সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতাল শুধু নয়, এবার করোনা চিকিৎসায় এ রাজ্যে যুক্ত করা হলো বেশ কিছু নামীদামি বেসরকারি হোটেলকেও। সেখানে অর্থের বিনিময়ে কোয়ারান্টাইন-এ থাকা যাবে। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, তালিকাভুক্ত হোটেলগুলিকে ব্যবহার করা যাবে কোয়ারান্টাইন সেন্টার হিসেবে। এখনও পর্যন্ত যে তালিকা প্রকাশ পেয়েছে তাতে দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ হোটেলই কলকাতা সংলগ্ন। এদের মধ্যে চার তারা ও তিন তারা হোটেলও রয়েছে। আপাতত ত্রিশটি হোটেলকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। আরও হোটেলকে এই তালিকায় যুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।
লকডাউনের ফলে অন্য ব্যবসা-বাণিজ্যের মতো হোটেল ব্যবসাও মুখ থুবড়ে পড়েছে। কর্মীদের বেতন কী করে দেবেন, তা ভেবেই মাথায় হাত পড়েছে হোটেল ও লজ মালিকদের। লকডাউন ওঠার পরও এই ব্যবসা দাঁড় করাতে অনেকটা সময় চলে যাবে বলে তাঁদের ধারণা। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর ৩০টি হোটেলকে তালিকাভুক্ত করেছে। করোনা মোকাবিলায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টাইন সেন্টার হিসেবে ওই হোটেলগুলি ব্যবহার করা হবে।
আরও পড়ুন: করোনায় বাংলার কোন এলাকা রেড জোনে এখন, জানালেন মুখ্য়সচিব
জানা গিয়েছে, আপাতত ৩০টি হোটেলের ৫৩৯টি ঘর বরাদ্দ করা হয়েছে। এই সমস্ত হোটেল কলকাতা, নিউটাউন, মুকুটমণিপুর, হাওড়ার বাউড়িয়া ও শিলিগুড়িতে অবস্থিত। এক হোটেলের কর্তা নানক দে বলেন, "একটা রুমে একজনই থাকতে পারবেন। তবে এখনও পর্যন্ত আমার হোটেলে কেউ আসেন নি। আমাদের ১০টি রুম রয়েছে। তবে হোটেল কর্তৃপক্ষ চাইলেই রুম দিতে পারবেন না। স্থানীয় প্রশাসন অনুমতি দিলে তখনই আমরা কাউকে থাকতে দেব। হোটেল তো এমনিতেই বন্ধ রয়েছে।" তাঁর আক্ষেপ, "আমাদের এই ব্যবসা একেবারে শেষ।"
সূত্রের খবর, 'পে অ্যান্ড ইউজ' ভিত্তিতে এই রুমগুলি মিলবে। তালিকা অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, সর্বোচ্চ ৭ হাজার টাকার সঙ্গে জিএসটি চার্জ রয়েছে। থাকছে ৪,৫০০ টাকার রুমও। এছাড়া অপেক্ষাকৃত কম দামের ১,৮০০ টাকার ঘরও থাকছে।
দেশ তথা রাজ্যে হুহু করে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা আক্রান্তদের সঙ্গে সংস্পর্শে আসা মানুষের সংখ্যাও। ইতিমধ্যে হাজার হাজার মানুষ কোয়ারান্টাইন-এ আছেন। সরকারি স্তরে যেমন কোয়ারান্টাইন সেন্টারে রয়েছেন অনেকে, তেমনি হাজার হাজার মানুষ হোম কোয়ারান্টাইন-এও আছেন। এবার অর্থের বিনিময়ে 'হোটেল কেয়ারান্টাইন'-এর ব্যবস্থা করতে চলেছে স্বাস্থ্য দপ্তর। কে বলতে পারে, এর ফলে এই দুঃসময়ে হোটেল ব্যবসার কিছুটা উপকার হলেও হতে পারে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন