পঞ্চায়েত প্রধান হওয়া সত্ত্বেও লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে উপার্জন করতেন। সৎ থেকে জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পালনের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মেমারির ঝর্ণা রায়ের প্রশংসা করেছিলেন। কিন্তু তাতেও ঝর্ণার ভাগ্যে শিকেয় ছিঁড়ল না। সেই ঝর্ণাও ব্রাত্য রয়ে গেলেন। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁকে আর দলীয় প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দিতার সুযোগ দিল না তৃণমূল। এতেই রাগে দুঃখে পূর্ব বর্ধমানের মেমারি ২ ব্লকের বিজুর ১ পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান ঝর্ণা রায় স্বদল বলে
কংগ্রেসে যোগ দিলেন। যদিও শাসক দলের নেতৃত্ব দাবি ঝর্ণাকে নিয়ে দলের অন্য ভাবনা ছিল। কিন্তু তিনি হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন।
পঞ্চায়েত প্রধান হওয়া সত্ত্বেও উপার্জনের জন্য ঝর্ণা রায় লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করার খবর কয়েক মাস আগে সংবাদ মাধ্যম প্রকাশ্যে আসে। সেই খবর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও মন কাড়ে। মুখ্যমন্ত্রী দুর্গাপুরের সভা থেকে ঝর্ণার প্রশংসা করেন। তাঁকেই মডেল হিসেবে তুলে ধরেন। তার পরেও দল এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ঝর্ণাকে প্রার্থী না করায় কার্যতই হতাশ তাঁর অনুগামীরা। দলের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে না পেরে ঝর্ণা সহ শাতাধিক তৃণমূল কর্মী কংগ্রেসে যোগদান করেন।
প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক অভিজিৎ ভট্টাচার্য এ বিষয়ে বলেন, 'রাজ্য জুড়ে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দানের হিড়িক বাড়ছে। মেমারির বিজুরের যাঁরা টাকা তুলে তৃণমূল দলে দিতে পারেনি তাঁদের ওই দলে কোন সম্মান নেই। তাই আমরা ভালো কর্মীদের স্বাগত জানালাম। এঁরা এবার কংগ্রেসের হাত শক্তিশালী করবেন বলে আশা করছি।'
আরও পড়ুন- আজবকাণ্ড! পঞ্চায়েতে মোট আসনের থেকে ১১,৯৩০ বেশি মনোনয়ন তৃণমূলের
দলত্যাগী ঝর্ণা রায় সহ বাকিদের বক্তব্য, দল তাদের যোগ্য সম্মান দেয়নি। এমনকি দল আজ তাদের খোঁজ নেয় না। সেই জন্যই তাঁরা কংগ্রেস পতাকা হাতে হাত শিবিরে যোগদান করেছেন। ঝর্ণা রায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী আমাকে সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন। তবুও আমি সততার দাম পেলাম না।'
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, 'দলে দু'টো দিক থাকে। একটা হল প্রশাসনিক আর অন্যটা সাংগঠনিক। দল হয়তো ভেবেছিল ঝর্ণা রায়কে সাংগঠনিক কাজে লাগাবে। কিন্তু উনি তড়িঘড়ি দল ছেড়ে অন্যদলে চলে গেলেন। আমরাও তার কাজের প্রসংশা করি ।মুখ্যমন্ত্রীও তার কাজের প্রসংশা করেছিলেন।'