উপরাষ্ট্রপতি ভোটে অংশগ্রহণ করেনি তৃণমূল। দলীয় অবস্থানের কথা জোড়া-ফুলের দুই সাংসদ শিশির ও দিব্যেন্দু অধিকারীকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই চিঠি প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেছিলেন কাঁথি ও তমলুকের দুই তৃণমূলের সাংসদ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলীয় নির্দেশ মানলেন না শুভেন্দু অধিকারীর বাবা শিশির অধিকারী ও ভাই দিব্যেন্দু। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিলেন তৃণমূলের এই দুই সাংসদ। এ দিন দুপুর সাড়ে ১২টার কিছু পরে সংসদের ৬৩ নম্বর ঘরে গিয়ে ভোট দেন শিশির, দিব্যেন্দু।
এরপরই তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'দল এই দুইসাংসদের বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ করবে। আগেই এই দু'জনের সাংসদ পদ খারিজের দাবি তোলা হয়েছে। কয়েকদিন আগেই প্রিভিলেজ কমিটির বৈঠকে আমি শিশিরবাবু ও দিব্যেন্দুর সাংসদ পদ বাতিলের পক্ষে কথা বলেছি। সেই প্রক্রিয়া এখন মাঝপথে। আজকের ঘটনা প্রমাণ করে দিল যে ওঁরা দলে নেই। আশা করব মূল্যবোধের রাজনীতি মেনে তাঁরা সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেবেন।'
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠির প্রেক্ষিতে প্রশ্ন ছিল যে, তৃণমূলের দুই সাংসদ শিশির ও দিব্যেন্দু অধিকারী কী উপরাষ্ট্রপতি ভোট দেবেন? কাঁথির তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী বলেছিলেন, 'গেলেও দেখতে পারবেন, না গেলেও জানতে পারবেন।' বর্ষীয়ান সাংসদের এই মন্তব্য ঘিরেই জল্পনা বাড়তে থাকে। শেষ পর্যন্ত বাবা-ছেলে দলীয় নির্দেশ অমান্য করে ভোট দেন।
আরও পড়ুন- এসির ঠান্ডা বাতাস এখন স্মৃতি, ফ্যানের হাওয়াতেই জেলের ভাত খাচ্ছেন পার্থ-অর্পিতা
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও তৃণমূলের এই দুই সাংসদ দিল্লিতে সংসদ ভবনে গিয়ে ভোট দিয়েছিলেন। শিশির অধিকারী দাবি করেছিলেন যে, তিনি তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীকেই ভোট দিয়েছেন। সেদিনই ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন এনডিএ-র উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী জগদীপ ধনকড়ের। এই ভোটে বিরোধীদের প্রার্থী মার্গারেট আলভা। যদিও তৃণমূল ধনকড় বা আলভা কাউকেই সমর্থন করছে না। জোড়া-ফুল সাংসদরা ভোটদানে বিরত রয়েছেন।
একুশের বিধানসভার নির্বাচনের আগেই জোড়া-ফুল ছেড়ে পদ্মে যোগ দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এরপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সঙ্গে বর্ষীয়ার কাঁথির সাংসদের সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে। কিছুটা 'বেসুরো' হন শিশির ও তাঁর পুত্র সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। একুশের ভোটের আগে মোদীর মঞ্চেও দেখা দিয়েছিল শিশির অধিকারীকে। এরপরই শিশির অধিকারীকে সাংসদ পদ থেকে বরখাস্ত করার দাবিতে লোকসভার স্পিকারের কাছে আর্জি জানানো হয় তৃণমূলের তরফে। যদিও কাঁথির সাংসদের দাবি, তিনি তৃণমূলেই আছেন, অন্য দলের পতাকা হাতে ধরেরননি।