মঙ্গলবার সংখ্যাটা ছিল ৯ হাজারের একটু বেশি। একদিনে রাজ্যে ফের বাড়ল আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত ১৪ হাজার ২২ জন। যা গতকালের থেকে প্রায় ৫৫ শতাংশ বেশি। সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৪৩৮ জন। আক্রান্তের সংখ্যা সুস্থতার তুলনায় অনেকটাই বেশি। যার ফলে বাড়ল অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা।
স্বাস্থ্য দপ্তরের বুলেটিন অনুযায়ী, রাজ্যে করোনার সক্রিয় রোগীর সংখ্যা বেড়ে হল ৩৩ হাজার ৪২। একদিনে যা বাড়ল সাড়ে সাত হাজারেরও বেশি। অন্যদিকে, একদিনে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় টেস্টের সংখ্যাও। রাজ্যজুড়ে টেস্ট হয়েছে ৬০ হাজার ৫১১ জনের। মঙ্গলবার যেখানে পজিটিভিটি রেট ছিল ১৯ শতাংশ, সেটাই বেড়ে আজ ২৩.১৭ শতাংশ।আক্রান্তের নিরিখে প্রথমে কলকাতা। শহরে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ১৭০ জন।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, দেশের মধ্যে কলকাতাতেই সবচেয়ে বেশি পজিটিভিটি রেট। এই শহরে পজিটিভিটি রেট ৪৪.৫ শতাংশ। কলকাতায় একলাফে কনটেইনমেন্ট জোনের সংখ্যা বেড়ে হল দ্বিগুণ। ২৫ থেকে ৪৮ হল শহরের কনটেইনমেন্ট জোন।
শুধু কলকাতাই নয়। সারা দেশে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। সেলেব থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ করোনার প্রকোপ থেকে রেহাই মিলছে না। ইতিমধ্যেই বলিউড থেকে শুরু করে টলিউড একাধিক তারকা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন একাধিক ডাক্তার, নার্্ স্বাস্থ্য কর্মী। কলকাতা পুলিশ, রাজ্য পুলিশেও থাবা বসিয়েছে করোনা। এর মাঝে সাবধানবানী শুনিয়েছেন চিকিৎসকরা। আরও সাবধানে থাকতে হবে আগামী দুই সপ্তাহ। চিকিৎসক মহলের আশঙ্কা জানুয়ারি শেষ অথবা ফেব্রুয়ারি শুরু সংক্রমণ পৌঁছাতে পারে শিখরে।
বিশিষ্ট ভাইরোলজিষ্ট ডাক্তার অমিতাভ নন্দীর কথায়, “যে হারে সংক্রমণ বেড়ে চলেছে তা রীতিমত উদ্বেগের। অনেকে একাধিক বার করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন, এপ্রসঙ্গে তিনি টিকার কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন”।
অন্যদিকে বিশিষ্ট চিকিৎসক পুন্যব্রত গুঁই জানাচ্ছেন, “একের পর এক ডাক্তার স্বাস্থ্য কর্মী করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, এমন অবস্থায় চিকিৎসা পরিকাঠামো সচল রাখা এক বড় প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে। অন্যদিকে তিনি এখনও একশ্রেণীর মানুষের অসচেতনতার তীব্র সমালোচনা করেছেন”।
বিশিষ্ট চিকিৎসক মানস গুমটা জানাচ্ছেন, “এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলেই বিপদ। এত বেশি সংখ্যক রোগী করোনায় আক্রান্ত হলে এর পর হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাটা বাড়বে, বাড়বে মৃত্যুর সংখ্যাও। হাসপাতালগুলিতে বেডের আকাল দেখা দিতে পারে তিনি মনে করছেন, সেই সঙ্গে তিনি একাধিক ডাক্তার স্বাস্থ্য কর্মী করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন”। তাঁর কথায়, “আগামী দু’সপ্তাহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সকলকেই সাবধানে থাকতে হবে”। এর মধ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে কলকাতা। রাজ্যের মোট করোনায় আক্রান্তের প্রায় অর্ধেকই কলকাতার বাসিন্দা।