ভর সন্ধ্যাবেলা দক্ষিণ ২৪ পরগণার জয়নগরে তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক বিশ্বনাথ দাসের গাড়ির উপরে সশস্ত্র হামলায় প্রাণ হারালেন তিনজন। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে জয়নগর থানা সংলগ্ন পেট্রোল পাম্পের কাছে। নিহতরা হলেন তৃণমূলের জয় হিন্দ বাহিনীর সভাপতি সইফুদ্দীন খান, গাড়ির চালক সেলিম খান ওরফে বাবু, ও তাঁদের এক সঙ্গী। বিশ্বনাথবাবু সে সময় গাড়িতে ছিলেন না।
হামলার সময়ে গাড়িতে ছিলেন না বিধায়ক বিশ্বনাথ দাস
ঘটনার জেরে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বারুইপুর জেলা পুলিশ সুপার অজয় প্রসাদ সহ এসডিপিও অভিষেক মজুমদারের নেতৃত্বে জয়নগর থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। পাশাপাশি পুলিশ জয়নগর এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় নাকাবন্দী ও তল্লাশি আরম্ভ করেছে। কি কারণে এই প্রাণঘাতী আক্রমণ, সে ব্যাপারে পুলিশ এখনো ধন্দে। এদিকে তৃনমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী জানান, "দুষ্কৃতিরা হামলা চালায়, প্রশাসনকে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলেছি। এর পেছনে কোনও রাজনৈতিক কারণ নেই।"
আরও পড়ুন: বেহালা থেকে বীরভূম, পেনশনের জ্বালায় মরেও শান্তি নেই
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্বনাথবাবু গাড়ি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন একটি সভার উদ্দেশ্য। গাড়িতে তিনি ছাড়াও ছিলেন গাড়ির চালক বাবু, সইফুদ্দীন খান ও আরও একজন। পথে বহরুতে তৃণমূল কংগ্রেসের সভা থাকায় বিশ্বনাথবাবু গাড়ি থেকে নেমে যান সভা করার জন্য। তারপর গাড়ি নিয়ে জয়নগর এলাকার দিকে আসছিলেন চালক সহ দুজন। জয়নগর পেট্রোল পাম্পের কাছে বিধায়কের গাড়ি পৌঁছতেই গাড়ির উপর হামলা চালায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। বোমা ও গুলির আঘাতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনজন।
বোমা ও গুলির আঘাতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনজন
পরে বিশ্বনাথবাবু জানান, "বৃহস্পতিবার সারাদিন আমার প্রোগ্রাম ছিল জয়নগরে, জয়নগর ১ ব্লক, জয়নগর ২ ব্লক ঘুরে বহরুতে দলীয় অফিসে বসেছিলাম। আমি সেখানে থাকাকালীন সন্ধে সাড়ে সাতটার পর আমার গাড়ির চালক বাবু তেল ভরার জন্য জয়নগর পেট্রোল পাম্পে যায়। সেই সময় গাড়িতে সইফুদ্দীন খান সহ তার এক সঙ্গী ছিলেন। আচমকা দুষ্কৃতিরা আমার গাড়িকে আক্রমণ করে। আমাকে মারার জন্যই আক্রমণ করে। ওরা ভেবেছিল, গাড়িতে আমি আছি। ১৫ থেকে ১৬ জন লোক বাইকে করে এলোপাথাড়ি গুলি, বোমা চালিয়ে আমাদের জয় হিন্দ বাহিনীর সভাপতি সইফুদ্দীন খান সহ আমার গাড়ির চালক বাবু ওরফে সেলিম ও তাদের সঙ্গীকে খুন করে। এরপর ওরা বাইকে করে মন্দিরবাজারের দিকে পালিয়ে যায়। আমি এই ব্যাপারে দলের জেলা সভাপতি সহ জেলার যুব সভাপতিকে জানিয়েছি। কিন্তু কারা এই কাজ করেছে তা জানি না।"