Advertisment

'মারাত্মক অন্যায়' স্বীকার তৃণমূল বিধায়কের! সিপিএম নেতার হাত টেনে ধরে ক্ষমাপ্রার্থী শাসকনেতা

পঞ্চায়েত ভোটের ময়দানে বামেদের সামনে সৌজন্যের রাজনীতির ছাপ রাখলেন এই তৃণমূল বিধায়ক।

author-image
Nilotpal Sil
New Update
Tmc MLA Nishith Malik apologized to the CPM leader

সিপিএম নেতার কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমাপ্রার্থী তৃণমূল বিধায়ক।

লোকসভা ভোটের এখনও ঢের দেরি। তার আগে পঞ্চায়েত ভোটের ময়দানে বামেদের সামনে সৌজন্যের রাজনীতির ছাপ রাখলেন বর্ধমান উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক নিশীথ মালিক। মঙ্গলবার বর্ধমান ২ নম্বর ব্লকের বিডিও অফিস চত্বরেই সিপিএম নেতৃত্বের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ সারলেন নিশীথ মালিক। এর পরেই তিনি তাঁর বিধানসভা এলাকার সিপিএম নেতা সাগর মল্লিকের হাত দুটি টেনে ধরে একেবারে মিনমিনে গলায় বলে উঠলেন, “মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে সোমবার যে অশান্তি হয়েছে তার জন্য আমি অনুতপ্ত ও ক্ষমাপ্রার্থী। উচিত কাজ হয়নি। আমি থাকলে অশান্তি হতে দিতাম না। পুলিশ সক্রিয় হলে ওই ঝামেলা অশান্তি আটকানো যেত।” সিপিএমের এক নেতার তৃণমূল বিধায়কের এই ক্ষমা চাওয়ার ঘটনা কিন্তু জেলা রাজনীতিতে জোর চর্চায়।

Advertisment

ঠিক কী ঘটেছিল সোমবার? যার জন্য সিপিএম নেতার কাছে ক্ষমা চাইতে হল তৃণমূল বিধায়ক নিশীথ মালিককে। জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন দাখিলের তৃতীর দিনে অর্থাৎ সোমবার বর্ধমান ২ নম্বর ব্লকের বড়শুলে তৃণমূলের কর্মীদের সঙ্গে সিপিএমের প্রার্থী-কর্মীদের ব্যাপক গণ্ডগোল হয়। ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ সিপিএম প্রার্থীদের নিয়ে কর্মী ও সমর্থকর বড়শুলে বর্ধমান ২ ব্লকের বিডিও অফিসের দিকে যাচ্ছিলেন। ঠিক সেই সময়ে
তাঁদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে।

publive-image
ছবির বাঁদিকে তৃণমূল বিধায়ক নিশীথ মালিক। সিপিএম নেতা সাগর মল্লিকের হাত টেনে ধরে ক্ষমা চাইছেন।

মনোনয়ন দাখিল করতে যেতে বাধা পেয়ে বাম কর্মী ও সমর্থকরা প্রতিরোধে নামতেই দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ঘ বেঁধে যায়। সিপিএম কর্মীরা তৃণমূল কর্মীদের বহু বাইকে বেপরোয়া ভাঙচুর চালায়। তার পাল্টা তৃণমূল কর্মীদের ছোঁড়া ইটের আঘাতে সিপিএমের প্রার্থী, প্রস্তাবক-সহ কয়েকজন জখম হন। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে রেহাই পাননি পুলিশকর্মীরাও। বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মীও জখম হন। এই ঘটনায় পুলিশ ৯ জনকে গ্রেফতার করে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে মঙ্গলবার বর্ধমান আদালতে পেশ করে । বিচারক ধৃত সকলেরই জামিন নামাঞ্জুর করেছেন।

এদিকে, তৃণমূল বিধায়ক নিশীথ মালিক এদিন দাবি করেন, সোমবারের সংঘর্ষের ঘটনায় ধৃত ৯ জন তাঁদের দলের কর্মী। তবে এদিন বামেদের মনোনয়ন নিয়ে কোনও অশান্তির ঘটনা ঘটেনি। অবাধেই বাম প্রার্থীরা মনোনয়ন দাখিল করেছেন।

আরও পড়ুন- মারের পাল্টা মার! ‘ইটের জবাব পাথরে দিতে’ একজোটে মনোনয়ন বাম-কংগ্রেস-বিজেপির

তৃণমূল বিধায়কের ক্ষমা চাওয়া প্রসঙ্গে, সিপিএম নেতা সাগর মল্লিক জানান, তৃণমূল বিধায়ক সত্যটা স্বীকার করেছেন সেটাকে তাঁরা সাধুবাদ জানাচ্ছেন । তিনি বলেন, “তবে তৃণমূল বিধায়ক কি উদ্দেশ্যে এদিন বিডিও অফিসে উপস্থিত হয়েছিলেন সেটা আমরা বুঝতে পারলাম না। তবে সোমবার আমাদের যেভাবে আটকানো হয়, মারধর করা হয় তাতে আমাদের মনোবল একটুও কমেনি, বরং বেড়েছে। ভোটের দিনেও বাম প্রার্থী ও কর্মীরা একই মনোবল নিয়ে ময়দানে থাকবেন। শাসকদলের সন্ত্রাস যাই থাক, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাম কর্মী ও সমর্থকরা লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে যাবেন না।”

আরও পড়ুন- পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী? যুগান্তকারী অবস্থান হাইকোর্টের!

জেলা বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র তৃণমূল বিধায়কের ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, “তৃণমূল বিধায়কের সিপিএম নেতার কাছে ক্ষমা চাওয়ার পিছনে অবশ্যই রয়েছে রাজনৈতিক কৌশল। লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে হয়তো ওই কৌশল তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বেরই তৈরি করে দেওয়া। আসলে এই রাজ্যে বিজেপির ভোট ব্যাঙ্ক যতই বাড়ছে ততই দুশ্চিন্তার পারদ চড়ছে শাসক দলের । তাই ভোট কাটাকাটির গোম প্ল্যান স্বরূপ তৃণমূলের নেতা ও বিধায়করা এখন থেকে সিপিএমকে তোল্লা দিচ্ছে। বাংলার মানুষ তৃণমূলের এই কৌশল সম্পর্কে অনেকদিন আগে থেকেই অবগত আছেন।”

panchayat election 2023 bengal panchayat election 2023 West Bengal coronavirus CPIM TMC MLA East Burdwan
Advertisment