কাশ্মীরে কাজ করতে গিয়ে মুর্শিদাবাদের ৫ শ্রমিককে জঙ্গিদের হাতে খুন হতে হয়েছে। এরইমধ্যে আবার হাওড়ায় এক বিধায়ককে জঙ্গিদের নাম করে হুমকি দেওয়া হল ফোনে। "দশ লক্ষ টাকা দাও, না হলে খুন করে দেব", দক্ষিণ হাওড়ার বিধায়ক ব্রজমোহন মজুমদারকে টেলিফোনে এক জঙ্গি গোষ্ঠীর নাম করে এমন হুমকিই দেওয়া হয়েছে। আর এই হুমকির জেরেই রাতারাতি বাড়ল বিধায়কের নিরাপত্তার বহর। এই মুহূর্তে তাঁর বাড়ির সামনে বসেছে পুলিশ পিকেট।
আরও পড়ুন: বাম আমলে চাপে থাকা আরএসএস কি তৃণমূল আমলে রমরমিয়ে বাড়ছে?
জানা যাচ্ছে, ২৯শে অক্টোবর ভাই ফোঁটার দিন সকালে আসে এই হুমকি ফোন। ভাঙা হিন্দিতে ওই বিধায়কের কাছে ১০লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। টাকা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে নিজেকে এক জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্য বলে দাবি করা হয় বলে জানিয়েছেন ব্রজমোহনবাবুর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক রক্ষী। দক্ষিণ হাওড়ার বিধায়ক তথা জাতীয় শিক্ষক সম্মানে সম্মানিত ব্রজমোহন মজুমদার বলেন, "সকাল ১০টা নাগাদ আমার কাছে একটি ফোন আসে। কিন্তু অপরপক্ষের কথা কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।" এরপর আরও দু'বার ফোন আসে। সেই ফোনকলগুলো ধরেন বিধায়কের নিরাপত্তা রক্ষীরা।
হাওড়া দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক ব্রজমোহন মজুমদার। ছবি- অরিন্দম বসু
এক নিরাপত্তারক্ষী জানান, ওই ফোনেই দশ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। টাকা না দিলে খুন করার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। নিজেকে জঙ্গি বলে পরিচয় দেয় ওই ফোনের অন্য প্রান্তে থাকা ব্যক্তি। এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিধায়ক ব্রজমোহন মজুমদার বলেন, "আমি ভয় পাইনি। যারা নিজেদের পরিচয় লুকিয়ে ফোন করে, তারা সাধারণত বেসলেস হয়। দলমত নির্বিশেষে সবাই জানে, আমি অহিংস রাজনীতি করি, কারও সঙ্গে আমার বৈরিতা নেই। তবে যেই ফোন করুক, তার ভাষাজ্ঞান নেই, তাকে ভাষার ব্যবহার শিখতে হবে"।
আরও পড়ুন: রাজস্থান-গুজরাটে মারা গেলে মুসলমান, আর কাশ্মীরে হলে বাঙালি: দিলীপ ঘোষ
হাওড়ার নগরপাল গৌরব শর্মা জানান, একটি বিশেষ ধরনের আধুনিক সফটওয়্যার ব্যবহার করে এ ক্ষেত্রে কল আইডি লুকানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। বেশ কিছু সূত্র পাওয়া গিয়েছে বলেও জানান তিনি। হাওড়ার তৃণমূল সভাপতি (সদর) তথা রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় জানান, খুবই ন্যক্কারজনক ঘটনা। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। অপরাধীদের কড়া শাস্তির দাবি করেন তিনি।
ওই হুমকি ফোনের জেরে ইতিমধ্যেই ওই বিধায়কের বাড়ির সামনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তার কারণে হাওড়ার চ্যাটার্জিহাট থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন বিধায়ক। ইতিমধ্যে তাঁর বাড়ির সামনে বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট। বিধায়ককে চলাফেরায় সাবধানতা অবলম্বন করতেও বলা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।