বিতর্কের শুরু কয়েক মাস আগেই। তবে তৃণমূলে প্রবীণ-নবীন বিতর্ক চরমে পৌঁছেছে দলেরই প্রতিষ্ঠা দিবসে। এই ইস্যুতে সোমবার দিনভর কথার ফুলঝুরি ছুটিয়েছেন জোড়-ফুলের যুযুধান দুই শিবিরের নেতারা। যা মঙ্গলবারও জারি রইল। এদিন সকালে তৃণমূলের প্রবীণ গোষ্ঠীর বলে পরিচিত শিলিগুড়ির গৌতম দেব বিতর্কে ঘি ঢালেন। বিকেলে অভিষেকের নেতৃত্বের সমর্থনে আসরে নামেন বরানগরের বিধায়ক তাপস রায়।
কী বললেন তাপস রায়?
দিন কয়েক আগে সাংগঠনিক কাজে ফের সক্রিয় হওয়ার আর্জি জানিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গিয়েছিলেন তৃণমূলের নবীন গোষ্ঠীবেশ কয়েকজন নেতা। এঁদের মধ্যে তাপস রায়ও ছিলেন বলে খবর। তৃণমূলের প্রবীণ নবীন বিতর্ক নিয়ে এ দিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তাপস বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি দলের মুখ। সমস্ত সিনিয়র এবং জুনিয়র নেতারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ দেখে টিএমসিতে এসেছিলেন। তিনি আমাদের প্রাণের নেত্রী। এর পরেও আমি অবশ্যই বলব, আজকের প্রেক্ষাপটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব অনিবার্য৷ আমরা দেখতে চাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আমরা কীভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করব।'
আরও পড়ুন- ‘অভিষেক গুরুত্বপূর্ণ, তবে মমতার সঙ্গে তুলনা চলে না’, সাফ কথা বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতার
তৃণমূলে সুদীপ-তাপস বিবাদ প্রসিদ্ধ। ২০২২ সালের পুজোর পর বিজেপি নেতাদের সঙ্গে উত্তর কলকাতার সাংসদের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে বাকযুদ্ধে জড়িয়েছিলেন তৃণমূলের এই দুই সাংসদ-বিধায়ক। এরপর অবশ্য দলীয় কর্মসূচী ছাড়াও নানা অনুষ্ঠানে তাঁদের বেশ কয়েকবার একসঙ্গে দেখা গিয়েছে। কিন্তু, সম্পর্কের দূরত্ব কমেছিল কিনা তা নিয়ে জল্পনা ছিল। এদিন সুদীপকে ফের বিঁধেছেন তাপস।
গতকাল কী বলেছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়?
'মমতা না থাকলে বাংলা ছাগলের তৃতীয় সন্তান হয়ে যেত। দেশের রাজনীতিতে মমতা আছেন বলেই বাংলা আলোচনায় রয়েছে।'
পাল্টা কী বললেন তাপস?
'সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো সর্বভারতীয় স্তরের একজন অত বড় নেতা থাকতে বাংলা ছাগলের তৃতীয় সন্তান হবে কেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না থাকলে মানে কী! বালাই ষাট। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এ সব কথা মুখে আনছেন কী করে! উনি তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চেয়ে দশ বারো বছরের বড়।'
অতীত স্মরণ করিয়ে তৃণমূল বিধায়কের সংযোজন, 'দেখে ভাল লাগছে যে ওনার (সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়) বিলম্বিত বোধদয় হয়েছে। ৬ বছরের জন্য উনি ওনার স্ত্রীকে নিয়ে তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে গিয়েছিলেন। তখন বলেছিলেন, তৃণমূল পার্টিটা ছ’মাসও টিকবে না। সেই সময়ে তিনি আর কী কী বলেছিলেন, অনেকেরই মনে আছে। তার পর ফের সুড়় সুড় করে ফিরে এসেছেন।'
আরও পড়ুন- মরিয়া শুভেন্দু, এবার আগেভাগেই গেলেন আদালতে