বামেদের আইন অমান্য কর্মসূচির দিন শহর বর্ধমানের কার্জন গেট চত্বরে এক বৃদ্ধ ফল বিক্রেতার দোকান থেকে লুট হয় কলা। ফুটপাতে বসে ফল বিক্রী করে জীবিকা নির্বাহ করা সেই বৃদ্ধ ফল বিক্রেতা মোনেশ্বর সাউ এর পাশে শনিবার দাঁড়ালেন শাসকদল তৃণমূল।
এদিন দুপুরে নিজের বাগন থেকে তিন কাঁদি কলা কেটে নিয়ে সোজা বর্ধমান শহরের উদ্দেশ্য রওনা দেন পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অপার্থিব ইসলাম। তিনি বৃদ্ধ মোনেশ্বর সাউ এর হাতে দু’কাঁদি কলা তুলে দিয়ে আগামী দিনে পাশে থাকার আশ্বাস দেন। পাশাপাশি একই দিনে বামেদের হামলার শিকার হওয়া বৃদ্ধ ফল
বিক্রেতার প্রতিবেশী ফল বিক্রেতা অভয় সাহার হাতেও এক কাঁদি কলা অপার্থিব তুলে দেন। সহায়তা পেয়ে দুই ফল বিক্রেতাই তৃণমূল নেতৃত্বকে কৃতজ্ঞতা জানান।
আইন আমান্য কর্মসূচির ডাক দিয়ে গত ৩১ আগষ্ট সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের নেতৃত্বে শহর বর্ধমানে পথে নামে বাম কর্মীরা। ওইদিন বিকালে শহরের স্টেশন থেকে ও বড়নীলপুর মোড় থেকে বামেদের দু'টি মিছিল এসে কার্জন গেট চত্বরে জমায়েত হয়। পুলিশের ত্রিস্তরীয় ব্যারিকেড ভেঙে বাম কর্মীরা জেলাশাসকের অফিসের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। তা নিয়ে ধুন্ধুমার বেঁধে যায়। এর পরেই শুরু হয়ে যায় পুলিশকে লক্ষকরে ইঁট পাথর ছোড়া। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ জলকামান ব্যবহার করে। সেই সঙ্গে কাঁদানে গ্যাসের সেলও ফাটানো শুরু করলে কার্জনগেট চত্বর রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। অভিযোগ, সেই সময়ই শুরু হয়ে যায় পুলিশ পেটানো ও পুলিশ গাড়ি ভাঙচুর।
তারই মধ্যে কার্জনগেট চত্বরের ফুটপাতের ফল বিক্রেতা মোনেশ্বর সাউ ও তাঁর প্রতিবেশী ফল ব্যবসায়ী অভয় সাহার দোকানে একদল বাম কর্মী চড়াও হয়। অভিযোগ,ওই সময়ে বাম কর্মীদের মধ্যে কয়েকজন বিক্রির জন্য রাখা কলা হাতের কাছে পেয়ে লুট করে নেয়। বৃদ্ধ ফল ব্যবসায়ী বোনশ্বর সাউ হাত জোড় করে কাকুতি মিনতি করলেও বাম কর্মীরা পাত্তা দেয়ন। একই সময়ে অপর কিছু বাম কর্মী বানেশ্বরের প্রতিবেশী ফল ব্যবসায়ী অভয় সাহার দোকানে ইঁট পাথর ছোড়া শুরু করে। পুরোটা সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই নিন্দার জড় ওঠে। বিষয়টি নিয়ে জেলা সিপিএম নেতৃত্ব কোন মন্তব্য করতে না চাইলেও ঘটনার তীব্রত নিন্দা করে তৃণমূল।
সিপিএমের সেদিনের তাণ্ডবের প্রতিবাদ জানাতে এদিন বর্ধমানের কার্জন গেট চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় তৃণমূলের প্রতিবাদ সভা । সেই প্রতিবাদ সভায় যোগ দিতে আসার সময়ে নিজের বাগান থেকে তিন কাঁদি কলা কেটে নিয়ে আসেন খণ্ডঘোষ ব্লকের তৃণমূল নেতা অপার্থিব ইসলাম। সভা শেষে তিনি সেই কলার কাঁদি গুলি নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দুই ফল ব্যবসায়ীর
কাছে পৌছে যান।
অপার্থিব ইসলাম বলেন, 'কলা লুট না করার জন্য বৃদ্ধ মোনেশ্বর সাউ হাত জোড় করে অনুরোধ করলেও বাম কর্মীরা তার অনুরোধ শোনেনি। এই বিষয়টি টেলিভিশনের খবরে ও ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখে আমি ব্যথিত। তার পরেই ওই বৃদ্ধ ও তাঁর প্রতিবেশী ফল বিক্রেতার পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।'
সিপিএমের জেলা সম্পাদক সৈয়দ হোসেন যদিও তৃণমূল নেতার কলা দান নিয়ে এদিন কোন মন্তব্য করতে চাননি।