বিধানসভার চলচি অধিবেশনে চমকের পর চমক। গত শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী আচকাই ডেকেছিলেন বিরোধী দলনেতাকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে গিয়ে দেখা করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার ফের এক নজিরবিহীন ঘটনা ঘটল। শাসক তৃণমূলের আনা প্রস্তাবকে সমর্থন করল বিজেপি!
ঠিক কী হয়েছে?
নদী ভাঙন এ রাজ্যের অন্যতম বড় সমস্যা। দিন কয়েক আগেই এই বিষয়ে স্থায়ী সমাধান চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন। ভাঙন রোধে কেন্দ্রের সব পদক্ষেপই 'লোক দেখানো' বলে তোপ দেগেছিলেন মমতা। পাল্টা নবান্নের দাবি ফুৎকারে উড়িয়েছিল পদ্ম শিবির। যা জারি রয়েছে। সম্প্রতি আলিপুরদুয়ারে নদী ভাঙন নিয়ে বিজেপি জনপ্রতিনিধিদের ঘাড়ে দায় চাপান রাজ্যের সেচ মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। তাঁর অভিযোগ, বিজেপির বিধায়করা মানুষকে মেরে সমর্থন আদায় করতে চান। নদী ভাঙন নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেন না। পাল্টা আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের দাবি, ডুয়ার্স এবং আলিপুরদুয়ারের নদী ভাঙন সমস্যার কথা তুলে ধরা হলেও রাজ্য সরকার কর্ণপাত করে না। ভারত-ভুটান যৌথ নদী কমিশন গঠনেও উদ্যোগী নয় নবান্ন।
এইসব আকছাআকছির মধ্যেই মঙ্গলবার বিধানসভায় নদী ভাঙন ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল পাঠানোর প্রস্তাব পেশ করেন রাজ্যের পরিষদীয় ও কৃষি মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। সেই প্রস্তাবে সম্মতি দেন বিজেপির পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা। অর্থাৎ, নদী ভাঙন ইস্যুতে পদক্ষেপের জন্য এ রাজ্যের শাসক ও বিরোধী বিধায়করা এক সঙ্গে এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে দাবি জানাবেন।
কারা কারা হচ্ছেন সর্বদল প্রতিনিধি?
সর্বদল প্রতিনিধি দলে শাসক তৃণমূলের কারা কারা থাকবেন তা নির্ধারণের জন্য অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের উপরই ছেড়েছেন। বিরোধী দলের প্রতিনিধিত্বের বিষয়টি মনোজ টিগ্গা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে জানাবেন।
আরও পড়ুন- চটে লাল মমতা, কড়া কথা শুনিয়ে মঞ্চে ভাষণের মাঝেই বসলেন! তারপর?
শাসক বিরোধী প্রবল দ্বন্দ্বের মধ্যেই প্রথমে মমতা শুভেন্দুদের বৈঠক, তারপর রাজ্যের সমস্যা সমাধানের দাবিতে তৃণমূলের প্রস্তাবে বিজেপির সমর্থন যারপরনাই বাংলার রাজনীতিতে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।