সিউড়ি ২ নম্বর ব্লকের শাসকদলের পঞ্চায়েত সমিতির মহিলা সভাপতিকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে অনুব্রত মণ্ডল গোষ্ঠীর তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধেই। মহিলা সভাপতির অভিযোগ তার ওড়না ধরে টানাটানি ও মারধর করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার সন্ধ্যার পর।
অভিযোগকারিনী ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জানিয়েছেন," দলের এক নেতা তাকে কয়েকটি কাগজে সই করতে বলেন। সেই মতোই তিনি সই করার জন্য যান। তখনই তৃণমূলেরই বিরোধী গোষ্ঠীর কয়েকজন ওই নেতাকে জড়িয়ে তার চরিত্র নিয়ে নানা কথা বলতে শুরু করে। প্রতিবাদ করলে আমি ও আমার এক তৃণমূল কর্মীকে মারধর ও শ্লীলতাহানি করা হয়। মারধরে আহত সভাপতির সাথে থাকা ওই তৃণমূল কর্মী। তিনি সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তৃণমূলের ওই নেত্রী তথা সিউড়ি ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির অভিযোগ, রাস্তার মধ্যে শ্লীলতাহানি করা হয়েছে তাঁর। অভিযোগ পত্রে ওড়না ধরে টানাটানি ও মারধরের কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, পঞ্চায়েত সমিতির কাজেই কয়েকজন নেতার সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি, আর সেখানেই তাঁকে মারধর করা হয়। বেরিয়ে চলে আসার সময় তাঁর ওড়না খুলে, তাঁর গলায় ফাঁস লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয় বলেও দাবি করেছেন তিনি।
যদিও অপরপক্ষের দাবি, ওই নেতার বাড়িতে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দীর্ঘক্ষণ ছিলো। গ্রামবাসীদের সন্দেহ হয়। দুজনকে ধরে ফেলাতেই মিথ্যা অভিযোগ করছে।
ওই নেত্রী জানান, মিথ্যা কথা বলছে ওরা। এর আগেও তাঁকে দলের বিরোধী গোষ্ঠীর লোকেরা হুমকি দেয়। তাদের কথা মতো না চললে প্রাণে মেরে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। এমনকী বাড়িতে বোমা মারা হবে বলেও ভয় দেখানো হয়।
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেন বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা হিসেবে পরিচিত এহেসানুল হক বলেন, নিজেদের দোষ ঢাকা দিতেই তাঁদের নামে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে।
এই ঘটনার প্রসঙ্গে বীরভূম জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, 'বিষয়টা শুনলাম, খোঁজ খবর নেব। তারপরে যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেব।'
সিউড়ি ২ নম্বর ব্লকে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে পৌছেছে বিগত কয়েক মাস ধরে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রুপা সাহা ব্লক সভাপতি নুরুল ইসলাম অনুগত। অন্যদিকে অভিযুক্তরা নুরুল বিরোধী গোষ্ঠীর সমর্থক। নুরুল ইসলাম বর্তমানে বীরভূম জেলা পরিষদের সভাপতি কাজল সেখের দিকে ভীড়েছেন। উলটো দিকে রয়েছে অনুব্রত শিবির। বিরোধীদের অভিযোগ দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের শিকার এক গৃহবধু। তার জেরেই এই হেনস্থার ঘটনা।
সিউড়িতে তৃণমূল নেত্রীর উপর শ্লীলতাহানির ঘটনায় কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছে বিজেপি। বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, রাজ্য জুড়ে মহিলা দের উপর তৃণমূলের নির্যাতনের ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। অবিলম্বে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবো আমরা।
পাল্টা, ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বীরভূম জেলা সভাধিপতি কাজল শেখ। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তপ্ত তৃণমূল, ভাইরাল ভিডিও ঘিরে বাড়ছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।