এবছর অনুকূল আবহাওয়ার কারণে লিচু উৎপাদনের ব্যাপক লাভের আশা দেখছেন চাষিরা। ইতিমধ্যে রোগ পোকার আক্রমণ থেকে লিচুকে বাঁচানো এবং ফলের পরিপূর্ণতা পাওয়ার ক্ষেত্রেও চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছে উদ্যানপালন দপ্তর।
গত বছরের তুলনায় এবছর মালদায় লিচুর উৎপাদনের মাত্রা বাড়ারও আশা করছে জেলা উদ্যানপালন দপ্তর। পাশাপাশি লিচু চাষের ক্ষেত্রে জমির মাত্রা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। লিচু চাষের ক্ষেত্রে রাসায়নিক সার বাদ দিয়ে জৈব পদ্ধতিতেও চাষিরা যাতে জোর দেয়, সেদিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে।
মালদা জেলা উদ্যানপালন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ১হাজার ৫৩৩ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়ে থাকে। মূলত কালিয়াচক ১,২,৩ ব্লক এবং রতুয়া ১ ও ২ ব্লকে লিচু চাষের জমির পরিমাণের মাত্রা বেশি । গত বছর ১৮ হাজার মেট্রিক টন লিচু উৎপাদন হয়েছিল মালদায়। এবারে অনুকূল আবহাওয়া থাকার কারণে লিচু চাষের উৎপাদনের মাত্রা অনেকটাই বাড়তে পারে বলেও মনে করছ সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
লিচু উৎপাদনের ক্ষেত্রে রোগ পোকার আক্রমণ ঠেকাতেও ইতিমধ্যেচাষিদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেওয়া শুরু হয়েছে। কালিয়াচক ১ ব্লকের আলিপুর এলাকার লিচু চাষি মইনুদ্দিন শেখ বলেন, 'এখনো পর্যন্ত গাছে লিচুর ফলন ভালোই হয়েছে। কিন্তু কখনো দেখা যায় ফলের খোসা ফেটে যাচ্ছে। লিচুর গাছ থেকে পাড়ার সময় এই সমস্যা হওয়ায় অনেকটা ক্ষতি হচ্ছে'।
যদিও এখন ২০ থেকে ২৫ দিন বাকি মালদার লিচু বাজারে আসতে। তার আগে যাতে রোগ পোকা না হয় সে নিয়েও লিচু চাষরা রীতিমতো দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। মালদা জেলা উদ্যানপালন দপ্তরের আধিকারিক সামন্ত লায়েক জানিয়েছেন, 'বর্তমান পরিস্থিতিতে লিচু ফলনে পরিপূর্ণতা পাওয়ার ক্ষেত্রে এবং ফলের খোসা যাতে না ফেটে যায় সে ব্যাপারেও "বোরণ" জাতীয় এক প্রকার ওষুধ চাষিরা গাছের স্প্রে করতে পারে। প্রতি এক লিটারে ৩ গ্রাম এই ওষুধ পরিষ্কার জলে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। তাহলে লিচুর খোসায় ফাটলের সম্ভাবনা থাকবে না। এছাড়াও মার্চ মাস থেকে যখন গাছে লিচু ধরতে শুরু করে সেই সময় রোগ পোকার নিধনের ক্ষেত্রে রাসায়নিক ওষুধ বাদ দিয়ে নিম অয়েল জাতীয় এক ধরনের ওষুধ স্প্রে করলে লিচু গাছের রোগ পোকার সম্ভাবনা থাকে না'।
তবে এবছর গতবারের তুলনায় লিচুর ফলনের ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। যাতে করে চাষিরা অনেকটাই লাভবান হতে পারবেন।