Advertisment

উৎসবের আবহে তৃণমূলে 'মিলে সুর মেরা তুমহারা', তাপসকে কেক খাওয়ালেন সুদীপ!

সৌজন্য, নাকি বিরোধ ভুলে...

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
tmc mp Sudip banerjee fed cake to baranagar mla Tapas roy kunal ghosh shere picture, তাপসকে কেক খাওয়ালেন সুদীপ

উত্তর কলকাতার এক অনুষ্ঠানে এই দৃশ্য ধরা পড়েছে। ছবি- কুণাল ঘোষের ফেসবুক পোস্ট

পুজের পরেই তৃণমূলের অন্দরের কাজিয়া প্রকাশ্যে এসেছিল। উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেছিলেন বরানগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়। তাঁর অভিযোগ ছিল, দুর্গাপুজোয় উত্তর কলকাতার বিজেপি যুব সভাপতির বাড়িতে গিয়েছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় সাংসদকে ‘ডিভাইডেড লয়ালিস্ট’ বলেও কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন তাপস রায়। পাল্টা ‘হাতি চলে বাজার তো…’ বলে ইঙ্গিতে বরানগরের বিধায়ককে তাচ্ছিল্য করেছিলেন সুদীপও। কিন্তু গত দু'মাসে বিবদমান তৃণমূলের এই সাংসদ-বিধায়ক আর পরস্পররের বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি। আর বড়দিনের আবহে শনিবার দেখা গেল এক অন্য দৃশ্য। দলের গোষ্ঠী রাজনীতিতে চরম বিরোধী তাপস রায়কে কেক খাওয়াচ্ছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার নিজের ফেসবুকে এই ছবি শেয়ার করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। ছবির ক্যাপসনে লেখা, 'বড়দিনের শুভেচ্ছা, কেকসহ।'

Advertisment
publive-image
কুণাল ঘোষের ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট

নিছক সৌজন্য, নাকি সুদীপ-তাপস বিবাদ সত্যিই মিটে গিয়েছে? আপাতত এই প্রশ্নে জোর জল্পনা ঘাস-ফুলে, বিশেষ করে উত্তর কলকাতার তৃণমূলে। শাসক শিবিরের অনেকেই মনে করছেন, পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলীয় ঐক্য গড়ে তুলতে নির্দেশ দিয়েছেন নেত্রী। তারপরই শনিবারের ইঙ্গিতবাহী ছবি।

সুদীপ-তাপস বিরোধের কারণ-

কল্যাণ চৌবে ছিলেন বিজেপির উত্তর কলকাতা জেলা কমিটির সভাপতি। তিনি এআইএফএফের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় দল তাঁর জায়গায় দায়িত্বে আনে তমোঘ্ন ঘোষকে। পুজোর পর তাপস রায় দাবি করেন, ‘এ বার দুর্গাপুজোর অষ্টমীর দিন তমোঘ্ন ঘোষের বাড়িতে আমন্ত্রিত ছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। নিমন্ত্রিতদের তালিকায় ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী ও কল্যাণ চৌবেও। প্রত্যেকেই পুজোর এক দিন সেখানে গিয়েছিলেন।’

তাপস রায় বলেছিলেন, ‘তমোঘ্নকে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের সভাপতি করতে চেয়ে ওঁকে দলনেত্রীর কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন সুদীপ। দরবারও করেছিলেন। এ কথা তো দলের সবারই জানা আছে।’

তাহলে কী ওই তিন রাজনীতিকের মধ্যে কোনও বৈঠক হয়েছিল? সেনিয়ে মুখ খুলতে রাজি ছিলেন না তাপস রায়।

সুদীপকে কী বলে কটাক্ষ করেছিলেন তাপস?

‘পার্টিতে এই মুহূর্তে ডেডিকেটেড লয়ালিস্ট আর ডিভাইডেড লয়ালিস্ট – দুই ভাগ হয়েছে। ডিভাইডেড লয়ালিস্টরা অন্য দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এদিকে দলনেত্রীকে নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থে দলেরই অনেকে ব্যবহার করছেন। অন্যদিকে সঙ্গে বিরোধী দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। যাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে সংগঠনের প্রতি অনুগত দলের উচিত তাঁদের প্রতি আস্থা রাখা।’

এই অভিযোগের পরদিনই তাপস রায়ের বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে ফ্ল্যাটে পৌঁছেছিলেন কুণাল ঘোষ।

পাল্টা কী বলেছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়?

'আমি যে বাড়ির পুজোয় যাই, সেটা তপন ঘোষের পুজো। উনি ৭৬ বছরের বয়স্ক ব্যক্তি। বিবেক গুপ্ত-ও যান, শশী পাঁজারাও যান। এ বার পুজোয় আমিও তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলাম। আমি যখন গিয়েছিলাম শুভেন্দু, কল্যাণ চৌবেরা ছিলেন না। যাঁর বাড়ির পুজো বলা হচ্ছে, তিনিও তখন ছিলেন না। একা তপন ঘোষই ছিলেন। শুভেন্দু অধিকারী, কল্যাণ চৌবেকে, আমি চিনি না।'

তাপসকে নিশানা করে বলেন, ‘‌হাতি চলে বাজার… কী একটা কথা আছে না? সমজদারকে লিয়ে ইশারাই কাফি হ্যায়। অনেকে বলছেন আমি লুকিয়ে লুকিয়ে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে দেখা করেছি। বিজেপির কোনও ছোট নেতার সঙ্গে আমার লুকিয়ে লুকিয়ে দেখা করার প্রয়োজন নেই। আমি যখন দিল্লিতে যাই, সর্বদলীয় বৈঠকে আমার সামনে নরেন্দ্র মোদী বসেন। মোদীর পাশে বসে সংসদ করি। আমি তৃণমূলের প্রতিনিধিত্ব করি।'

অর্থাৎ তিনি নিজেকে হাতির সঙ্গে তুলনা করলেন। আর তাপসবাবুকে রাস্তার কুকুরের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ। পাল্টা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে 'সাদা হাতি' বলে দেগে দেন তাপস রায়।

tmc Kunal Ghosh Tapash Ray Sudip Banerjee
Advertisment