এলাকার গঙ্গার ভাঙন পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়ে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে রীতিমতো মেজাজ হারালেন রতুয়ার তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়। ভাঙন দুর্গতদের বিক্ষোভ বরদাস্ত করতে না পেরে প্রতিবাদকারী একজনকে রীতিমতো পুলিশকে ধরিয়ে দেওয়ারও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে। রবিবার দুপুরে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে চাঁচোল মহকুমার রতুয়া ১ ব্লকের মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্রীকান্তটোলা এলাকায়।
বিধায়ককে শান্ত করতে এগিয়ে আসেন চাঁচোল মহকুমা শাসক সৌভিক মুখোপাধ্যায়-সহ সেচ দফতরের কর্তারা। বিক্ষোভকারী ভাঙন দুর্গতদের অভিযোগ, "এলাকায় গঙ্গার ভাঙন হচ্ছে। আগে থেকেই ভাঙন প্রতিরোধের দাবি আমরা জানিয়েছিলাম। বর্ষার মরশুমে গঙ্গা ফুলে ফেঁপে উঠেছে। ব্যাপক হারে ভাঙন হচ্ছে। আর এখন বিধায়ক এসেছেন সেচ দফতরের সঙ্গে পরিস্থিতি দেখতে। আমরা জানিয়েছিলাম এই পরিস্থিতিতে স্থায়ী ভাবে ভাঙন প্রতিরোধের কাজ করতে হবে। পাল্টা বিধায়ক আমাদের কয়েকজনকে পুলিশকে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেখায়। তারই প্রতিবাদ করা হয়েছে।"
উল্লেখ্য, মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্রীকান্তটোলা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই গঙ্গা ভাঙনের সমস্যা রয়েছে। বর্ষার মরশুমে বেশ কিছুদিন ধরে লাগাতার ভাঙন হচ্ছে। ইতিমধ্যে বিপুল পরিমাণ চাষযোগ্য জমি গঙ্গার ভাঙনে তলিয়ে গিয়েছে। সংশ্লিষ্ট গ্রামের বসবাসকারী বাসিন্দারাও ভাঙন আতঙ্কে এলাকা থেকে সরে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে। এরই মধ্যে এদিন দুপুরে মহকুমা প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে শ্রীকান্তটোলা এলাকায় হাজির হন তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়। আর তাঁকে সামনে পেয়েই নানান সমস্যার কথা বলেন সংশ্লিষ্ট এলাকার দুর্গত বাসিন্দারা।
বিক্ষোভকারী গ্রামবাসী শচীন মণ্ডল বলেন, "এদিন উনি এসেছেন ভাঙন পরিস্থিতি পরিদর্শন করতে। বিধায়ক যখন দাঁড়িয়েছিলেন সেই সময় আমরা মহকুমা প্রশাসন ও সেচ দফতরের কর্তাদের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হওয়ার কথা বলছিলাম। স্থায়ীভাবে যাতে ভাঙন যাতে ঠেকানো যায় সেই দাবিও করেছিলাম। সেই সময় হঠাৎ তৃণমূল বিধায়ক আমাদের ধমকাতে থাকেন। আমরা নাকি প্রশাসনকে ভাঙন পরিস্থিতির কোনওরকম কথা বলতে পারব না। এরই প্রতিবাদ করাতেই হঠাৎ করে মেজাজ হারিয়ে পুলিশকে দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি পর্যন্ত দেন। তখনই স্থানীয় একাংশ গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখান।"
আরও পড়ুন RG Kar Case: আরজি করে তরুণী চিকিৎসক খুন, ঘরে-বাইরে প্রবল চাপে শেষমেষ কঠিন সিদ্ধান্ত স্বাস্থ্য দফতরের
চাঁচোলের মহকুমা শাসক সৌভিক মুখোপাধ্যায় বলেন, "শ্রীকান্তটোলা এলাকার ভাঙন পরিস্থিতি এদিন পরিদর্শন করে দেখা হয়েছে। আমাদের সঙ্গে সেচ দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারও এসেছিলেন। যতটা সম্ভব এই এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধের কাজ করা হবে। মহানন্দাটোলা, শ্রীকান্তটোলাতে দীর্ঘদিনের ভাঙনের জন্য প্রচুর ভিটে চলে গিয়েছে। তাঁদের পুর্নবাসন দেওয়ার ব্যবস্থার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অতিসত্বর যাতে ভাঙন প্রতিরোধের কাজ করা হয়, সে ব্যাপারেও সেচ দফতরের পদস্থ কর্তাদের জানানো হয়েছে।"
যদিও এদিন তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়ের মেজাজ হারানোর বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসা করতে গেলে উনি কোনও রকম মন্তব্য করেননি।