ইয়াস পরবর্তী পর্বে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস ছিল। সেই মোতাবেক বৃহস্পতিবার মধ্য রাত থেকে গাঙ্গেয় বঙ্গ, রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল এবং মধ্য বঙ্গে দফায় দফায় বৃষ্টিপাত। জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ায় বাজ পড়ে ২ কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর জখম আরও ৫ জন। এদিন বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। রমনার বিলের ধারে বসেছিলেন কয়েকজন। সেই সময় বৃষ্টি শুরু হওয়ায় তাঁরা গাছের তলায় আশ্রয় নেন। বাজ পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ১৫ ও ১৭ বছরের দুই কিশোরের। বজ্রাঘাতে আহতদের মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
এদিকে, নন্দীগ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। নদিয়ার নাকাশিপাড়ায় বাজ পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের শক্তি ক্ষয় হয়েছে। নিম্নচাপে পরিণত হয়ে ঝাড়খণ্ডে ইয়াস। তার জেরে সকাল থেকেই কলকাতা ও জেলার বিভিন্ন অংশে শুরু হয়েছে দফায় দফায় বৃষ্টি। জল জমেছে কালীঘাটের বিভিন্ন অংশে। কালীঘাটের মন্দিরের দরজা পর্যন্ত জল উঠেছে। ভরা কোটালের কারণে লকগেট বন্ধ ছিল বিকেল ৪টে পর্যন্ত। এই সময়ে বৃষ্টি চললে জল জমার আশঙ্কা করছে পুরসভা। জানানো হয়েছে, ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিমি বেগে বইতে পারে দমকা হাওয়া। কটালের কারণে জল বাড়ছে গঙ্গাতেও। অপরদিকে, এদিন হাবড়া অশোকনগরে টর্নেডোর প্রভাব অনুভূত করেছেন স্থানীয়রা।
ইয়াসের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বাংলা ও ওড়িশার বিভিন্ন জেলায়। শুক্রবার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আগামীকাল তিনি প্রথমে ওড়িশার ভুবনেশ্বরে যাবেন। সেখানে একটি রিভিউ মিটিং করবেন। এরপর তিনি ওড়িশার বালেশ্বর ও ভদ্রক এবং রাজ্যের পূর্ব মেদিনীপুরের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা আকাশপথে পরিদর্শন করবেন। কলাইকুন্ডায় বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে।
নির্ধারিত সময়ের আগেই ওড়িশার বালেশ্বরের দক্ষিণ দিকে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। বুধবার সকাল সোয়া ৯টা নাগাদ শুরু হয় ল্যান্ডফল। প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে চলে এই প্রক্রিয়া। দুপুর ১টা ৯ মিনিটে এই প্রক্রিয়া শেষ হয়। এরমধ্যে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা লন্ডভন্ড করে দেয় ইয়াস এবং তার লেজের ঝাপটা।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুর। বিভিন্ন নদীতে জলস্তর বাড়ায় ভেঙে গিয়েছে নদীবাঁধ। নামখানায় হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদীর বাঁধ ভেঙে গ্রামে ঢুকছে জল।