বাংলায় পঞ্চায়েত ভোটের ঢাকে কাঠি পড়তেই শুরু অশান্তি। বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হয়েছে। শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে মনোনয়ন দাখিলের কাজ। যা নিয়েই হিংসা ছড়িয়ে পড়ল। দলীয় প্রার্থীদের জন্য মনোনয়নের ফর্ম তুলতে গিয়ে তাড়া খেতে কোনওক্রমে সরকারি দফতর ছেড়ে বাঁচলেন বিজেপি বিধায়ক। তবুও বিধায়কের গাড়িতে ইট-পাথর মারতে কসুর করল না বিক্ষোভকারীরা। সকালে মনোনয়ন ঘিরে মুর্শিদাবাদের সালারে তৃণমূলের গোষ্ঠীসংঘর্ষ ঘটেছে।
বাঁকুড়ায় কী হয়েছে?
পঞ্চায়েতের জন্য এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি কোনও রাজনৈতিক দল। গোদের উপর বিষফোড়া মনোনয়ন দাখিলের স্বল্প সময়সীমা। সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলো। মনোনয়ন পেশের সময়সীমার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য এদিন কমিশনকে ভেবে দেখতে বলেছে কলকাতা হাইকোর্ট। এই পরিস্থিতিতে সেই মনোনয়ন নিয়েই হিংসার অবহ তৈরি হল।
বাঁকুড়ার কতুলপুর ব্লক অফিসে শুক্রবার বেলার দিকে বেশ কয়েকজন অনুগামী নিয়ে গিয়েছিলেন স্থানীয় বিধায়ক হরকালী প্রতিহার। পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রার্থীদের জন্য মনোনয়ন দাখিলের ফর্ম তোলাই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। কিন্তু ফর্ম এখনও ব্লক অফিসে পৌঁছয়নি জানতে পেরে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিজেপি বিধায়ক। এরপরই ঘটে বিপত্তি।
বিধায়ক হরকালী প্রতিহার ব্লক অফিস থেকে বেরনোর পথে প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়েন। তাঁকে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। 'চোর' 'চোর' বলে স্লোগান ওঠে। বিক্ষোভের মধ্যেই কোনও মতে নিজের গাড়িতে ওঠেন বিধায়ক। গাড়ি সামান্য এগোতেই বিধায়কের গাড়ি লক্ষ্য করে পাথর মারা হয়। তাড়া করা হয় বিধায়কের গাড়ি। এই ঘটনায় সাময়িক উত্তেজনা ছড়ায়।
কতুলপুরের বিজেপি বিধায়ক হরকালী প্রতিহারের দাবি, 'বিক্ষোভকারীরা তৃণমূলের গুন্ডবাহিনী। বিরোধী দল যাতে মনোনয়ন জমা করতে ভয় পায় তাই এটা তৃণমূলের চক্রান্ত।' পাল্টা স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছেন, বিধায়ককে অঞ্চলের মানুষ দেখতে পান না। কোনও উন্নয়ন হয়নি। তাই তাঁকে হঠাৎ দেখে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
অন্যদিকে বাঁকুড়ার ইন্দাসে প্রার্থীরা সময় মতো বিডিও অফিস থেকে মনোনয়নপত্র না পাওয়ায় সরকারি দফতরের সামনের রাস্তায় দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বসে পড়েন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। তিনি বলেন, 'প্রশাসনিক গাফিলাতির কারণেই আমাদের দলের প্রার্থীরা আজ মনোনয়ন জমা করতে পারেননি। পরিকাঠামো এবং আগাম প্রস্তুতি না থাকলে এত তড়িঘড়ি করে নির্বাচন ঘোষণার কী প্রয়োজন ছিল? প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে রাজ্যের শাসকদল বিরোধীদের ঠেকানোর যত চেষ্টাই করুক না কেন, কোনও ভাবেই তা সম্ভব নয়।'
এদিকে মনোনয়নের প্রথম দিনেই মুর্শিদাবাদের সালারের ভরতপুর তৃণমূলের গোষ্ঠীসংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ব্লক সভাপতির অনুগামীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিধায়ক অনুগামীদের বিরুদ্ধে । পাল্টা ব্লক সভাপতির অনুগামীদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ বিধায়ক অনুগামীদের। দু'পক্ষের সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ৮ জন।
শুক্রবার বিকেলে মুর্শিদাবাদের রানিনগরেও মনোনয়নের ফর্ম তোলা ঘিরে উত্তেজনা দেখা যায়। অভিযোগ, সিপিআইএম-কে মনোনয়রেন ফর্ম তুলতে বাধা দেয় তৃণমূল কর্মী, সমর্থকরা। অস্ত্র হাতে বাম কর্মীদের উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ ওঠে।