ঘরের বিছনায় থরে থরে ৫০০ টাকার বান্ডিল। আর সেই বান্ডিল নেড়েচেড়ে দেখছেন কালিয়াচক ১ ব্লকের তৃণমূলের গয়েশবাড়ি অঞ্চল কমিটির সভাপতি মিরাজুল বসনি। তৃণমূল নেতার অপরপ্রান্তে বসা অন্যজন সেই ৫০০ টাকার বান্ডিল তার কাছে বুঝিয়ে দিচ্ছেন। এমনই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই বিরাট শোরগোল পড়েছে। অভিযোগ, পঞ্চায়েতে পদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওই বিপুল অঙ্কের টাকা নিচ্ছেন তৃণমূলের গয়েশবাড়ি অঞ্চল কমিটির সভাপতি মিরাজুল। যদিও টাকা লেনদেনের সত্যতা যাচাই করেনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা।
বুধবার গয়েশবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন ছিল। সেখানেই ১৫ জনের সমর্থনে গয়েশবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান হয়েছেন রোহিনা খাতুন। দলেরই অধিকাংশ পঞ্চায়েত সদস্যদের অভিযোগ, যাঁকে প্রধান করা হয়েছে তাঁর কাছ থেকে মোটা টাকা নিয়েছে গয়েশবাড়ি তৃণমূল অঞ্চল কমিটির সভাপতি মিরাজুল বসনি।
গয়েশবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন সংখ্যা ২৬। এবারে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল পেয়েছে ১৫টি আসন, ৯ টি পেয়েছে কংগ্রেস। একটি করে আসন পেয়েছে সিপিআইএম ও আইএসএফ। ভোটাভুটির মাধ্যমে পঞ্চায়েত প্রধান গঠন হয়। যেখানে এই প্রধান গঠনকে ঘিরেই তৃণমূলেরসদস্যদের বেশ কয়েকজন সংশ্লিষ্ট এলাকার দলের অঞ্চল সভাপতি বিরুদ্ধে প্রধান করে দেওয়ার জন্য মোটা টাকার লেনদেনের অভিযোগ তুলেছেন।
গয়েশবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যা নেক খাতুনের অভিযোগ, প্রধান করার জন্য তৃণমূলের গয়েশবাড়ি অঞ্চল কমিটির সভাপতি মিরাজুল বসনি ১০ লক্ষ টাকা নিয়েছেন তাঁর কাছ থেকে। অথচ তাঁকে প্রধান করা হয়নি। একজন নয়, বেশ কয়েকজনের থেকে বিরাট পরিমানের অর্থ নিয়েছেন ওই তৃণমূল নেতা। এক পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী কামাল শেখের স্ত্রী ও এবারে নির্বাচিত হয়েছেন গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোটে। তার কাছ থেকেও প্রধান করে দেওয়ার জন্য ১৫ লক্ষ টাকা অঞ্চল কমিটির সভাপতি নিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন। আর এই ঘটনাকে ঘিরেই তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় গয়েশবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়
যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠাও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মিরাজুল বসনি। কালিয়াচক ১ ব্লকের গয়েশবাড়ি তৃণমূলের অঞ্চল কমিটির সভাপতি মিরাজুল বসনি বলেছেন, 'এই গ্রাম পঞ্চায়েতে দলের ১৫ জন সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এমনকী আমার মেয়েও এই পঞ্চায়েত থেকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছে। আমার মেয়েকে কিন্তু আমি প্রধানের দৌড়ে রাখেনি। অথচ ইচ্ছা করলেই তা করতে পারতাম।'
তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মিরাজুল বসনির সংযোজন, 'নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যরা প্রত্যেকেই প্রধান হতে চাইছেন। এখন কথা হল প্রধান তো একজনকেই করতে হবে। সবাই প্রধানের দাবি করলে তো চলবে না। দলমত নির্বিশেষে একজনকে প্রধান করা হয়েছে। যারা প্রধান হওয়ার দাবি জানিয়েছিল, এখন তাঁরা সেটা না হতে পেরে আমার বিরুদ্ধে একটা মিথ্যা রটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করেছে। অথচ আমি শ্রমিক সরবরাহের কাজ করি। যার জন্য মাঝেমধ্যেই টাকার প্রয়োজন হয়। কখনো আমি কাউকে সুদে টাকা দিয়ে থাকি। আবার কারো কাছ থেকে টাকা নিধারও করি। আর সেই ছবি মিথ্যা ভাবেই প্রচার করে আমার বিরুদ্ধে বদনাম করা হচ্ছে।'