হাতে গোনা আর কয়েকটা দিন বাদেই এই রাজ্যে হবে পঞ্চায়েত ভোট। তারই মধ্যে অব্যাহত রয়েছে বোমা, গুলি, আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধারের ঘটনা। এবার সেই তালিকায় নাম জড়াল পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার এক তৃণমূল প্রার্থীর। বাড়িতে বোমার মশলা ও বোমা বাঁধার সরঞ্জাম মজুত করার অভিযোগে পুলিশ সোমবার রাতে কাটোয়ার গুসুম্বো গ্রামের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী স্বপ্না দাসের স্বামী মিঠুন দাসকে গ্রেফতার করেছে।
মঙ্গলবার ধৃতকে কাটোয়া মহকুমা আদালতে পেশ করে পুলিশ নিজেদের হেপাজতে নিয়েছে। যদিও ধৃত মিঠুনের দাবি, বাড়িতে মজুত থাকা তাঁর মাছ চাষের সরঞ্জামকে বোমা তৈরির উপকরণ ভেবে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে। তবে বিরোধীরা এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে তৃণমূলকে বিঁধেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বপ্না দাস কাটোয়ার আলমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৩৮ নম্বর সংসদের তৃণমূল প্রার্থী। পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পর থেকেই পুলিশ এলাকায় এলাকায় রুটমার্চের পাশাপাশি তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে। সোমবারেও তার কোনও ব্যতিক্রম ঘটেনি। ওই দিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত কাটোয়া থানার পুলিশ মুলটি, নতুনগ্রাম, গুসুম্বা প্রভৃতি গ্রামে রুটমার্চের পাশাপাশি তল্লাশি চালায়। ওই সময়েই পুলিশ গোপন সূত্রে স্বপ্না দাসের বাড়িতে বোমার মশলা ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম মজুত থাকার খবর পায়। সেই খবর পেয়েই পুলিশ স্বপ্না দাসের বাড়িতে যায়।
আরও পড়ুন- পায়ে-কোমরে চোট, SSKM-এ মুখ্যমন্ত্রী
তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ বেশ কিছু পরিমাণ বোমার মশলা, বোমা বাঁধার জন্য পেরেক, পাথরের কুচি, সুতলি দড়ি প্রভৃতি উদ্ধার করে বলে দাবি। সেগুলি বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি পুলিশ তৃণমূল প্রার্থী স্বপ্না দাসের স্বামী মিঠুন দাসকে গ্রেফতারও করে। পুলিশের ধারণা বোমা তৈরির আরও বেশ কিছু পরিমাণ মশলা মিঠুন দাসের বাড়িতে ছিল। পুলিশ আসার খবর পেয়ে সেগুলি সে সরিয়ে ফেলেছে।
মিঠুন দাস যদিও দাবি করেন, পুলিশ মিথ্যা মামলায় তাঁকে ফাঁসিয়েছে। তিনি বলেন, 'আমি মাছ চাষ করি । মাছের খাবার-সহ মাছ চাষের বিভিন্ন উপকরণকে পুলিশ বোমা তৈরির মশলা ও সরঞ্জাম ধরে নিয়ে আমাকে গ্রেফতার করেছে।' একই ভাবে স্বপ্না দাসও দাবি করেছেন, তাঁর স্বামীকে ফাঁসানো হয়েছে। কিন্তু মিঠুনের এই দাবি মানতে চাননি তৃণমূল প্রার্থী স্বপ্না দাসের বিরুদ্ধে সিপিএমের প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা রীনা দাস। তাঁর অভিযোগ, “শাসকদলের লোকজন ভোট লুঠের উদ্দেশ্যে এলাকায় যে বোমা জড়ো করছিল, এটা তারই প্রমাণ।”
এবিষয়ে জেলা সিপিএমের সম্পাদক সৈয়দ হোসেন বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য গোটা রাজ্যটাই এখন বোমা-বারুদের স্তূপের উপর দাঁড়িয়ে আছে। মানুষের চাপে পড়ে দলদাস পুলিশ এখানে বাধ্য হয়ে গ্রেফতার করছে।'। রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “বিরোধীরা প্রচার করে বাংলার পুলিশ তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে কাজ করে। সেটা যে ভুল ও মিথ্যা তা এই ঘটনা থেকে আরও একবার প্রমাণিত হয়ে গেল।'