মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রাজনীতির মঞ্চে নতুন কিছু না হলেও দলের অন্দরেই 'ছেলে অপহরণের' অভিযোগে অস্বস্তিতে ঘাসফুল শিবির। মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জের তৃণমূলের প্রভাবশালী বিধায়ক আমিরুল ইসলাম বনাম এলাকার তৃণমূলের জেলা পরিষদের সদস্য তথা স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ আনারুল হক এর দ্বৈরথকে ঘিরে নয়া রাজনীতি নবাবি শহরে।
ঠিক কী হয়েছে মুর্শিদাবাদে?
সামসেরগঞ্জের তৃণমূলের জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ আনারুল হক জানিয়েছেন যে তাঁর দুই নাবালক সন্তানকে স্কুল নিয়ে যাওয়ার পথে এলাকারই তৃণমূল বিধায়ক আমিনুল ইসলামের অনুগামীরা দুষ্কৃতী দিয়ে অপহরণের চেষ্টা করে। শনিবার এই মর্মে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরও করেন তৃণমূল সদস্য। মোট ৬ জনের নামে দায়ের করা হয়েছে অভিযোগ, এমনটাই খবর পুলিশ সূত্রে। যদিও এখনও পর্যন্ত ঘটনায় অভিযুক্তদের কেউ গ্রেফতার হয়নি বলেই জানা গিয়েছে।
বাঁদিকে আনারুল হক, ডানদিকে অভিযুক্ত বিধায়ক আমিরুল ইসলাম। ছবি- পরাগ মজুমদার
আরও পড়ুন: পোশাক খুলে ঋতুস্রাবের পরীক্ষা দিতে হল ছাত্রীদের, আটক অধ্যক্ষ
এদিকে পুরো ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূলের বিধায়ক আমিরুল ইসলাম তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ মিথ্যে ও পরিকল্পনা মাফিক বলে দাবি করেছেন। তিনি এই মুহূর্তে কলকাতায় দলীয় কাজে আছেন বলেই জানান। তবে কেন তাঁর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, "এমন অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই। আমার নামকে কালিমালিপ্ত করতেই এই প্রচেষ্টা করা হচ্ছে"। যদিও অভিযোগকারী নেতা আনারুল হক বলেন," এটা সংশোধনী বিধায়ক আমিনুল ইসলামের মদতে হয়েছে। এই এলাকায় এত সাহস কারো নেই যে সামসেরগঞ্জ থেকে আমার ছেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যাবার চেষ্টা করবে"।
পুলিশে দায়ের করা হল অভিযোগ। ছবি- পরাগ মজুমদার
আরও পড়ুন: জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি অত্যাচারের সিসিটিভি ফুটেজ ফাঁস
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই শাসকদলের বিধায়ক বনাম জেলা পরিষদের সদস্যের কাজিয়া চলছে। এরই মধ্যে এই ঘটনা সামনে আসায় ঘাসফুল অন্দরেই তৈরি হয়েছে অস্বস্তির বাতাবরণ। আনারুল হকের দুই নাবালক স্কুল পড়ুয়া ছাত্র এলাকার হোলি ফেত স্কুলের ছাত্র। প্রতিদিনের মতো শুক্রবার ওই দুই নাবালক ছেলেকে নিয়ে আনারুল হকের ব্যক্তিগত কর্মচারী আরশাদ আলী তাঁদের স্কুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয় মোটর বাইকে। অভিযোগ, পথেই জনা কয়েক দুষ্কৃতী আনারুল হকের ছেলেদের রাস্তা আটকে অস্ত্র এবং বোমা দেখিয়ে অপহরণের চেষ্টা করে। এমন সময় ওই দুই নাবালকের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন তড়িঘড়ি ছুটে আসে ঘটনাস্থলে। সুযোগ বুঝে পিঠটান দেয় অপহরণকারীরা। পরবর্তীতে সমস্ত ঘটনা জানার পরই তৃণমূলের জেলা পরিষদের সদস্য তথা এলাকার নেতা আনারুল হক যাবতীয় ঘটনার মূল চক্রী হিসেবে এলাকারই তৃণমূল বিধায়ক আমিরুল ইসলামকে দায়ী করে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে তদন্ত চলছে। পাশাপাশি সব দিক খতিয়ে দেখে এলাকায় পুলিশি টহলও জারি করা হয়েছে।