সংসদের নিরাপত্তাকে প্রশ্নের মুখে তোলায় কেন বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিমহাকে বহিষ্কার করা হবে না? এবার এই প্রশ্ন তুলল তৃণমূল কংগ্রেস। দিন কয়েক আগেই লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি সংসদের লগইন পাসওয়ার্ড সংসদের বাইরের ব্যক্তির হাতে তুলে দিয়েছেন। তাতে, সংসদের নিরাপত্তা ভঙ্গ হয়েছে। বুধবার, বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিমহার জারি করা পাস নিয়ে সংসদের নিরাপত্তা ভঙ্গ করেছে দুই দুষ্কৃতী। তা-ও আবার সংসদে জঙ্গিহানার ২২ বছর পূর্তির দিনই। এক্ষেত্রে, সংসদের নিরাপত্তা ভঙ্গ করায় কেন বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিমহাকে বহিষ্কার করা হবে না? উপযুক্ত সময়ে মোক্ষম সেই প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
এই ব্যাপারে তৃণমূলের তরফে দলের অন্যতম নেত্রী তথা রাজ্যের মহিলা ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, 'আমাদের সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। কারণ, তিনি তাঁর লগইন আইডি পাসওয়ার্ড সংসদের বাইরের লোককে শেয়ার করেছেন। যা জাতীয় নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে বলে অভিযোগ। ধ্বনিভোটে তাঁকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিজেপি কি এবার তাদের সাংসদ প্রতাপ সিমহাকে বহিষ্কার করবে? তিনি তো গোটা সংসদ ভবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দুষ্কৃতীদের পাস জারি করেছেন। গোটা সংসদকে সেই সময়ে নিরাপত্তার সংকটে ফেলেছেন, যখন সংসদে ৫০০ সাংসদ উপস্থিত ছিলেন। এ নিয়ে বিজেপির কী বলার আছে? একটি নতুন সংসদ ভবন হয়েছে। নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তবুও, এত বড় গুরুতর নিরাপত্তা লঙ্ঘন হয় কী করে?'
বিজেপির তীব্র সমালোচনা করে শশী বলেন, 'তারা (বিজেপি) মহুয়া মৈত্রকে বহিষ্কারের জন্য যুদ্ধ করেছে, তা-ও কোনও প্রমাণ ছাড়াই। এবার বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিমহাকে বহিষ্কার করা উচিত কি না, তা নিয়ে ভোটাভুটি হওয়া উচিত। বিজেপিকে জবাব দিতে হবে, তারা কেন সাংসদকে বহিষ্কার করবে না? উত্তরই বুঝিয়ে দেবে, তারা আদৌ জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করে কি না। লোকসভা এখন কী করে তা আমরা দেখছি! বিজেপির উচিত অবিলম্বে সেই সাংসদকে বহিষ্কার করা, যিনি দুষ্কৃতীদের পাস দিয়েছিলেন। ওই দুষ্কৃতীদের হাতে ক্যানিস্টার এবং ধোঁয়াযুক্ত তরল ছিল। বড় ধরনের কিছু ঘটে যেতে পারত। এটা জাতীয় নিরাপত্তার লঙ্ঘন।'
আরও পড়ুন- সংসদে হানা, কেন এমন অপরাধ উচ্চশিক্ষিত নীলমের? আক্ষেপ ঝড়ল মায়ের মুখে
টিএমসির লোকসভা সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারও বলেছেন, 'এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে লোকসভার নিরাপত্তা লঙ্ঘন করা হয়েছে। সম্পূর্ণ গোয়েন্দা ব্যর্থতা এবং নির্বাচিত সদস্যদের নিরাপত্তা লঙ্ঘন করা হয়েছে। এক বিশেষ বিজেপি সাংসদ ওই দুষ্কৃতীদের সংসদের ভিতরে আনার জন্য ষড়যন্ত্র করেছিলেন। যে সাংসদ তাঁদের নিয়ে এসেছিলেন, তাঁর কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।' এক ভিডিও বার্তায় তৃণমূলের লোকসভা সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার একথা বলেছেন।
আরও পড়ুন- কৃষক পরিবারের সন্তান-ইঞ্জিনিয়ার-বিবেকানন্দের আদর্শে উদবুদ্ধ! সংসদ ভবনে হানাদারেরা কারা?
৮ ডিসেম্বর, সংসদের নীতি কমিটির পেশ করা এক প্রতিবেদন গ্রহণ করে মহুয়া মৈত্রকে নগদের বিনিময়ে প্রশ্ন করার অভিযোগে, 'অনৈতিক আচরণের জন্য দোষী' সাব্যস্ত করেছিলেন স্পিকার। লোকসভায় বিরোধীদের তীব্র আপত্তির মধ্যে মহুয়া মৈত্রকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। এক্ষেত্রে উত্তপ্ত বিতর্কে মৈত্রকে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। এই অভিযোগে বহিষ্কারের জন্য ভোটের প্রস্তাব গ্রহণের আগেই বিরোধীরা লোকসভা থেকে ওয়াকআউট করেন। প্রস্তাবটি শেষ পর্যন্ত ধ্বনিভোটে পাস হয়।