বিধাননগর পুরনিগমের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর আশুতোষ নন্দীর বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ উঠল। কেষ্টপুরের প্রফুল্লকানন এলাকায় বাড়ির সামনে বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা মা ও মেয়ে। যার জন্য বড় মাসুল গুনতে হল ওই মা, মেয়েকে। অভিযোগ বেআইনি কাজের প্রতিবাদ করেছেন বলে 'নির্যাতিতা'দের ডেকে পাঠান কাউন্সিলর অশুতোষ। এরপর অভিযোগকারীনী মেয়েকে বন্ধ ঘরে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ মহিলারা তাঁর উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। প্রতিবাদ করায় কাউন্সিলরের পা ধরতে বাধ্য করা হয় ওই মাম, মেয়ে-কে। এ নিয়ে বুধবার আশুতোষ নন্দী অবশ্য জবাব দিতে চাননি। বলেন, 'রাখি পুর্ণিমার পুণ্য দিনে এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না।'
ঘটনাটি গত বছরের মার্চ মাসের। কেষ্টপুরের প্রফুল্লকাননে তাঁদের বাড়ির সামনে বেআইনি নির্মাণ হতে দেখে প্রতিবাদ করেছিলেন নির্যাতিতা মা ও মেয়ে। অভিযোগীকারিণী মেয়ে অঙ্কিতা সরকার বলেছেন, '২০২২ সাল থেকে আমাদের বাড়ির পাশে একটি অবৈধ্য নির্মাণ করা হচ্ছে। এই কারণে প্রতিবাদ করেছিলাম। বিভিন্ন প্রশাসনিক দফতরেও এই বাড়ির নির্মাণ নিয়ে নালিশ জানাই। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি।'
একাধিক জায়গায় অভিযোগ জানানোর পর এ বছরের ৩রা মার্চ অভিযোগকারীনী মা ও মেয়ে-কে স্থানীয় কালি মন্দিরের সামনে ডেকে পাঠানো হয়। তরুণীর দাবি, তাঁর মাকে নিয়ে তিনি সেখানে গেছিলেন। দেখেন প্রায় দেড়শ জন মহিলা ও বেশ কয়েকজন তাঁদের ঘিরে ধরে। এরপর তাঁদের মন্দিরের পাশে একটি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দরজা বন্ধ করে তাঁদের ক্ষমা চাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এমনকী কাউন্সিল তাঁদের তাঁর পা ধরে ক্ষমতা চাওয়ান। এরপর সেখানে থাকা কাউন্সিলরের লোকজন মা ও মেয়েকে মারধর করে বলেও অভিযোগ।
এই ঘটনার পর আতঙ্কিত ওই দুই 'নির্যাতিতা'। তাঁরা বাগুইআটি থানায় কাউন্সিলের বিরুদ্ধে লিখিত নালিশ জানিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপই করেনি বলে অভিযোগ। এতদিন বাদে ওই ঘটনা ফের সামনে এসেছে। এ নিয়ে বিধাননগর পুরনিগমের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর আশুতোষ নন্দীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, 'রাখি পুর্ণিমার পুণ্য দিনে এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না।' উল্টে তিনি রাখি নিয়ে ঐতিহাসিক বিবরণ দিতে শুরু করেন। পরে সাংবাদিকরা জোর করে অফিস থেকে উঠে চলে যান অভিযুক্ত কাউন্সিলর।