কোচবিহারের শীতলকুচির পর এবার নদিয়ার হাঁসখালি। আবারও দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত তৃণমূল নেতা। ভরা বাজারে চায়ের দোকান থেকে ডেকে তৃণমূল নেতাকে গুলিতে ঝাঁঝরা করল দুষ্কৃতীরা। রোমহর্ষক এই ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব বাজারে আসা বাকিরা। প্রাণভয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেন অনেকে। মুখে কাপড় বেঁধে এসে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
শুক্রবার সকালে নদিয়ার হাঁসখালির রামনগর গ্রামে নৃশংস এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এদিন রামনগর বড় চুপড়িয়া ১ নং পঞ্চায়েতের তৃণমূলের অঞ্চল সহ সভাপতি আমোদ আলি বিশ্বাসকে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে বাজারে গিয়ে একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন তৃণমূল নেতা আমোদ আলি বিশ্বাস। ঠিক সেই সময়ে ৮-১০ দুষ্কৃতীর একটি দল সেখানে যায়। এদেরই মধ্যে কয়েকজন আমোদ আলি বিশ্বাসকে চায়ের দোকান থেকে ডেকে নেয়। দোকানের বাইরে এলেই তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে দুষ্কৃতীরা।
প্রাণভয়ে পালাতে গেলে তার দিকে ধেয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। শেষমেশ পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে পরপর গুলি ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তৃণমূল নেতা। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এদিন কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুখ ঢাকা অবস্থায় এসে দুষ্কৃতীর দল তৃণমূল নেতাকে গুলি করে চম্পট দেয়। খবর পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে যায়। নিহত তৃণমূল নেতার নিথর দেহের ময়নাতদন্তের জন্য কৃষ্ণনগরে পাঠানো হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন- হাড়হিম-কাণ্ড! সাতসকালে রক্তারক্তি, নৃশংস পরিণতি তৃণমূল নেতা ও তাঁর স্ত্রী মেয়েদের
শুক্রবার ভোরে কোচবিহারের শীতলকুচিতেও তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য, তাঁর স্বামী ও এক মেয়েকে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এবার নদিয়ার হাঁসখালিতে ভরা বাজারে তৃণমূল নেতা খুন। এই ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন সংবাদমাধ্যমে বলেন, 'এই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তারা পার পাবে না। পুলিশ দোষীদের ধরবে। পঞ্চায়েত নির্বাচন যত এগোচ্ছে বিরোধীদের পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে। তত বেশি করে এরা অশান্তির বাতারণ তৈরি করতে চাইছে। বিজেপি নেতারা রাজ্যে ঘুরে ঘুরে মানুষকে উসকানি দিচ্ছে। উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছে। বাইরে থেকে ভাড়াটে খুনি এনে বাংলাকে অশান্ত করার চেষ্টা চলছে।'
আরও পড়ুন- চৈত্রের দাবদাহে পুড়ছে বঙ্গ, এবার ‘লু’ বইতে পারে একাধিক জেলায়
বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা সংবাদমাধ্যমে বলেন, 'তৃণমূল আড়াআড়ি বিভক্ত হয়ে গেছে। পঞ্চায়েত ভোট সামনে এসে যাওয়ায় একে অপরের এলাকা দখলে নেমেছে। ভয়ঙ্কর পর্যায়ে এটা পৌঁছে গেছে। এরাজ্যে পুলিশ-প্রশাসন বলে কিছুই নেই। মস্তানরাজ চলছে। সেই কারণে এত বেশি মস্তান ও বেশি অস্ত্র তৃণমূলের হাতে চলে গেছে। সাধারণ মানুষের অবস্থা দুর্বিষহ।'