পার্থ চট্টোপাধ্যায়, রাজ্যের শিল্প, পরিষদীয় সহ অন্যান্য বেশ কয়েকটি দফতরের মন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর আস্থাভাজন। অথচ তাঁর 'অতি ঘনিষ্ঠে'র ফ্ল্যাট থেকেই উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি নগদ সহ বহু মূল্যবান সামগ্রী। উদ্ধার হওয়ায় এই অর্থের সঙ্গে এসএসসি দুর্নীতির যোগ রয়েছে বলে দাবি ইডি-র। পার্থ আপাতত শ্রীঘরে। তাঁকে বহিষ্কার করেছে দল, মন্ত্রিত্ব থেকেও সরানো হয়েছে। কিন্তু, সময় এগোলেও এতে তৃণমূলের বিড়ম্বনা কাটছে না। যা স্পষ্ট বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের বক্তব্যেই। বৃহস্পতিবার ফের দলের প্রাক্তন মহাসচিবকে নিশানা করেছেন তিনি। তবে, পার্থর কুর্কীতির জন্য দলের সকলকে 'চোর' বলে দেগে দেওয়াও ঠিক নয় বলে দাবি তাঁর।
কী বলেছেন সৌগত রায়?
দমদমের তৃণমূল সাংসদের মতে গোটা ভারতেই এহেন দুর্নীতি কম হয়েছে। বিশেষ করে টাকার পাহাড়ের দৃশ্য তৃণমূলের কাছে 'লজ্জার ও বিড়ম্বনার'। সৌগত রায়ের কথায়, 'সারা ভারতেই এধরণের দুর্নীতি কম দেখতে পাওয়া গিয়েছে। লালু দুর্নীতির জন্য জেলে গেলেও এত নোট বেরহয়নি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুখরামের কাছ থেকে দুই-চার কোটি নোট উদ্ধার হয়েছিল দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এত কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের ছবি কোথাও দেখা যায়নি। টাকার ছবি না দেখলে তো বিশ্বাসই করতাম না। এই যে টাকার পাহাড় দেখা গিয়েছে এরপর লোকের কাছে কী জবাব দেব? এই বিড়ম্বনা, এই লজ্জা তো আমাদের আছে।'
তবে তাঁর সাফ দাবি, 'আমরা তৃণমূলের লোক তৃণমূলের সঙ্গেই থাকব। আর তৃণমূলের সকলকে চোর বলে দেগে দিলে তার প্রতিরোধ করব।'
পার্থ, অনুব্রতরা দুর্নীতির অভিযোগে কারাবন্দি। বিরোধী দলগুলি জোড়-ফুল নেতাদের 'চোর চোর' বলে দেগে দিচ্ছে। যা নিঃসন্দেহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্বাধীন বাংলা শাসনকারী তৃণমূলের পক্ষে বড় বিড়ম্বনা। কিন্তু, এর থেকে নিস্তারের উপায় কী? রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, কেষ্টর পাশে দাড়িয়ে তাঁকে 'বীর' তকমা দিয়েছেন খোদ দলনেত্রী। কিন্তু পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে রাফ অ্যান্ড টাফ মমতা। সেই নীতি মেনেই আপাতত দুর্নীতির দায়ে প্রাক্তন মহাসচিবের ঘাড়েই ঠেলতে মরিয়া ঘাস-ফুল শিবির। দল থেকে ব্যক্তিকে বিচ্ছিন্ন করে আপাতত হারানো ভাবমূর্তি ফিরে পেতে উদগ্রীব পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল। তাই বারেবারেই নিশানায় পার্থ।