তৃণমূলের নজরে লোকসভা ভোট। তৃণমূলের জেলা সংগঠনে রদবদল ঘিরে ঘোর চর্চা। প্রশ্নের মুখে বহু নেতার ভবিষ্যৎ। যদিও বিভিন্ন জেলা সংগঠনে বেশ কয়েকজন নতুন মুখকে জায়গা দেওয়া হয়েছে। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল, সোমবার যে তালিকা জোড়-ফুলের তরফে প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে বীরভূম জেলা সভাপতি হিসাবে অনুব্রত মণ্ডলের নাম নেই। অন্যদিকে ঘুষের বদলে সংসদে প্রশ্নকাণ্ডে অভিযুক্ত মহুয়া মৈত্রের গুরুত্ব বেড়েছে সংগঠনে। তাঁকে তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি করা হয়েছে।
এছাড়াও, দার্জিলিং, দঃ দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পুরগনার বারাসত জেলা সংগঠন, বাঁকুড়াতেও সভাপতি অদলবদল করা হয়েছে।
গরু পাচারকাণ্ডে গত এক বছরের বেশি সময় ধরে জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডল। বর্তমানে তিনি তিহাড় জেলে রয়েছেন। তবে, দুর্নীতিকাণ্ডে নাম জড়ালেও শুরু থেকেই অনুব্রতর পাশে দাঁড়িয়েছেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের বীরভূমের জেলা সভাপতি পদ থেকেও সরানো হয়নি কেষ্টকে। এসেবর মধ্যেই পঞ্চায়েত ভোটের আগে ওই জেলার সংগঠন তিনি নিজে দেখভাল করবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন মমতা। এসবের মধ্যেই জেলাস্তরের সংগঠনে রদবদলে বীরভূমের চেয়ারম্যান করা হল অশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু, তৃণমূলের তরফে প্রকাশিত তালিকায় বীরভূমের সভাপতির উল্লেখ নেই। তাহলে নাম উহ্য রেখে কী অনুব্রতকে বকলমে সরানোর কাজ শুরু হল ঘাস-ফুলে? প্রশ্ন উঠছে।
অন্যদিকে প্রশ্ন ঘুষ কাণ্ডের অভিযোগে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রর সাংসদ পদ খারিজের সুপারিশ করেছে লোকসভার এথিক্স কমিটি। সংসদের শীতকালীন অধিবেশন বসলে এ ব্যাপারে প্রস্তাব পেশ হতে পারে লোকসভায়। ফলে মহুয়ার সাংসদ পদ নিয়ে অনিশ্চিয়তা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তাঁকে সাংগঠনে বড় দায়িত্বে আনল তৃণমূল কংগ্রেস। মহুয়াকে কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি করা হয়েছে। এই ঘোষণার পরই মহুয়া তৃণমূল নেত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানান। তবে, প্রশ্ন যে, তাহলে কী আর চব্বিশের ভোট কৃষ্ণনগর লোকসভা থেকে মহুয়াকে প্রার্থী করবে না তৃণমূল?
বাঁকুড়া
বাঁকুড়ার সভাপতি পদ থেকে দিব্যেন্দু সিং মহাপাত্রের বদলে তালড্যাংরার বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তীকে দায়িত্বে আনা হয়েছে। বড়জোড়ার বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায়কে সরিয়ে বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার জেলা সভাপতি করা হয়েছে বিক্রমজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে।
দার্জিলিং
দার্জিলিং সাংগঠনিক জেলায় রাজ্যসভার প্রাক্তন সদস্য শান্তা ছেত্রীকে সভাপতি করেছে তৃণমূল।
মুর্শিদাবাদ
বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পদে ছিলেন আবু তাহের খান। অসুস্থতার কারণে তাঁকে সরিয়ে ওই পদে আনা হয়েছে অপূর্ব সরকারকে (ডেভিড)। শাওনি সিংহ রায়কে দলের রাজ্য সম্পাদক করা হয়েছে। জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলায় সভাপতি পদে সাংসদ খলিলুর রহমানকে রেখে দিলেও চেয়ারম্যান পদে আনা হয়েছে প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিধায়ক জাকির হোসেনকে।
আরামবাগ
আরামবাগ সাংগঠনিক জেলায় তৃণমূলের চেয়ারম্যান পদে জয়দেব জানাকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে স্বপন নন্দীকে।
দঃ দিনাজপুর
মৃণাল সরকারের বদলে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের নতুন সভাপতি হলেন সুভাষ ভাওয়াল। নতুন চেয়ারম্যান করা হয়েছে কুমারগঞ্জের বিধায়ক তোরাফ হোসেন মণ্ডলকে।
পূর্ব বর্ধমান
এই জেলায় র চেয়ারম্যান পদে অশোক বিশ্বাসের জায়গায় আনা হয়েছে মঙ্গলকোট বিধানসভার বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরীকে।
উত্তর ২৪ পরগনা
তপতী দত্তের বদলে বারাসত সাংগঠনিক জেলার চেয়ারপার্সন করা হয়েছে রত্না বিশ্বাসকে। বসিরহাট সাংগঠনিক জেলায় সভাপতি করা হয়েছে হাজি নুরুল ইসলামকে। চেয়ারম্যান হলেন সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায়।