সোমবার সাতসকালে তৃণমূল নেতা খুনে অগ্নিগর্ভ জয়নগর। পাল্টা এক অভিযুক্তকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ। একের পর এক বাড়িতে বেপরোয়া ভাঙচুর-আগুন। সেই আগুন নেভাতে গেলে দমকলের গাড়ি আটকে তুমুল বিক্ষোভ। অশান্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় বিশাল পুলিশবাহিনী।
সোমবার ভোরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে নৃশংসভাবে খুন হন তৃণমূলের বামনগাছি এলাকার অঞ্চল সভাপতি তথা তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য সইফুদ্দিন লস্কর। সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁকে খুন করেছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের। এই ঘটনার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই পুলিশ দু'জনকে আটক করেছে। তবে সোমবার সাতসকালের এই খুনের পর অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে এলাকার পরিস্থিতি। সিপিএমের মদতেই খুন বলে অভিযোগ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের।
এই ঘটনার পরপরই দলুয়াখাকি গ্রামে গিয়ে আছড়ে পড়ে রোষ। এলাকায় সিপিএম সমর্থকদের বেশ কয়েকটি বাড়িতে চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। চলে বেপরোয়া হামলা। কমপক্ষে এলাকার ১০টি বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তৃণমূলের বিরুদ্ধেই ভাঙচুর-আগুন লাগানোর অভিযোগ। পুলিশের সামনেই এই হামলা বলে দাবি স্থানীয়দের। দলুয়াখাকি গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, "তিন-চার হাজার লোক এসে আমেদের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করেছে। আমরা সিপিএম করি বলেই তৃণমূলের লোকজন এসে আমাদের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করেছে।"
উল্লেখ্য, সোমবার ভোরের দিকে নমাজ পড়তে যাচ্ছিলেন ওই ব্যক্তি, তখনই চলে হামলা। আশেপাশের এলাকা কিছুটা ফাঁকা ছিল। সেই সুযোগেই তৃণমূলের নেতার উপর চলে অতর্কিতে হামলা। গুলির শব্দ পেয়ে ছুটে আসেন বাসিন্দারা। ততক্ষণে দুষ্কৃতীরা গা ঢাকা দিয়েছিল। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিয়ে শুয়ে কাতরাচ্ছিলেন তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্কর।পরে তাঁকে পদ্মেরহাট গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন- নমাজ পড়তে যাচ্ছিলেন তৃণমূল নেতা, ঘিরে ধরে এলোপাথাড়ি গুলি, নৃশংস খুনে ভয়ঙ্কর অভিযোগ
স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক বিভাস সরদার বলেন, “দুষ্কৃতীরা এই খুন করেছে। ও আমাদের বামনগাছির অঞ্চল সভাপতি। ভোরবেলা নমাজ পড়তে যাচ্ছিল। বাড়ির সামনেই মসজিদ। পুলিশ ঘটনার শুরু করেছে। ভিতরে কোনও ষড়যন্ত্র আছে কি না তা দেখছে পুলিশ। ২ জনকে গ্রেফতার করেছে।"
এদিকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, "দুষ্কৃতী কারা সবাই জানেন। মাফিয়া নেতা সব। খুনের পর আসল ঘটনা থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে তিন থেকে চার কিলোমাটির দূরে গিয়ে ভাঙচুর করলো। বগটুইয়ের মতো করে ঘিরে ধরে গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হল। মহিলারা কান্নাকাটি করছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে থেকে সব দেখেছে। অপরাধীদের থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে দুষ্কৃতীদের সাহায্য করেছে তৃণমূল। পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বগটুইয়ের স্মৃতি মনে করিয়ে দিচ্ছেন।"