ফের বোমাবাজি, অশান্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর। ঘটনায় একজন নাবালক সহ দুজনের মৃ্ত্যু হয়েছে। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে তৃণমূল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের ফলেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কেশপুর। বোমার শব্দে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এলকায় বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। থমথমে পুরো এলাকা। তৃণমূলের দাবি, একসময়ের সিপিএমের হার্মাদরাই এই হামলা চালিয়েছে। অভিযোগ তুলেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। বিজেপি জানিয়েছে, তৃণমূলের দুই নেতার লড়াইয়ের ফলেই সংঘর্ষ।
হুগলির আরামবাগে হরিনখোলা গ্রামে দিনের বেলায় খুন হয়েছিল তৃণমূল কর্মী ইরসাইল। মৃতের পরিবারের সদস্যরা শুধু নয়, তৃণমূল নেতৃত্বও স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিল যে গোষ্ঠীকোন্দলেই হরিনখোলার খোলতাজপুরে খুন হয়েছে দলীয় কর্মী। এবার একই অভিযোগ উঠল কেশপুরের দামোদরচকে। রীতিমত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় দামোদরচক। চলে বোমাবাজি। বাড়ি ভেঙে তছনছ করে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার রাতে ব্যাপক বোমাবাজিতে ১৪ বছরের এক কিশোর শেখ মাজাহার ও শেখ নাসেরের মৃত্যু হয়েছে। নাসের মুম্বইতে জরির কাজ করতেন। ঘটনায় পাঁচ জন জখম হয়। জানা গিয়েছে, জখমদের প্রথমে কেশপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মেদিনীপুর জেলা হাসাপাতালে রেফার করা হয়। সেখানেই চিকিৎসকরা ওই দুজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন- ঘরের বিদ্রোহ সব থেকে বড় বিপদ হতে পারে তৃণমূল কংগ্রেসের
তৃণমূলের দাবি, কেশপুরের ঘটনা জমি-জায়গা নিয়ে পারিবারিক বিবাদের ফল। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, "হামলাকারীরা সিপিএমের হার্মাদ। তারা কখনও তৃণমূল, কখনও বিজেপির আশ্রয় নেয়। এটা কোনও রাজনৈতিক ঘটনা নয়। তৃণমূলের এত বড় দল কে কোথায় মিছিলে হাটল তা কারও মনে থাকে না। উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।" সূত্রের খবর, কেশপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি ঘোষণা নিয়ে দলের অন্দরেই বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। অজিত মাইতি বলেন, "ব্লক সভাপতি ঘোষণা হওয়ার সঙ্গে এই ঘটনার কোনও যোগ নেই। এসব কোনও বিষয়ই নয়।" মৃতরা তৃণমূল সমর্থক বলে দাবি করেছেন জেলা সভাপতি।
তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। দলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, "কেশপুরে তৃণমূলের পুরনো ও নতুন ব্লক সভাপতির ক্ষমতা দখলের লড়াই চলছে। তাতেই অশান্তি, গন্ডগোল, বোমাবাজি। নিজেদের দোষ ঢাকতে অকারণে বিজেপিকে দোষারোপ করছে। ঘটনার মাত্র এক কিলোমিটার দূরে পুলিশ থানা। তবু বৃহস্পতিবার থেকে সংঘর্ষ চলছে। পুলিশ একেবারেই দর্শক।"
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় যায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। জানা গিয়েছে, প্রথম পর্যায়ে পুলিশও পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে ব্যর্থ হয়। অভিজ্ঞ মহলের মতে, শক্ত হাতে না ধরলে ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে আগে এমন অশান্তি আরও বাড়তে পারে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন