ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী অর্থাৎ বিএসএফের চোখে ধুলো দিয়ে ফুলবাড়ি বাণিজ্য সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়লেন তিন যুবক। ঘটনার পর সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অভিযোগ, পন্যবাহী লরির আড়ালে বাইক নিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে যান তিন যুবক। অভিযুক্তরা হলেন জামাল উদ্দিন, আমিরুল ইসলাম, মোরতাজ আলম। এদের মধ্যে জামাল উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়ার বাসিন্দা। বাকি দুজন দার্জিলিং জেলার ফাঁসিদেওয়া ব্লকের বাসিন্দা।
অভিযুক্তরা বাংলাদেশে ঢুকতেই তাঁদের তাড়া করে বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশ বা বিজিবি। খবর দেওয়া হয় বাংলাদেশের তেঁতুলিয়া থানায়। খবর পেয়েই তেঁতুলিয়া থানার পুলিশ ওই তিনজনকে আটক করে। এরপর তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় থানায়, সেখান থেকে পঞ্চগড়ে বিজিবি-র সদর দপ্তরে। দিনভর বিজিবির সদর দপ্তরে জিজ্ঞাসাবাদের পর বিএসএফের সঙ্গে আলোচনায় বসে বিজিবি। এরপর রাত দশটা নাগাদ অভিযুক্তদের বিএসএফের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তারাই আপাতত জিজ্ঞাসাবাদ করছে তিনজনকে।
জানা গিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের পর অভিযুক্তদের নিউ জলপাইগুড়ি থানার হাতে তুলে দেওয়া হবে। যদিও বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি বিএসএফ কর্তারা। পুলিশকেও কিছুই এখনো জানানো হয়নি বলে জানিয়েছেন ডেপুটি পুলিশ কমিশনার জোন (১) গৌরব লাল।
ফাঁসিদেওয়ার বাসিন্দা আমিরুল দিল্লিতে শ্রমিকের কাজ করেন। সোমবারই বাড়ি ফিরেছিলেন তিনি। মঙ্গলবার আত্মীয়র বাড়ি যাওয়ার জন্য বের হন, সঙ্গে দুই বন্ধু। অভিযোগ, মঙ্গলবার সকালেই ফুলবাড়ি সীমান্তে ঘোরাঘুরি শুরু করেন ওই তিনজন। হঠাৎ দুপুর একটা নাগাদ একটি লরির আড়ালে বাইক নিয়ে দ্রুতগতিতে বাংলাদেশের দিকে রওয়ানা দেন তাঁরা। বিষয়টি বিএসএফ কর্মীরা লক্ষ্য করেই তাঁদের পিছু নেন। কিন্তু বাংলাদেশে ঢুকে পড়ায় বিএসএফ খালি হাতে ফেরে।
এরপরই বিএসএফের তরফ থেকে বিজিবিকে পুরো বিষয়টি জানানো হয়। বিজিবি তেঁতুলিয়া থানাকে খবর দেয়। পাশাপাশি অভিযুক্তদের পিছনেও ধাওয়া করে। খবর পেয়ে তেঁতুলিয়া থানার পুলিশ অভিযুক্তদের আটক করে।
জেরায় অভিযুক্তরা জানিয়েছেন, তাঁরা "পথ ভুলে" বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছিলেন। আগামীতে এমনটা হবে না। এদিকে খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছন আমিরুলের পরিজনেরা। তাঁরাও দাবি করেন, পথ ভুলেই সীমান্ত পার করে ফেলেন ওই তিনজন, এবং প্রশাসনের কাছে তাঁদের নিঃশর্ত মুক্তির আবেদন জানান। আমিরুলের ভাই ওসমান গনি বলেন, "সোমবারই দিল্লি থেকে ফিরেছে দাদা। ওখানেই কাজ করে সে। আজ আমাদের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পথ ভুলে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। প্রশাসনের কাছে আর্জি, ওদের ছেড়ে দেওয়া হোক।"