টানা ১৫ ঘণ্টা তল্লাশির পর শনিবার সকালেই তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার বাড়ি ছাড়ে সিবিআই। তাপস সাহার দুটি মোবাইলই সঙ্গে নিয়ে গিয়েছেন তদন্তকারীরা। তাই আর দেরি না করে সিবিআই বাড়ি ছাড়ার পরপরই মোবাইল কিনতে দোকানে ছুটলেন বিধায়ক। এবার আর স্মার্টফোন নয়, সাদামাটা 'টেপা-ফোন'ই কিনেছেন বিধায়ক। সঙ্গে নিয়েছেন নতুন সিমকার্ডও। 'জনসংযোগের কাজের জন্যই মোবাইল কিনলাম', সংবাদমাধ্যমকে এমনই বলেছেন নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআই স্ক্যানারে থাকা শাসকদলের এই বিধায়ক। তবে এদিন তাপস ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকজনের বাড়িতেও তল্লাশি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা।
চাকরির নামে কোটি-কোটি টাকা তুলেছেন নদিয়ার তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা, এই অভিযোগের পরিপ্রক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তে নামে সিবিআই। শুক্রবার বেলা সাড়ে তিনটের পর থেকে টানা তল্লাশি চলে তাপস সাহার তেহট্টের বাড়ি, কার্যালয়ে। বেতাই কলেজের পরিচালন সমিতির সদস্য তাপসবাবু। সেখানেও তল্লাশি অভিযানে গিয়েছিল সিবিআই। তাপস সাহার বাড়ি থেকে বহু নথি উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। এরই পাশাপাশি বিধায়কের ব্যবহার করা দুটি মোবাইল ফোনও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- ‘আমি চক্রান্তের শিকার’, ১৫ ঘণ্টা তল্লাশি শেষে CBI বেরোতেই ফের সরব তাপস সাহা
শনিবার সকালে সিবিআই তাঁর বাড়ি থেকে বেরনোর পরেই নতুন মোবাইল ফোন ও সিমকার্ড কিনতে দোকানে যান বিধায়ক। সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেই তিনি মোবাইল ফোন কিনেছেন বলে জানিয়েছেন। তবে সিবিআই তাঁর বাড়িতে তল্লাশিতে এলেও দলের তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি বলে বেশ অভিমানী জোড়াফুলের এই বিধায়ক। তিনি কারও সঙ্গে প্রতারণা করেননি, বরং তিনি নিজেই প্রতারিত হয়েছেন বলে এদিন দাবি করেছেন তাপস সাহা। যদিও তাপস সাহার বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি প্রসঙ্গে এদিন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, অন্যায় না করলে আতঙ্কে থাকার দরকার নেই।
আরও পড়ুন- ‘গদ্দারদের সঙ্গে লড়ছি, মাথা ঝোঁকাব না’, ইদের নমাজে বিজেপিকে তুলোধনা মুখ্যমন্ত্রীর
অন্যদিকে, এদিন তাপস সাহার আরও দুই ঘনিষ্ঠের বাড়িতেও হানা দিয়েছিল সিবিআই। তেহট্টেই তাপস ঘনিষ্ঠ তৃণমূলনেত্রী ইতি সরকারের বাড়িতে যান তদন্তকারীরা। বাড়িতে ঢুকে বেশ কিছুক্ষণ তল্লাশি চালানোর পাশাপাশি ইতিদেবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। ইতি সরকার কমপক্ষে তেরোটি স্কুলের ইউনিফর্ম তৈরি বরাত পেয়েছিলেন বলে দাবি।
এছাড়াও তাপস সাহার প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক প্রবীর কয়ালের বাড়িতেও এদিন তল্লাশি অভিযানে যায় সিবিআই। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের দিয়ে বাড়ি ঘিরে রেখে চলে অভিযান। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে এদিন প্রবীরের বাড়িতে চলে তল্লাশি। প্রবীর কয়ালের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বিধায়ক তাপস সাহার মদতেই চাকরি দেওয়ার নামে টাকা তুলেছিলেন তিনি। স্থানীয় কয়েকজনের আরও অভিযোগ, অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েও চাকরি দেননি প্রবীর।