Premium: নতুন সুযোগে বদলেছে জীবনের মানে, 'ব্রাত্য'দের নিয়েই গড়ে উঠেছে এই 'স্পেশ্যাল' ক্যাফে
উইকেন্ডের ডেস্টিনেশন মানেই বাঙালির কাছে কোন এক ক্যাফেতে নিজের প্রিয় মানুষের সঙ্গে কিছুটা একান্তে কিছুটা সময় কাটানো, আড্ডা, গল্প-খাওয়া দাওয়া আরও কত কী! বাঙালির সেই সাধপূরণে এবার অনন্য উদ্যোগ কলকাতার এক ক্যাফের।
Kolkata cafe: উইকেন্ডের ডেস্টিনেশন মানেই বাঙালির কাছে কোন এক ক্যাফেতে নিজের প্রিয় মানুষের সঙ্গে কিছুটা একান্তে কিছুটা সময় কাটানো, আড্ডা, গল্প-খাওয়া দাওয়া আরও কত কী! বাঙালির সেই সাধপূরণে এবার অনন্য উদ্যোগ কলকাতার এক ক্যাফের।
Advertisment
একটা সময় সমাজ যাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। যাদের দ্বারা কিছুই হবে না বলেই মনে করেছিল সমাজের একটা বড় অংশ। এবার সমাজের গালে 'চড়' মেরে সেই বিশেষভাবে সক্ষমরাই চালাচ্ছেন 'আস্ত' একটা ক্যাফে। শুনে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। তারা কেউ সেরিব্রাল পালসি, কেউবা অটিজিমে আক্রান্ত।
সমাজের এই 'ব্রাত্য'দের নিয়েই দমদমের হনুমান মন্দিরের ঠিক উল্টোদিকে চালু হয়েছে ‘দ্য অপারচুনিটি ক্যাফে’। শহর জুড়ে যখন ফুড ভ্লগারদের রমরমা তার মাঝে এই ক্যাফে কিন্তু আক্ষরিক অর্থে সত্যিই 'স্পেশ্যাল'।
ক্যাফের বয়স মেরেকেটে ৫ মাস। তার মধ্যেই সকলের নজর কেড়েছে এমন এক 'ইউনিক' ক্যাফে। ১৬ জনকে নিয়েই হইহই করে চলছে এই ক্যাফে। তাদের কেউ সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত। কেউ আবার অটিজিমে আক্রান্ত। আবার কেউ পাচার হয়ে গিয়েছিল। উদ্ধার করে ফিরিয়ে আনা হয়েছে সমাজের মূল স্রোতে। কাউকে আবার উদ্ধার করা হয়েছে যৌনপল্লী থেকে।
ক্যাফের কর্ণধার সুমন্ত সিংহ রায় বলেছেন, 'গত বছর ১৬ অগাস্ট আমরা প্রথম এই বাচ্চাদের নিয়ে ট্রেনিং শুরু করি। ৬ মাস ট্রেনিং শেষে ২৩ জানুয়ারি ২০২৪-এই ক্যাফের উদ্বোধন হন। আমার প্ল্যানিং এই বছর ১৬ অগাস্ট আমি আমার দ্বিতীয় ব্যচ শুরু করব। যাদের ট্রেনিং দেবে এই বাচ্চারাই। তাদের এই ব্রাঞ্চেই নিয়োগ করা হবে। আমাদের পরবর্তী উদ্দেশ্য বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে এমনকী দেশের নানান শহরের এই ক্যাফের ব্রাঞ্চ ছড়িয়ে দেওয়া যেখানে প্রতিটি ক্যাফেতে কাজ করবে সমাজের ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া বাচ্চারা। আর সমাজকে আঙুল তুলে বলবে, হ্যাঁ আমরাও পারি'।
বিশেষ ভাবে সক্ষম কর্মীদের কথা মাথায় রেখে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ক্যাফের তরফে। রান্নাঘরে নেই গ্যাস। নেই কোন কাঁচের গ্লাস। সারাদিনের পরিশ্রমের পর ওরা সকলেই পায় এক নিশ্চিন্ত আশ্রয়। ক্যাফের ঠিক উপরেই ওদের জন্য থাকার ঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রথম বেতন পেয়ে কেউ বাবাকে মোবাইল কিনে দিয়েছে। কেউ আবার মাকে একটা দামি শাড়ি গিফট করেছে। কেউ'বা বন্ধুর সঙ্গে গিয়ে বিরিয়ানি খেয়েছে। শহরের বুকে এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ ।