতে ওই রাতেই বগটুই গ্রামের একাধিক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় ১০ জনের। মিহিলাল শেখের মা, স্ত্রী এবং ১০ বছরের মেয়ে আগুনে পুড়ে মারা যায়। ২৪ মার্চ বগটুই গ্রামে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই দিন ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পাশাপাশি প্রত্যেক পরিবারের সদস্যদের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। সেইমত, গত বছরের ৫ এপ্রিল রামপুরহাট মহকুমা তথ্য-সংস্কৃতি দফতরে অ্যাটেন্ডেন্ট পদে চাকরি পান মিহিলাল শেখ।
এরপর বছর ঘুরতেই মিহিলাল যোগ দেন বিজেপিতে। গ্রামে শহিদ দিবস পালন করেন। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ওই অনুষ্ঠানের পরেই এপ্রিল মাস থেকে বেতন বন্ধ হয়ে যায় মিহিলালের। মিহিলাল বলেন, 'এপ্রিল মাস থেকে আমার বেতন বন্ধ হয়ে যায়। ১০ হাজার টাকা করে পেতাম। সেই টাকাতেই আমার সংসার ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু, বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক রাখায়, সেই বেতন বন্ধ করে আমাকে জব্দ করার দিকে সরকার এগোচ্ছে। আমি বিষয়টি জানিয়ে মহকুমা শাসক, জেলাশাসকের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বেতনের আবেদন জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু, কোনও সাড়া পাইনি। ফলে আমার আর্থিক অনটন শুরু হয়েছে।'
এই প্রসঙ্গে স্থানীয় সাংসদ তৃণমূলের শতাব্দী রায় বলেন, 'বিষয়টি আমার ঝানা নেই। তবে মিহিলাল সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করলেই বেতন পাবেন।' বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা বলেন, 'তৃণমূল প্রতিহিংসার রাজনীতি করে। এই সরকারের হাবভাব এমন, যে রাজ্য সরকারের চাকরি করলে তৃণমূল করতে হবে। না করলেই খাঁড়া নেমে আসবে। যেটা মিহিলালের ক্ষেত্রে হয়েছে।' এনিয়ে মহকুমা শাসককেও ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু, তিনি ফোন তোলেননি।