তিনি বঙ্গ রাজনীতির 'কালারফুল বয়'। আর, তাঁর বলা প্রশংসাসূচক 'ওহ্! লাভলি' শব্দটা বর্তমানে মদন মিত্রের অন্যতম পরিচিতি হয়ে উঠেছে। নিজের নাম ও পদবির আদ্যক্ষরজুড়ে তিনি নিজেই নিজের নতুন নাম দিয়েছেন, 'এমএম'। রাজনীতিবিদ থেকে সমাজকর্মী, গায়ক থেকে মডেল, অভিনেতা- এতদিন এই সব ভূমিকাতেই দেখা গিয়েছে কামারহাটির বিধায়ককে। এবার প্রথমবার তিনি দুর্গাপুজোর থিম হয়ে অনন্য নজির গড়তে চলেছেন রাজ্য রাজনীতিতে। সৌজন্যে, সোশ্যাল ইনস্টিটিউট অফ ইউথ, লিলুয়া বা লিলুয়া ইউথ সোশ্যাল পুজো কমিটি। এবার তাদের পুজোর থিম, 'ওহ্! লাভলি'।
শিল্পী সেই মিন্টু পাল, যিনি এর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মূর্তি গড়েছেন। তা নিয়ে বিতর্কও হয়েছিল। আবার, জনপ্রিয়তাও পেয়েছিল সেই শিল্পকর্ম। এবার, কুমোরটুলির এই শিল্পীর ওপরই মদন মিত্রের মূর্তি তৈরির ব্যাপারে ভরসা রেখেছেন লিলুয়া ইউথ সোশ্যাল পুজো কমিটির কর্তারা। শিল্পীর কুমোরটুলির স্টুডিওয় সেই মূর্তি তৈরি হচ্ছে। মূর্তি তৈরির প্রাথমিক কাজ প্রায় শেষ। সশরীরে সেই কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে কুমোরটুলি গিয়েছিলেন মদন মিত্র। কাজ খতিয়ে দেখলেন। শিল্পীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে নিজের মূর্তিতে একটু তুলির টানও দিলেন। এই থিমে দেখানো হয়েছে, মদন মিত্র মূর্তির সামনে বসে প্রার্থনা করছেন।
এই প্রসঙ্গে মদন মিত্র বলেন, 'মায়ের পুজো ভালোই হবে। এখানে আমি নিজে মায়ের পুজো করছি। ইয়া দেবি সর্বভূতেষু মাতৃরূপেণ সংস্থিতা, নমোস্তস্যৈ নমোস্তস্যৈ নমোস্তৈস্য নমো নমঃ। ঠাকুরমশাই যখন পুজো করবেন, তখন আমি মদন মিত্র, আমিও হাতে ফুল নিয়ে মায়ের পায়ে একথা বলতে পারব, মাতল রে ভুবন। বাজল তোমার আলোর বেণু। পরবর্তীকালে যেদিন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন, তখন মূর্তিতে কেমন লাগবে সেটাও দেখে গেলাম!' শিল্পী মিন্টু পাল বলেন, 'এখানে যেটা দেখানো হয়েছে, মদনদা মায়ের পুজো করছেন। একজন পুরোহিত হিসেবে মদনদাকে দেখানো হচ্ছে। এজন্য আমি খুশি। লিলুয়ার দুর্গাপুজো কমিটিকে আমি ধন্যবাদ জানাই, এরকম একটা থিম বেছে নেওয়ার জন্য।'
আরও পড়ুন- পথশ্রীর হতশ্রী রূপ! দেখেই চটে লাল জেলাশাসক-বিডিও, বাস্তুকারকে দেদার ধমক
থিম হিসেবে 'ওহ্! লাভলি'কে যাঁরা বেছে নিয়েছেন, সেই লিলুয়া পুজো কমিটির এবার পুজোর বয়স ৩৩ বছর। সদস্যরা জানিয়েছেন, 'আমরা ক্লাবের ছেলেরা দেখলাম যে মদনদা সবসময় জনসাধারণের পাশে থাকেন। তাই আমরা ওঁনাকে সামনে রেখেছি সর্বসাধারণের জন্য আয়োজিত এই পুজোয়।' রাজ্য রাজনীতির কালারফুল বয় মদন মিত্র বরাবরই ঈশ্বরভক্ত। রামঠাকুরের ভক্ত হওয়ার পাশাপাশি দেবী আরাধনা তাঁর রোজনামচার মধ্যেই পড়ে। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন পুজো কমিটির উদ্যোক্তা। নিজের এলাকা ভবানীপুরের কাঁসারিপাড়ার পুজো তো বটেই পাশাপাশি তাঁর বিধানসভা কেন্দ্র বেলঘরিয়ার বিভিন্ন পুজো এবং রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গার পুজোর তিনিই প্রধান কর্তা। তাঁর সেই মাতৃ আরাধনাই যেন এবার মূর্তি আকারে নতুন স্বীকৃতি পেতে চলেছে।